Krishna Kalyani : বিজেপি ওয়াকআউট করলেও ঠাঁয় বসে রইলেন ৪ পদ্ম বিধায়ক! শুভেন্দুদের নাস্তানাবুদ করতে নতুন ‘চাল’ মমতা?
West Bengal Assembly: এই 'দলত্যাগী' বিজেপি বিধায়কদের ব্যবহার করেই শুভেন্দুকে নাস্তানাবুদ করতে চাইছেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ এমনটাই মনে করছে।
কলকাতা : রাজ্য বিধানসভায় বুধবার যা ঘটে গেল, তা বাংলার রাজনৈতিক ইতিহাসে খুব একটা দেখা যায়নি। মুখ্যমন্ত্রী বিধানসভায় (West Bengal Assembly) ভাষণ দেওয়া শুরু করতেই বিজেপি বিধায়কদের নিয়ে সদলবলে ওয়াক আউট করলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। কিন্তু বিজেপি বিধায়করা যেদিকে বসেন, সেখানে তখনও কয়েকজন থেকে গেলেন। শুভেন্দুরা সবাই বেরিয়ে গেলেও ঠাঁয় বসে রয়েছেন চার বিজেপি বিধায়ক। মন দিয়ে মমতার ভাষণ শুনছেন। বিষ্ণুপুরের বিজেপি বিধায়ক তন্ময় ঘোষ। কালিয়াগঞ্জের পদ্ম বিধায়ক সোমেন রায়। বাগদার বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস এবং রায়গঞ্জের বিজেপি বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যাণী। চার নেতাই বর্তমানে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন, কিন্তু খাতায় কলমে তাঁরা এখনও বিজেপি বিধায়ক। এবার এই ‘দলত্যাগী’ বিজেপি বিধায়কদের ব্যবহার করেই শুভেন্দুকে নাস্তানাবুদ করতে চাইছেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ এমনটাই মনে করছে।
এমন ঘটনা আজকের নয়। বিধানসভায় অতীতেও এই ধরনের কাণ্ড দেখা গিয়েছে। মুকুল রায়। তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যাওয়ার পর ফের তৃণমূল ভবনে দেখা গিয়েছিল তাঁকে। তাঁকে উত্তরীয় পরিয়ে দিয়েছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। অথচ! এরপরও তিনি বিজেপি বিধায়ক হিসেবেই রয়ে গিয়েছেন। বিধানসভায় দীর্ঘদিন মামলা চললেও, তাতে শুভেন্দুদের মুখে হাসি ফোটেনি। যদিও বিধানসভা তার সিদ্ধান্ত সুপ্রিম কোর্টে পাঠিয়েছে। তবে মুকুলকে ব্যবহার করে বঙ্গীয় বিজেপি নেতাদের বার বার ঘোল খাওয়াতে দেখা গিয়েছে রাজ্যের শাসক দলকে। বিশেষ করে শুভেন্দু অধিকারীকে বার বার চটিয়ে দেওয়ার চেষ্টা দেখা গিয়েছে।
সেই একই ঘটনা ফের দেখা গেল বুধবার বিধানসভার অধিবেশনে। চার বিজেপি বিধায়কের ওয়াক আউট না করায় মেজাজ হারালেন শুভেন্দু অধিকারী। ওই চার বি যদি এই চার বিধায়কের অভিযোগ সত্যি হয়, তাহলে এই ধরনের মন্তব্যের জন্য শুভেন্দুর বিরুদ্ধে স্বাধীকার ভঙ্গের প্রস্তাব আনা হতে পারে বিধানসভায়। যদিও কৃষ্ণ কল্যাণীরা যেমন দাবি করছেন, এমন কোনও মন্তব্য তিনি করেননি বলেই ঘনিষ্ঠ মহলে জানিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী।
শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে অভিযোগের সুর চড়িয়ে কৃষ্ণ কল্য়াণী বুধবার বিকেলে সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, “বিগত দিনে আপনারা দেখেছেন, আমরা রাজ্য়পালের ভাষণ শুনতে পেলাম না। আজও সেই একই ষড়যন্ত্র ছিল, মুখ্যমন্ত্রীর ভাষণ উনি চলতে দেবেন না। সেই জায়গায় আমরা চারজন প্রতিবাদ করেছিলাম। আমরা নতুন বিধায়ক। বিধানসভার কার্যপ্রণালি আমাদের অনেক কিছু শেখার আছে। কিন্তু বারবার উনি যদি বিধানসভার অধিবেশন চলাকালীন তা যদি ভণ্ডুল করে দেন, তাহলে আমরা শিখব কোথা থেকে? আমার বিধানসভার যে মানুষরা আছেন, তাঁরাও তো আমায় প্রশ্ন করেন। সেই চিন্তা করলে, আমাদেরও তো দায়িত্ব আছে, আমরা তাদের কী জবাব দেব। বিরোধী মানে কি সব কথাতেই বিরোধী? যদি উন্নয়নমূলক কাজ হয়, তাতে আমাদের সরকারকে সমর্থন করতে হবে।”