
কলকাতা: কুণাল ঘোষের বিরুদ্ধে হওয়া আদালত অবমাননার মামলায় বড় প্রশ্নের মুখে পড়তে হল তাঁর আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়কে। শাসকদলের মুখপাত্রের হয়ে কীভাবে অনুমতি দেবেন রাজ্যের এজি? সেই প্রশ্ন তুলেছেন বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য। কুণাল ঘোষে পক্ষে ওই মামলায় আদালতে সওয়াল করছেন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর বক্তব্য, নিয়ম মেনে কুণালের বিরুদ্ধে মামলা হয়নি।
নিয়ম হল, আদালত অবমাননার মামলা করতে গেলে এজি-র কাছে অনুমতি নিতে হয়। কল্যাণের অভিযোগ, এ ক্ষেত্রে আদালত স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মামলা করেছে ফলে কোনও অনুমতি নেওয়া হয়নি। এই অভিযোগ উঠতেই এদিন বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য বলেন, “এজি রাজ্যের প্রতিনিধিত্ব করেন। তাহলে এজি রাজ্যের শাসকদলের মুখপাত্রের হয়ে অনুমতি কি দিতে পারেন? তাহলে বিষয়টা ডাইলিউটেড হয়ে যায় না?”
অন্যদিকে, কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, রাজ্যের আইনজীবী বা বিচারপতিরাও কোনও না কোনও রাজনৈতিক দলকে সমর্থন করেন। তাহলে তারাও কি স্বচ্ছভাবে বিচার করবেন? এ কথা শুনে বিচারপতি বলেন, এজি রাজ্যের হয়ে সওয়াল করতে পারেন। কিন্তু শাসকদলের মুখপাত্রের হয়ে অনুমতি দিতে পারেন কি? এজি-র ক্ষেত্রে এমন অভিযোগ গ্রহণযোগ্য নয় বলে দাবি করেন কল্যাণ। তিনি বলেন, ‘এজি কি আইন লঙ্ঘন করেছেন?’
কল্যাণ এদিন আদালতে ঘটনার দিনের ভিডিয়ো দেখান। তিনি বলেন, “আইনজীবীদের বিক্ষোভে তাঁদের মুখের ভাষা শুনুন। বর্ষীয়ান আইনজীবীদের তর্ক করতে দেখা গিয়েছে।” শুনানি শেষে এদিন বিচারপতি অরিজিত বন্দ্যোপাধ্যায় জানতে চান, অবমাননার মামলায় নূন্যতম কত টাকা জরিমানা হয়? কল্যাণ জানিয়েছেন দু’হাজার টাকা। আগামী ১৭ জুলাই ফের এই মামলার শুনানি রয়েছে।
কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যের চেম্বারের বাইরে কিছুদিন আগে বিক্ষোভ দেখান উচ্চ প্রাথমিকের চাকরিপ্রার্থীদের একাংশ। সেই বিক্ষোভে বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর বিরুদ্ধে আপত্তিকর মন্তব্য করা হয় বলে অভিযোগ ওঠে। ওই ঘটনায় আদালত অবমাননার মামলা করেন বার অ্যাসোসিয়েশনের কয়েকজন আইনজীবী। বিচারপতি বসুর বিরুদ্ধে আপত্তিকর মন্তব্য করার অভিযোগ ওঠে কুণাল ঘোষের বিরুদ্ধে। কুণাল সহ বাকি বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে রুল জারি করে হাইকোর্ট। বর্তমানে বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়, বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য এবং রাজর্ষি ভরদ্বাজের বৃহত্তর বেঞ্চে চলছে সেই মামলার শুনানি।