Lagnajita chakraborty: ‘এতটা পর্যন্ত হাত চলে এসেছিল… আমি স্তব্ধ হয়ে যাই’, স্টেজে উঠে লগ্নজিতার সঙ্গে ঠিক কী করেছিল মেহবুব, দুঃসহ মুহূর্তের বর্ণনা শিল্পীর মুখে

Lagnajita chakraborty Interview: লগ্নজিতা হাত দিয়ে দেখান, ওই ব্যক্তির মুষ্টিবদ্ধ হাত যখন প্রায় তাঁর নাকের কাছে, তখন বাকিরা ওই ব্যক্তিকে প্রতিহত করেন। তাঁর কথায়, "উনি যখন মারতে চেয়েও পারলেন না, আমার হাতে মাইক্রোফোন ছিল, কারণ তার একটু আগে পর্যন্তও আমি দর্শকদের সঙ্গেই কথা বলছিলাম। তখন উনি চিৎকার করে বলেন, অনেক জাগো মা হয়েছে, এবার একটু সেকুলার গা... তুই তোকারি করতে থাকেন।"

Lagnajita chakraborty: এতটা পর্যন্ত হাত চলে এসেছিল... আমি স্তব্ধ হয়ে যাই, স্টেজে উঠে লগ্নজিতার সঙ্গে ঠিক কী করেছিল মেহবুব, দুঃসহ মুহূর্তের বর্ণনা শিল্পীর মুখে
শিল্পী লগ্নজিতা চক্রবর্তীImage Credit source: TV9 Bangla

| Edited By: শর্মিষ্ঠা চক্রবর্তী

Dec 21, 2025 | 3:08 PM

কলকাতা: অনুষ্ঠান তখন প্রায় তাঁর শেষের পথে। আর একটা গান বাকি, তিনি ‘শো ক্লোজ’ করার পথে। হাতে মাইক্রোফোন। দর্শকদের উচ্ছ্বাস, তাঁদের সঙ্গে শিল্পীর দু’কলি কথা, মাঝে গান! শীতের আসরে জমে উঠেছিল লগ্নজিতার অনুষ্ঠান। হঠাৎই ছন্দপতন। এক ব্যক্তি স্টেজে উঠে পড়লেন, তারপর শিল্পীকে মারতে উদ্যত হলেন, সঙ্গে অকথ্য ভাষায় কথা! লগ্নজিতার সঙ্গে পূর্ব মেদিনীপুরের ভগবানপুরের অনুষ্ঠানে যা হল, তাঁর শিল্পীর কথাতেই তাঁর ১১ বছরের কেরিয়ারে প্রথম। দুঃসহ অভিজ্ঞতার কথা TV9 বাংলার এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকারে বললেন লগ্নজিতা, যা শিউরে ওঠার মতো।

লগ্নজিতা বললেন, “আমি যখন সপ্তম ও অষ্টম গানের মাঝখানে কথা বলছি, তখন একজন ভদ্রলোক দৌড়ে স্টেজে উঠে আসেন। আমাকে মারতে আসেন, ওটার ভিডিয়োও রয়েছে। ওই ভিডিয়ো যিনিই দেখবেন, তিনিই বুঝতে পারবেন, উনি আমাকে মারতেই উঠেছিলেন।”

লগ্নজিতা হাত দিয়ে দেখান, ওই ব্যক্তির মুষ্টিবদ্ধ হাত যখন প্রায় তাঁর নাকের কাছে, তখন বাকিরা ওই ব্যক্তিকে প্রতিহত করেন। তাঁর কথায়, “উনি যখন মারতে চেয়েও পারলেন না, আমার হাতে মাইক্রোফোন ছিল, কারণ তার একটু আগে পর্যন্তও আমি দর্শকদের সঙ্গেই কথা বলছিলাম। তখন উনি চিৎকার করে বলেন, অনেক জাগো মা হয়েছে, এবার একটু সেকুলার গা… তুই তোকারি করতে থাকেন।” ওই ব্যক্তি কে, তাঁর পরিচয় কী, সে প্রশ্ন করতে লগ্নজিতা বললেন, “উনি কে, সেটা আমার পক্ষে কোনওভাবেই আগে জানা সম্ভব ছিল না। কারণ আমি স্টেজে ছিলাম। তবে পরে যখন জেনারেল ডায়েরি করতে গিয়েছিলাম, ওনার পরিচয় আমাকে জানতে হয়েছে।”

ওই ঘটনার দর্শকদের তিনি জানান, এরপর আর অনুষ্ঠান করা সম্ভব নয়। বলে তিনি স্টেজ থেকে নেমে যান। এরপর ভগবানপুর পুলিশ স্টেশনে যান লগ্নজিতা।

প্রসঙ্গত, ২০ তারিখ পূর্ব মেদিনীপুরের ভগবানপুর এলাকায় সাউথ পয়েন্ট পাবলিক স্কুলের একটি অনুষ্ঠানে স্টেজ শো করতে গিয়েছিলেন গায়িকা লগ্নজিতা চক্রবর্তী। সেখানে ঝামেলা বেঁধে গিয়েছিল। এক ব্যক্তি লগ্নজিতাকে ‘সেকুলার গান’ গাওয়ার দাবিতে প্রায় মারতে আসেন বলে গায়িকার দাবি।  ‘দেবী চৌধুরাণী’ ছবির গান ‘জাগো মা’ গাওয়ার মাঝেই এই অনাকাঙ্খিত ঘটনা। ঘটনার পর স্টেজ থেকে নেমে গা ঢাকা দেন ওই ব্যক্তি। পরে জানা যায়, ওই ব্যক্তির নাম  মেহেবুব মল্লিক। জানা গিয়েছে, তিনি সাউথ পয়েন্ট পাবলিক স্কুলের মালিকের মধ্যে একজন।

কিন্তু এই ধরনের ঘটনার পর শিল্পীরা অনুষ্ঠান করতে গিয়ে ঠিক কতটা নিরাপদ? প্রশ্ন করতেই শিল্পীর উত্তর, “আমরা রোজ কত কিছু শুনি, কিন্তু যতক্ষণ না নিজেদের সঙ্গে হয়, আমরা তো রিলেট করতে পারি না। এটা সত্যি, ১১ বছর ধরে গান গাইছি। অনেক কিছু হয়, প্রত্যেক শিল্পীর সঙ্গেই হয়। এরকমও হয়েছে যে দিদি গান ভাল লাগছে না, নেমে যান। সেটা স্টেজের নীচ থেকে বলতেই পারেন। কাল যেটা হয়েছে, সেটা ১১ বছরে কোনও দিন হয়নি। প্রথমবার হল। আমার পুলিশ প্রশাসনের ওপর ভরসা রয়েছে আমরা শিল্পীরা যাতে নিজেদের মতো অনুষ্ঠান করতে পারি, গান গাইতে পারি, সেটা নিশ্চয়ই প্রশাসন নিশ্চিত করবে।”

লগ্নজিতা নিজেই জানালেন, আগামী ২৬ তারিখ আবারও আরামবাগে অনুষ্ঠান রয়েছে তাঁর। সেখানেও সপ্তম গান তিনি ‘জাগো মা’ই গানবেন।