কলকাতা: দলের নিষ্ক্রিয় সদস্যদের এবার কড়া বার্তা দিলেন প্রবীণ সিপিএম নেতা বিমান বসু। আর দলে থেকে অনুদান দিয়ে দায় সাড়া যাবে না। ময়দানে নেমে আন্দোলনে সামিল হতে হবে। সিপিএমের সাপ্তাহিক মুখপত্র দেশ হিতৈষীর শারদ সংখ্যা এমন বার্তাই দিলেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু। স্পষ্ট করে তিনি জানিয়েছেন, নিষ্ক্রিয় সদস্যদের পার্টির সঙ্গে থাকার কোনও দরকার নেই। তাদের ছেঁটে ফেলাই ভাল। কারণ, এই সুযোগে পার্টিতে ‘শত্রুর অনুপ্রবেশ’ হচ্ছে বলে দাবি করেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান। চরবৃত্তি হচ্ছে, এ কথাও বলেন তিনি।
এই মুহূর্তে রাজ্যজুড়েই সিপিএমের বিভিন্ন স্তরে নানা সম্মেলন চলছে। সিপিএমের যে কোনও ধরনের বড় সিদ্ধান্তের প্রক্রিয়া এই সম্মেলন থেকেই তৈরি হয়। রাজনৈতিক মহল মনে করছে, বিমানবাবু এই দেশ হিতৈষীতে তাঁর যে মতামত ব্যক্ত করেছেন, তাতে পরিষ্কার করে বুঝিয়ে দিয়েছেন, দলের সদস্য থাকা সত্ত্বেও যাঁরা নিষ্ক্রিয় রয়েছেন, তাঁদের আর দলে থাকার দরকার নেই। শুধু মাত্র অনুদান দিয়েই কেউ যদি মনে করেন, দলে থেকে যাবেন তা চলবে না।
কেন এমনটা বলেছেন তিনি। বিমান বসুর ব্যাখ্যা, সাধারণ মানুষ বা কর্মীরা যদি দলের নিষ্ক্রিয় সদস্যদের দেখেন, তা হলে দলের ভাবমূর্তি নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হবে। দলের প্রতি বিতৃষ্ণা আসবে দলীয় কর্মীদের মনে। বেশ কড়া ভাবেই বিমানবাবু এই শারদ সংখ্যায় লিখেছেন, ‘আমি ব্যক্তিগত পার্টি জীবনের অভিজ্ঞতায় দেখেছি কোনও কোনও ক্ষেত্রে পার্টিসভ্যদের জন্য যে কর্তব্যগুলি নির্দিষ্ট রয়েছে তা পালন না করলেও অধিকারসমূহ পালন করার জন্য সংশ্লিষ্ট পার্টিসভ্যদের কোনও লজ্জাবোধ কাজ করে না। যে সমস্ত পার্টি সদস্যরা সুস্থ, রাজনৈতিক সংগঠনের কাজ করতে সক্ষম অথচ কেবল মাত্র পার্টির দেয় জমা দিয়ে পার্টি সদস্যপদ রক্ষা করেন তাঁরা পার্টিতে থাকবেন কেন? তাঁরা পার্টিকে সাহায্য করতে চাইলে পার্টির ঘনিষ্ঠ দরদী হিসাবেই তো কাজ করতে পারেন।’
এর পরই প্রবীণ বাম নেতার সতর্কবার্তা, ‘সমাজের বিভিন্ন অংশে কাজ করতে হলে আমাদের অসংখ্য তরুণ তরুণী পার্টি সদস্য ও অনুগামী প্রয়োজন। নিষ্ক্রিয় পার্টি সদস্যকে দেখলে তারাও ঘরে বসে যাবে। উৎসাহ পাবে না। তাই জরুরি ভিত্তিতে নিষ্ক্রিয়দের সক্রিয়করণের প্রক্রিয়ায় যুক্ত করতে হবে। এই প্রচেষ্টায় ব্যর্থ হলে সদস্য তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার কাজে হাত দিতে হবে।’ বরং এই প্রক্রিয়ায় পার্টির শক্তি বাড়বে বলেই বিশ্বাস বিমান বসুর।
বিমানবাবু উল্লেখ করেন, রাজ্যের বিভিন্ন জেলার ‘চেক-আপ রিপোর্টের’ পর্যালোচনা থেকে দেখা গিয়েছে, প্রায় ২৫ শতাংশ থেকে ৪০ শতাংশ পর্যন্ত কোনও কোনও সময়ে পার্টি সদস্যরা নিষ্ক্রিয় থেকেছেন। একই সঙ্গে বিমান বসুর দাবি, সিপিএমে নাকি শত্রুর অনুপ্রবেশ ঘটেছে। কী বলছেন বর্ষীয়ান এই বাম নেতা? বিমানবাবুর লেখনিতে উঠে এসেছে, ‘পার্টিতে শত্রুর অনুপ্রবেশ ঘটেছে বলে খবর পাওয়া গিয়েছে। পার্টিকে নিষ্ক্রিয়তামুক্ত করতে না পারলে পার্টির অভ্যন্তরে শত্রুর চরেদের চিহ্নিত করা একটু সমস্যা হবে।’
আরও পড়ুন: Building Collapse: রাতভর বৃষ্টি হতেই আবারও কলকাতায় হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ল পুরনো বাড়ি