Left Manifesto: তৃণমূলের ইস্তেহারকে ‘ঠাকুমার ঝুলি’ অ্যাখ্যা দিয়ে নিজেদের ইস্তেহারে কী কী রাখল বামেরা?
Left Manifesto: বামেদের ইস্তেহারে বলা হয়েছে, কীভাবে কৃষি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, চাকরি- প্রতি ক্ষেত্রে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার গুচ্ছ গুচ্ছ প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, আর তা কতটা পূরণে সফল। কেন বিজেপি-তৃণমূলকে ভোট নয়, সেটাই বিস্তারিতভাবে উল্লেখ করা হয়েছে বামেদের ইস্তেহারে।
কলকাতা: রাজ্যের প্রথম দফা নির্বাচনের ২৪ ঘণ্টা আগে লোকসভা নির্বাচনের ইস্তেহার প্রকাশ করল বামেরা। প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পরও, কোন কোন ক্ষেত্রে তা পূরণ করতে পারেনি কেন্দ্র, সেটাই ইস্তেহারের প্রতি ছত্রে উল্লেখিত। সঙ্গে উল্লেখিত রাজ্যের শাসকদলের বিরুদ্ধে ওঠা একাধিক দুর্নীতির অভিযোগও। বামেদের ইস্তেহারে বলা হয়েছে, কীভাবে কৃষি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, চাকরি- প্রতি ক্ষেত্রে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার গুচ্ছ গুচ্ছ প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, আর তা কতটা পূরণে সফল। কেন বিজেপি-তৃণমূলকে ভোট নয়, সেটাই বিস্তারিতভাবে উল্লেখ করা হয়েছে বামেদের ইস্তেহারে। তৃণমূলের ইস্তেহারকে কটাক্ষ করে বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু বললেন, “তৃণমূলের ইস্তেহার রাজনৈতিক ঠাকুমার ঝুলি।”
বামেদের বক্তব্য, সংসদে বিরোধীদের কন্ঠরোধ করছে বিজেপি সরকার। দু’দিনে ১৪৬ জন সাংসদকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। কোনও আলোচনা ছাড়াই জোর করে বিল পাশ করানো হচ্ছে। এমনকি বাজেটের পাশের ক্ষেত্রেও তাই। বামেদের দাবি, ৭৯ শতাংশ বাজেট আলোচনা ছাড়াই পাশ করানো হচ্ছে।
ইডি-সিবিআই-এনআইএ-এর মতো কেন্দ্রীয় এজেন্সিকে ব্যবহার করার অভিযোগ প্রথম থেকেই করে এসেছে এ রাজ্যের শাসকদল। সেই একই বিষয় ইস্তেহারে উল্লেখ করেছে বামেরা। বামেদেরও একই দাবি, কেন্দ্রীয় এজেন্সিকে রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করছে বিজেপি সরকার। এমনকি কমিশনও যে পক্ষপাতদুষ্ট তারও উল্লেখ রয়েছে। বামেদের অভিযোগ, টাকার জোরে বিরোধী নির্বাচীত বিরোধীদের সরকারও ভাঙছে কেন্দ্রীয় সরকার। উল্লেখ্য, এই একই অভিযোগ প্রথম থেকে তুলেছে তৃণমূলও। সম্প্রতি এনআইএ-এ অভিযানের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনের অফিসের সামনে ধরনাতেও বসেছে তৃণমূলের প্রতিনিধি দল।
কেন্দ্রের ‘এক দেশ এক নির্বাচন’- নিয়েও সরব বামেরা। সমস্ত ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত করতেই এই প্রক্রিয়া বলে বামেরা দাবি করেছে। ধর্ম নিরপেক্ষ দেশ গড়ার ক্ষেত্রেও কেন বিজেপিকে ভোট নয়, তার উল্লেখ করেছে বিজেপি। বামেদের দাবি, মোদী সরকার যখন ক্ষমতায় এসেছিল, তখন ১২০ দেশের মধ্যে ভারতের স্থান ছিল ৫৫। ২০২৩ সালে তা হয়েছে ১১১। এছাড়াও কৃষিতে সঙ্কটের কথাও উল্লেখ রয়েছে ইস্তেহারে। তাদের দাবি, কৃষি ও কৃষক সম্পর্কে মোদী সরকারের দৃষ্টিভঙ্গি বোঝা যায় সরকারের বাজেট ও বরাদ্দ দেখলেই। কারণ তাদের দাবি, মোদী সরকার কৃষি ও কৃষক সম্পর্কিত বাজেটের ক্ষেত্রে ৮১ হাজার কোটি টাকা কেটেছে।
ইস্তেহার প্রকাশের পর রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পর্কে বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী নানা বিষয় নিয়ে কথা বললেও ১৯৯৮-৯৯ সালে তিনি কেন্দ্রের রেলমন্ত্রী ছিলেন বিজেপি পরিচালিত সরকারের। সেটা বলছেন না। যাদের বহিরাগত বলছেন, তাদের সঙ্গে নির্বাচন করেছেন। তপন শিকদার দমদমে জিতেছিলেন, জুলু মজুমদার কৃষ্ণনগরে জিতে আইনমন্ত্রী হয়। পরবর্তীতে এই মুখ্যমন্ত্রী কয়লা মন্ত্রী হয়েছিলেন। হাত ধরে বিজেপিকে টেনে এনেছেন। এখানে আরএসএসের বাড়বাড়ন্ত তা ওনার হাত ধরেই।” তৃণমূলের তরফে দাবি করা হয়েছে, ইস্তেহারে ইন্ডিয়া জোট ক্ষমতায় এলে তারা নির্ণায়ক হবে। সে বিষয়ে বিমান বসু বলেন, “আমরা ইন্ডিয়া জোটের শরিক। অন্যান্য জোটের শরিকদের নিয়েই ৪২ আসনে লড়াই করছি। তৃণমূল তো আলাদা লড়াই করছে। ১০৩ পাতার ইস্তেহার।” বিমান বসুর কটাক্ষ, “তৃণমূলের ইস্তেহার রাজনৈতিক ঠাকুমার ঝুলি। পড়তেও ইচ্ছে করবে না। নির্বাচনী ইশতেহারে লেখা দিদির শপথ। এর মানে কী? নির্বাচন ভারতের। পশ্চিমবঙ্গের নয়। পশ্চিমবঙ্গ অঙ্গরাজ্য। নির্বাচনটা লোকসভার।” বিমান বসুর কথায়, “তৃণমূলের ইস্তেহার দেখলে মনে হয় রাজ্যের নির্বাচন।”