কলকাতা: ‘মমতাই বাড়ির কর্ত্রী, উনিই শেষ কথা’। সংগঠনের রাশ মুখ্যমন্ত্রীর নিজের হাতে রাখার সিদ্ধান্তে খুশি মদন মিত্র। আদালতে এসে ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য তৃণমূল নেতার।
কলকাতা হাইকোর্টের সামনে দাঁড়িয়ে মদন মিত্র বলেন, “এর থেকে ভালো কথা আর কী হতে পারে। বাড়ির নেত্রী, বাড়ির কর্ত্রী যদি বাড়ি না দেখেন, তবে চলবে কীভাবে। সেন্ট্রালাইজড অথেনটিকেশনের একটা ব্যাপার রয়েছে। যাকে বলে গণতান্ত্রিক কেন্দ্রীকতা। সেটা যদি মুখ্যমন্ত্রী বলে থাকেন, এর থেকে আনন্দের কথা আর কিচ্ছু হতে পারে না। কারণ বাড়িটা মুখ্যমন্ত্রীরই বাড়ি। এটা আর কারোর বাড়ি নয়।”
বৃস্পতিবার কালীঘাটে দলীয় সাংসদদের নিয়ে বৈঠক করেন সুপ্রিমো। সূত্রের খবর, সংগঠনের কাজকর্মে খুব একটা সন্তুষ্ট হতে পারছেন না তিনি। তাই মুখ্য়মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব সামলানোর পাশাপাশি, সংগঠনের দিকেও নজর দিতে চাইছেন তিনি। সাংসদদের সেই বার্তাই দিয়েছেন তিনি।
সম্প্রতি শৃঙ্খলারক্ষা কমিটিকে নিয়ে মুখ খুলেছিলেন কামারহাটির বিধায়ক মদন মিত্র। কটাক্ষ ছুঁড়েছিলেন দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের দিকে। শুরুটা হয়েছিল, অতিমারি পরিস্থিতিতে আগামী দু’মাস সমস্ত রাজনৈতিক ও ধর্মীয় সমাবেশে রাশ টানার বিষয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘ব্যক্তিগত’ অভিমত নিয়ে। বাকযুদ্ধে জড়িয়েছিলেন তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক তথা মুখপাত্র কুণাল ঘোষ ও শ্রীরামপুরের সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। তারই মধ্যে বিস্ফোরক মন্তব্য করেছিলেন মদন মিত্রও।
মদনের প্রশ্ন ছিল, “আমি দলের বিরুদ্ধে বলছি না। কিন্তু কিছু বলার থাকলে তা জানাব কাকে?’” দলীর অন্তর্দ্বন্দ্বের রাশ টানতে এরপরই ময়দানে নামেন মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। সরাসরি ফোন করেন মদন মিত্রকে। তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দেন, প্রকাশ্যে কিংবা সামাজিক মাধ্যমে লাইভে এসে আর কোনও মন্তব্য যাতে না করেন মদন মিত্র। তিনি যাতে সরাসরি তাঁকে জানেন। সেদিনই অবশ্য বিকালে ফের ফেসবুক লাইভে আসেন মদন মিত্র।
তবে এখন আপাতত সামাজিক মাধ্যম থেকে দূরেই রয়েছেন মদন মিত্র। সোশ্যাল মিডিয়ায় লাইভে এসে বলেছেন, “আমার কাছে নির্দেশ এসেছে বেশি ফেসবুক করলে ফেস নষ্ট হয়। আমার ফেসবুক, আমি মদন মিত্র বলে দেখে না। আগামী ৩০ জুন অবধি আমার ফেসবুক খতম। কোনও আন্দোলন, ঘটনা, অনুষ্ঠান, দলের প্রচার হলে আমার টিম প্রচার করবে। আমি দলের নির্দেশ মতো চলবো।”
মদন মিত্রকে ফেসবুকে আর পাওয়া যাবে না। তবে শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টে নারদ মামলায় হাজিরা দিতে এসে ফের ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করলেন মদন মিত্র। প্রমাণ করলেন, তিনি ছিলেন, রয়েছেনও। আপাতত এই মামলায় অন্তবর্তীকালীন জামিন পেয়েছেন ফিরহাদ হাকিম, শোভন চট্টোপাধ্যায়, মদন মিত্র ও এস এম এইচ মির্জা।
শুক্রবার সিটি সেশন কোর্টের ইডির স্পেশাল আদালতে চার জন স্বশরীর হাজিরা দিন ছিল। হাজিরা দেন মদন মিত্র, ফিরহাদ হাকিম, শোভন চট্টাপাধ্যায় ও মির্জা। এদিন তাঁদের তরফ থেকে অন্তর্বর্তী জামিন নিশ্চিত করার আবেদন জানানো হয়।