Bhabanipur By-Election: ‘আপনার একটা ভোট না পেলে ক্ষতি হয়ে যাবে আমার’, স্নায়ুর চাপে ভুগছেন মমতা?
Mamata Banerjee: আপনার একটা ভোট না পেলে ক্ষতি হয়ে যাবে আমার, আমাকে আর পাবেন না। ভবানীপুরে ভোট প্রচারে এসে বললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
কলকাতা: ভবানীপুরের ভোটের দিন এগিয়ে আসছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে এই লড়াই খুব একটা কঠিন হওয়ার কথা নয়। ভবানীপুরের মাটি তাঁর কাছে হাতের তালুর মতো চেনা। মমতার দুর্ভেদ্য গড় ভবানীপুর। কিন্তু তারপরেও একেবারে চিন্তামুক্ত থাকতে পারছেন না তৃণমূল সুপ্রিমো। তাই আজ নিজের পাড়ায় ভোটের প্রচারে নেমে বলে গেলেন, “আপনার একটা ভোট না পেলে ক্ষতি হয়ে যাবে আমার, আমাকে আর পাবেন না।”
মমতার পাড়ায় এসে প্রচার করে যাচ্ছেন বিজেপি প্রার্থী প্রিয়ঙ্কা টিবরেওয়াল। মানুষ তাঁর কথা শুনছেনও। আর এতেই কিছুটা হলেও স্নায়ুর চাপে রয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিশেষ করে শুভেন্দু অধিকারীর কাছে নন্দীগ্রামে হারের পর এটা প্রমাণিত হয়ে গিয়েছে যে, মমতা অপরাজেয় নয়। আর সেই স্নায়ুর চাপটাই হয়ত মুখ্যমন্ত্রীকে আরও বেশি করে উদ্বিগ্ন রাখছে। সেই কারণেই, নিজের চেনা গড়, যেখানে তাঁর একেবারে সহজ জয় হবে বলে ধরে নিয়েছেন প্রত্যেকে, সেখানে দাঁড়িয়েও মমতাকে বলতে শোনা গেল, “আপনার একটা ভোট না পেলে ক্ষতি হয়ে যাবে আমার, আমাকে আর পাবেন না।”
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, আরও বেশি করে মুখ্যমন্ত্রীকে চিন্তায় রাখছে তার নবান্নের গদি। ছয় মাসের সময়সীমা ফুরিয়ে আসছে। হাতে আর বেশি সময় নেই। এখন ভবানীপুরই ভরসা নেত্রীর। নিজের মুখ্যমন্ত্রীর পদ ধরে রাখতে হলে ভবানীপুর জিততেই হবে।
ভবানীপুর উপনির্বাচনের আগে এই প্রথম কোনও জনসভা করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর শুরুতেই ত্রিপুরায় বিজেপির ‘স্বেচ্ছাচার’ নিয়ে একহাত নেন মমতা। বললেন, “ত্রিপুরায় তৃণমূল নেতারা গেলেই মারধর করা হচ্ছে। কোনও কর্মসূচির অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না। তৃণমূল যাচ্ছে জানতে পারলেই ১৪৪ ধারা জারি করা হচ্ছে।” একইসঙ্গে ত্রিপুরাতেও যে বাংলার মতোই ফলাফল হবে, তাও হাবে ভাবে বুঝিয়ে দেন মমতা। বলেন, “তোমারে বধিবে যে গোকুলে বাড়িছে সে।”
নন্দীগ্রামে যে তাঁকে পরিকল্পনা করে হারানো হয়েছে, সেই কথাও বুঝিয়ে দিতে ছাড়লেন না মমতা। বললেন, “কোর্টে মামলা চলছে। নাহলে জানলে ভয় পেয়ে যাবেন কীভাবে জিতেছে। আসলে ভগবান চান মুখ্যমন্ত্রী ভবানীপুর থেকেই তৈরি হোক।”
বোঝাই যাচ্ছে, ভবানীপুরে কোনও খামতি রাখছেন না মমতা। আজ তাই বারবার করে বলতে শোনা গেল, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জিতবেন ভেবে কেউ ভোট দিতে যাবেন না, তা করবেন না। প্রত্যেকে ভোট দেবেন। আপনাদের প্রত্যেকের ভোট প্রয়োজন। নাহলে আমাকে আপনারা পাবেন না, অন্য কেউ মুখ্যমন্ত্রী হয়ে যাবেন।”
ভবানীপুরে মমতার বিপরীতে দাঁড়িয়েছেন বিজেপি প্রার্থী প্রিয়ঙ্কা টিবরেওয়াল। নন্দীগ্রামের ছবির থেকে ভবানীপুরের ছবি একেবারেই আলাদা। শুভেন্দু অধিকারীর মতো কোনও বড় মাপে মুখ নন প্রিয়ঙ্কা। এমনকী লকেট চট্টোপাধ্যায়ের মতো তেমন দাপুটে কি না সেই পরীক্ষাতেও এখনও বসেননি প্রিয়ঙ্কা টিবরেওয়াল। কিন্তু তাও বিজেপির এই প্রার্থীকে বেশ সমীহ করেই চলছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কারণ একটাই, নবান্নের চোদ্দ তলায় গিয়ে বসতে হলে, এবারের উপনির্বাচনে আর নন্দীগ্রামের পুনরাবৃত্তি হতে দেওয়া যায় না।
আর সেই কারণেই যে ভবানীপুরের মাটি হাতের তালুর মতো চেনা, সেখানেও কোমও খামতি রাখতে চাইছেন না তৃণমূল সুপ্রিমো। তাই বারবার করে অনুরোধ করে গেলেন, যদি বৃষ্টি হয়, বা যদি আবহাওয়া খারাপ থাকে, তাহলেও যেন কেউ বাড়িতে বসে না থাকেন। কেউ যেন এমনটা না ভাবেন, মমতা তো জিতেই যাবেন, তাই ভোট দিতে না গেলেও চলবে। অর্থাৎ, প্রতিটি ভোটের দিকে বাড়তি গুরুত্ব দিচ্ছেন মমতা।
উল্লেখ্য, মমতার বিপরীতে যিনি লড়ছেন, সেই প্রিয়ঙ্কা টিবরেওয়াল ভোট ময়দানে অপরিচিত মুখ হয়েও বেশ চাপে রাখছেন তৃণমূল সুপ্রিমোকে। নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ জানিয়ে চিঠি পাঠিয়েছেন, সমস্ত তথ্য হলফনামায় উল্লেখ করেননি ভবানীপুরের তৃণমূল প্রার্থী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর অভিযোগ, তৃণমূল সুপ্রিমোর বিরুদ্ধে কত কেস রয়েছে, তা হলফনামায় উল্লেখ করেননি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
আরও পড়ুন: Bhabanipur By-Election: তথ্য গোপন করেছেন মমতা, এবার কমিশনের কাছে অভিযোগ জানিয়ে চিঠি প্রিয়াঙ্কার