
মঙ্গলবার জলপাইগুড়ির সভা থেকে ফেরার সময় আচমকা দুর্ঘটনার কবলে পড়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের হেলিকপ্টার। খারাপ আবহাওয়ার কারণেই হেলিকপ্টার জরুরি অবতরণ করাতে হয় সেবক এয়ারবেসে। নামার সময়েই পায়ে ও কোমরে চোট পেয়েছেন তিনি।
সেবক এয়ারবেসে জরুরি অবতরণের পর ১ ঘণ্টা সেখানেই ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। পরে বাগডোগরার উদ্দেশে রওনা হন। সেই সময় চা খান, সবার সঙ্গে কথাও বলেন। বিবৃতি প্রকাশ করল আর্মির ইস্টার্ন কমান্ড।
বিস্তারিত পড়ুন: কপ্টারের জরুরি অবতরণের পর এক ঘণ্টা এয়ারবেসে ছিলেন মমতা, সেইসময় কী হয়েছিল জানাল সেনা
হাসপাতালে ভর্তি হলেন না। চিকিৎসার পর বাড়ি ফিরে গেলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। হেঁটে হাসপাতালে প্রবেশ করলেও বেরনোর সময় হুইল চেয়ারে দেখা যায় তাঁকে। তাঁর জন্য একটি আলাদা গাড়ি নিয়ে আসা হয় হাসপাতালে। উঁচু গাড়িতে উঠতে অসুবিধা হবে বলে তার জন্য আসে একটি নীচু গাড়ি। দেখা যায়, বেশ কষ্ট করে গাড়িতে উঠছেন মুখ্যমন্ত্রী। গাড়ির ব্যাকসিটে রয়েছেন সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্য়ায়।
এই গাড়িতে ফিরছেন মমতা
এমআরআই-এর রিপোর্টে জানা গিয়েছে, মুখ্যমন্ত্রীর বাঁ পায়ের হাঁটু ও হিপ জয়েন্টের লিগামেন্টে আঘাত লেগেছে। চিকিৎসা ইতিমধ্যেই শুরু করা হয়েছে বলে জানালেন এসএসকেএমের ডিরেক্টর মনিময় বন্দ্যোপাধ্য়ায়। তিনি জানিয়েছেন, চিকিৎসকেরা মমতাকে পরামর্শ দিয়েছিলেন, যাতে তিনি হাসপাতালে ভর্তি থেকে চিকিৎসা করান। কিন্তু ভর্তি হতে চাননি মমতা। বাড়িতে থেকেই চিকিৎসা করাতে চান তিনি।
উডবার্নে এমআরআই করা হয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর। মমতাকে ভর্তি করাতে হবে কি না, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে। চিকিৎসকেরা রিপোর্ট দেখে সেই সিদ্ধান্ত নেবেন বলে সূত্রের খবর। এমআরআই সেন্টার থেকে মুখ্যমন্ত্রীকে হুইল চেয়ারে বসিয়ে ওয়ার্ডের দিকে নিয়ে যাওয়া হয়। উল্লেখ্য, বিধানসভা নির্বাচনের আগে নন্দীগ্রামে গিয়ে পায়ে চোট পেয়েছিলেন মমতা। সেই সময় হুইল চেয়ারে বসেই প্রচার সেরেছিলেন তিনি।
হুইল চেয়ারে মমতা
এমআরআই করা হচ্ছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। রয়েছে তিন সদস্যের চিকিৎসক দল। রয়েছেন, ড. রাজেশ প্রামাণিক (ফিজিক্যাল মেডিসিন বিশেষজ্ঞ), ড. অলক পণ্ডিত (স্নায়ুরোগ বিশেষজ্ঞ), ড. অর্চনা সিংহ (রেডিওলজি বিশেষজ্ঞ)। জানা গিয়েছে, উডবার্ন ওয়ার্ডের দোতলা থেকে একতলায় হুইল চেয়ারে করে মুখ্যমন্ত্রীকে এমআরআই করাতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
ঘটনার পরই রাজ্যপাল ফোন করে খবর নেন মুখ্যমন্ত্রীর। পরে রাজভবনের তরফে এসএসকেএমে পাঠানো হয় ফুল। দুজন আধিকারিক ফুল নিয়ে যান উডবার্ন ওয়ার্ডে।
একে একে নেতা-মন্ত্রীরা পৌঁছচ্ছেন এসএসকেএমে। মমতা পৌঁছনোর পরই হাসপাতালে প্রবেশ করেন বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়, মেয়র ফিরহাদ হাকিম, বিধায়ক দেবশিস কুমার। বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি জানিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রীর পায়ে চোট লেগেছে।
এসএসকেএম হাসপাতালের উডবার্ন ব্লকে নিয়ে যাওয়া হল মুখ্যমন্ত্রী মমতাকে। গাড়ি থেকে নামার সময় খুঁড়িয়ে হাঁটতে দেখা যায় তাঁকে। পায়ে চোট রয়েছে, তাই হাঁটতে অসুবিধা হচ্ছে। বাঁ পা ফেলতে পারছেন না তিনি। তবে হুইল চেয়ার বা স্ট্রেচার আনা হলেও, তা নিতে চাননি তিনি। মুখ্যমন্ত্রীকে ধরে ভিতরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রীর হেলিকপ্টারের জরুরি অবতরণের পর তাঁর শারীরিক অবস্থার খোঁজ নিয়েছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। সে কথা তিনি টুইটারে নিজেই জানিয়েছেন।
বিস্তারিত পড়ুন: কোমরে-পায়ে চোট মমতার, মুখ্যমন্ত্রীর স্বাস্থ্যের খোঁজ নিলেন রাজ্যপাল
সূত্রের খবর, এসএসকেএম হাসপাতালে চিকিৎসা করা হবে মুখ্যমন্ত্রীর। সেখানে এমআরআই করা হবে বলে জানা গিয়েছে। সবরকমের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে ইতিমধ্যেই। এসএসকেএমে রয়েছেন স্বাস্থ্য সচিব নারায়ন স্বরূপ নিগম, রয়েছেন এসএসকেএমের ডিরেক্টর মনিময় বন্দ্যোপাধ্য়ায়।
মেডিসিন বিভাগের প্রধান রাজেশ প্রামাণিককে ডেকে পাঠানো হয়েছে। ভিভিআইপি কেবিনে প্রস্তুত রয়েছেন তিনি। হাসপাতালে উপস্থিত পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্তারাও।
বিমানবন্দর থেকে বেরিয়ে সোজা এসএসকেএমের দিকে যাচ্ছেন মমতা। কেমন আছেন, জানতে চাওয়া হলে গাড়িতে বসেই তিনি বোঝান যে তাঁর পায়ে লেগেছে।
সেবকে ওই ঘটনার পর কলকাতায় ফিরছেন মমতা। কলকাতা বিমানবন্দরে নামার পর সেখান থেকে তাঁকে সরাসরি এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হবে বলে জানা যাচ্ছে। বিমানবন্দরের বাইরে প্রস্তুত রয়েছে অ্যাম্বুল্যান্স।