
কলকাতা: সোমবার মধ্যরাতের বৃষ্টিতে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল শহর-শহরতলিতে, তা শেষ কবে কলকাতাবাসী দেখেছে, স্মৃতি হাতড়েও মনে করা কঠিন। অনেকেই এই পরিস্থিতিকে ‘৭৮ সালের বন্যার সঙ্গে তুলনা করেছেন। খোদ মুখ্য়মন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও বুধবার বলেছিলেন, এই পরিস্থিতিতে ‘৭৮ সালের পর আর কলকাতায় তৈরি হয়নি। মঙ্গলবার বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয় কমপক্ষে ৯ জনের। ইতিমধ্যেই তাই নিয়ে বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকি মামলা দায়ের করেছেন কলকাতা হাইকোর্টে। এবার সেই বিষয়েই কটাক্ষ করলেন মুখ্যমন্ত্রী। সুরুচি সঙ্ঘের পুজো উদ্বোধনের পর নবনীড় বৃদ্ধাশ্রমের আবাসিকদের সঙ্গে আলাপচারিতার মাঝেই তিনি বলেন, “কে একটা কোর্ট এ কেস করেছে। বাংলায় কয়েকটা লোক আছে শুধু পরনিন্দা পরচর্চা করা।”
এদিনও মুখ্যমন্ত্রী আবারও এই পরিস্থিতির জন্য কেন্দ্রকেই দোষারোপ করেন। তিনি বলেন, “বিহার, ফারাক্কা, উত্তরপ্রদেশের জল আসছে। মেয়র সহ সবাই ছিল সেই সময় রাস্তায় থেকে গোটা বিষয়টি দেখেছে। যেন মনে হচ্ছে আমিও প্রকৃতিটা কন্ট্রোল করি। বৈষ্ণব দেবী মন্দিরে কী হয়েছিল? উত্তরাখন্ডে কি হয়েছিল?” ৬ ঘণ্টার মধ্যেই কলকাতা থেকে জল নেমে গিয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি। কথা প্রসঙ্গেই মমতা আদালতে হওয়া মামলার বিষয়ে উল্লেখ করেন।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবারই এই মামলায় রিপোর্ট তলব করেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি। বিচারপতি সৌমেন সেন ও বিচারপতি অপূর্ব সিনহা রায়ের ডিভিশন বেঞ্চ রিপোর্ট চাইল রাজ্য, পুরসভা ও CESC-এর কাছে। ক্ষতিপূরণ ও ক্যানেল সংস্কারের ক্ষেত্রে কী পদক্ষেপ করা হয়েছে, তা জানাবে রাজ্য। পাশাপাশি রিপোর্ট দিতে হবে পুরসভা ও সিইএসসি-কেও। ৭ নভেম্বর রিপোর্ট জমা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ওই দিনই মামলার শুনানি।
ইতিমধ্যেই রাজ্য সরকারের তরফ থেকে তাঁদের পরিবারকে এককালীন ২ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ ও পরিবারের এক সদস্যকে চাকরি দেওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়েছে। তবে এক্ষেত্রে CESC-রও পাঁচ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবি তুললেন মমতা। তিনি বললেন, “বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে যাঁদের মৃত্যু হয়েছে, তাঁদের পরিবারকে আমরা ২ লক্ষ টাকা করে দিচ্ছি। আমরা দায়িত্ব অস্বীকার করতে পারি না। তাছাড়াও CESC কে বলেছি, পাঁচ লক্ষ টাকা করে দিতে, কারণ ওরাও দায়িত্ব অস্বীকার করতে পারে না।”