শুভেন্দুর নাম শুনেই চেয়ার ছাড়লেন মমতা, কিছু বলতে গিয়েও চুপ মুকুল

সাংবাদিক বৈঠকে আচমকাই উঠে আসে শুভেন্দু অধিকারীর নাম, সেই মুহূর্তে বৈঠক বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেন নেত্রী।

শুভেন্দুর নাম শুনেই চেয়ার ছাড়লেন মমতা, কিছু বলতে গিয়েও চুপ মুকুল
ছবি- ফেসবুক
Follow Us:
| Updated on: Jun 11, 2021 | 7:22 PM

কলকাতা: যেখানে শুভেন্দু অধিকারী থাকবেন, বা তাঁর প্রসঙ্গও থাকবে, সেই জায়গায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থাকবেন না। মুকুলের ‘ঘর ওয়াপসির’ দিন এটা আরও একবার স্পষ্ট করে দিলেন তৃণমূল নেত্রী। ঠিক যেভাবে ইয়াস পরবর্তী রিভিউ বৈঠকে অতিথিদের তালিকায় শুভেন্দুর নাম দেখে তিনি প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকে যোগ দেননি; একই ভাবে এ দিনও শুভেন্দু অধিকারীর নাম উচ্চারিত হতেই এক ঝটকায় সাংবাদিক বৈঠকে দাঁড়ি টানেন তৃণমূল সুপ্রিমো। আকারে ইঙ্গিতে বস্তুত বুঝিয়ে দেন, তিনি কতটা তিতিবিরক্ত দলের এই প্রাক্তন নেতার উপর।

শুক্রবার বিকেলে প্রায় ৪ বছর বাদে ঘরে ফেরা মুকুল রায়কে পাশে নিয়েই সাংবাদিক বৈঠক করছিলেন মমতা। সঙ্গে মুকুল-পুত্র শুভ্রাংশু, তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়-সহ বাকিরা উপস্থিত ছিলেন। ধেয়ে আসছিল সাংবাদিকদের একের পর এক প্রশ্ন। কোনও প্রশ্নের উত্তর নরমে, কোনও প্রশ্নের উত্তর খানিকটা বিরক্তি সহকারে দিচ্ছিলেন মমতা। যেমনটা তাঁর স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গি। কিন্তু এই সব কিছুর মাঝে আচমকাই উঠে আসে শুভেন্দু অধিকারীর নাম, সেই মুহূর্তে বৈঠক বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেন নেত্রী।

তৃণমূল ভবনে ঠিক কী ঘটে এ দিন? এক সাংবাদিক মুকুলকে প্রশ্ন করেন, “আপনি তৃণমূল ছাড়ার সময় অনেকে দল ছেড়ে গিয়েছিল। আজ আপনি ঘরে ফিরলেন। আপনার সঙ্গে আর কে কে আসবে?” মুকুল জবাবে বলেন, “আমাদের সেটা দেখতে হবে।” এর পরেই মুকুলের উদ্দেশে প্রশ্ন আসে, “শুভেন্দু অধিকারীর ভাষার প্রয়োগ…”। প্রশ্নটা শেষ করা যায়নি। মুকুল কিছু একটা বলতে গিয়েছিলেন। কিন্তু পারেননি। কারণ শুভেন্দু অধিকারীর নামটা উচ্চারিত হতেই সটান উঠে দাঁড়ান মমতা। বলেন, “দ্য প্রেস কনফারেন্স ইজ় ওভার নাউ।” অর্থাৎ, সাংবাদিক বৈঠক এখন শেষ হল।

আরও পড়ুন: ভোটে ‘গদ্দারি’ করেননি এক সময়ের ‘গদ্দার’ মুকুল, ঘরে ফেরার তালিকা দীর্ঘ, ইঙ্গিত মমতার

মমতার এই তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া চমকপ্রদ হলেও অপ্রত্যাশিত একেবারেই নয়। কারণ আজকের বৈঠকেও তিনি একটা বিষয় বুঝিয়ে দিয়েছেন, যারা ‘নরমপন্থী’ তাঁদের প্রতি তাঁর সহানুভূতি থাকলেও যাঁরা দলকে ‘অপদস্থ’ করেছে; এবং নেত্রীর ভাষায় যাঁরা ‘কুরুচিকর কথা’র প্রয়োগ এবং ভোটে ‘গদ্দারি’ করেছে, তাঁদের তিনি দলে ফেরাবেন না। আর এই চরমপন্থীর তালিকায় সবার উপরেই নাম রয়েছে শুভেন্দু অধিকারীর। তা নিয়ে নিঃসংশয় রাজনৈতিক মহল। নন্দীগ্রামের আসনে শুভেন্দুর কাছে ভোটে হেরে যাওয়া তাঁকে যে কিছুটা হলেও মানসিকভাবে ব্যাকফুটে ফেলে দিয়েছে, সেটাও যেন প্রকাশ পাচ্ছে। এমনটাই মত রাজনৈতিক মহলের একাংশের।

আরও পড়ুন: ‘বিজেপিতে থাকা যায় না, ঘরের ছেলে ঘরে ফিরল’, ‘নরমপন্থী’ মুকুলকে পেয়ে বললেন মমতা