কলকাতা: বাংলার অন্তত ২০০ জন মানুষ এখনও আটকে রয়েছেন তালিবানের দখলে থাকা আফগানিস্তানে। বুধবার নবান্নে বসে এমনটাই জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মূলত দার্জিলিং, তরাই এবং কালিম্পঙের কিছু মানুষ সেখানে আটকা পড়ে গিয়েছেন বলে জানান মমতা। এই নিয়ে মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী একটি চিঠি লিখছেন বিদেশ মন্ত্রকে। আটকে থাকা বঙ্গবাসীদের ফিরিয়ে আনার যাতে দ্রুত বন্দোবস্ত করা হয়, সেই মর্মে এই চিঠি লেখা হয়েছে বলে জানান মমতা। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, “সরকারের উচিত ওঁদের ফিরিয়ে আনা এবং থাকার ব্যবস্থা সুনিশ্চিত করা। যাতে ওঁরা সুরক্ষিতভাবে রাজ্যে ফিরে আসতে পারেন। অবশ্যই এটা একটা বড় সমস্যা। কিন্তু সবার আগে ভারতীয়দের নিরাপত্তার বিষয়টি আমাদের নিশ্চিত করতে হবে।”
একই সঙ্গে আফগানিস্তানে তালিবানের দখল নেওয়ার প্রসঙ্গেও বুধবার প্রথম মুখ খুলতে শোনা যায় মুখ্যমন্ত্রীকে। তিনি বলেন, “বর্তমান পরিস্থিতি অত্যন্ত স্পর্শকাতর। আমার মনে হয় এই সময় বিষয়টি নিয়ে মুখ না খুলে বিদেশ মন্ত্রকের বিবৃতির উপরই নজর দেওয়া উচিত। আপাতত আমাদের পরিস্থিতির উপর নজর রাখতে হবে। এবং যা করার ভারত সরকারকেই করতে হবে।” মুখ্যমন্ত্রী বস্তুত স্পষ্ট করে দেন, তিনি এই বিষয়ে আগ বাড়িয়ে কোনও মন্তব্য করবেন না। কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে বিষয়টি নিয়ে অবস্থান সাফ না করার জন্য বাকি বিরোধীরা যতই চাপ দিক না কেন, তৃণমূল নেত্রী বৈদেশিক বিষয়ে কেন্দ্রের উপরই নির্ভর করতে চলেছেন। তবে এ রাজ্যের নাগরিকদের ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে যে তিনি সচেষ্ট, সেটাও কার্যত বুঝিয়ে দিতে পিছপা হননি।
উল্লেখ্য, আফগানিস্তানে আটকে পড়া ভারতীয়দের দেশে ফিরিয়ে আনতে দ্রুত পদক্ষেপ করা শুরু করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। বায়ুসেনার বিশেষ বিমানে ইতিমধ্যেই কয়েকশো ভারতীয়কে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে। কিন্তু আফগানের তালিবান সরকার বাণিজ্যিক আকাশসীমা এখনও বন্ধ রাখায় এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান দিয়ে ভারতীয়দের এয়ার লিফট করা সম্ভব হচ্ছে না। ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রক জানিয়েছে, একবার বাণিজ্যিক আকাশসীমা খুলে দেওয়া হলেই আটকে থাকা সমস্ত দেশবাসীকে ফিরিয়ে আনা হবে। একই সঙ্গে সে দেশের হিন্দু এবং শিখ নাগরিকদেরও ভারতীয় নাগরিকত্ব দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে নয়া দিল্লি। যদিও এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে এ দিন কোনও মন্তব্য করতে চাননি মুখ্যমন্ত্রী। স্পর্শকাতর এই বিষয়টির সিদ্ধান্তভার তিনি কেন্দ্রের উপর ন্যস্ত করেছেন।
যদিও ঠিক কত সংখ্যক ভারতীয় এই মুহূর্তে কাবুল বা আফগানিস্তানের অন্যান্য প্রদেশে আটকে রয়েছেন সেই সম্পর্কে নির্দিষ্ট কোনও তথ্য এখনও পর্যন্ত বিদেশ মন্ত্রকের তরফে দেওয়া হয়নি। তবে সূত্রের খবর, সংখ্যাটা আনুমানিক ১৫০০-২০০০ হলেও হতে পারে। আপাতত গভীর উৎকণ্ঠার মধ্যেই প্রতিটা মুহূর্ত কাটাচ্ছেন তাঁদের পরিবারের সদস্যরা। আরও পড়ুন: ‘তিন বছর কোথায় ছিলেন?’ গাড়ির বাইরে তুমুল উত্তেজনা, নির্লিপ্ত দিলীপ বললেন…