কলকাতা : ফের একবার প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নদী ভাঙনের জেরে দিনের পর দিন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে উপকূলবর্তী এলাকা। বিশেষত মালদহ, মুর্শিদাবাদের মতো জেলাগুলিতে ব্যাপক ক্ষতি হয়। বারবার বলা সত্ত্বেও এ ব্যাপারে কোনও উদ্যোগ নেয়নি কেন্দ্র। তাই এবার কত ক্ষতি হয়েছে সেই হিসেব দিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি লিখলেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানিয়েছেন গত প্রায় ১৫ বছর ধরে এই সমস্যা চলছে। অন্তত এক হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেছেন তিনি।
রাজ্যে বিভিন্ন জেলায় গঙ্গাভাঙনের জেরে জমি, বাড়ির বিপুল ক্ষতি হচ্ছে, চিঠিতে সে কথাই জানিয়েছেন মমতা। গঙ্গার-পদ্মার ভাঙনের জেরে মালদহ, মুর্শিদাবাদ এবং নদিয়ার মতো জেলাগুলিতে ক্ষতি হচ্ছে বলে উল্লেখ করেছেন তিনি। তাঁর দাবি, ফরাক্কা ব্যারেজ নির্মাণ এই ভাঙনের অন্যতম কারণ। ওই সব এলাকার বাসিন্দাদের অসুবিধার কথা মাথায় রেখেই এ দিন চিঠি দিয়েছেন তিনি।
মুখ্যমন্ত্রী আরও জানিয়েছেন, ২০০৫-এ কেন্দ্রীয় জলসম্পদ মন্ত্রক ফরাক্কা ব্যারেজ প্রজেক্ট অথরিটি (এফবিপিএ)-র কাজের ক্ষেত্রে বাড়িয়ে দিয়েছে। আর তারই কুপ্রভাব পড়েছে ওই সব জেলাগুলিতে। ২০১৭-র ২৫ মে এ বিষয়ে জানিয়ে কেন্দ্রকে চিঠিও লিখেছিলেন মমতা। মঙ্গলবার যে চিঠি তিনি দিয়েছেন, সেখানে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, গত ১৫ বছরে এই ভাঙনের কবলে পড়ে ২৮০০ হেক্টর উর্বর জমি নদীগর্ভে তলিয়ে গিয়েছে। সরকারি এবং বেসরকারি মিলিয়ে প্রায় হাজার কোটি টাকার সম্পত্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি। তাঁর দাবি, এফবিপিএ-কে এ বিষয়ে রাজ্য সরকার বারবার জানিয়েছে, তারপরও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
মমতা জানিয়েছেন, ২০১৭ তে জলসম্পদ মন্ত্রকের তরফে এফবিপিএ-র আওতায় থাকা এলাকার সীমা কমিয়ে দেওয়া হয়। মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, এই এ বিষয়ে ওই বছরের ১০ অগস্ট কেন্দ্রকে চিঠি লিখেও কোনও উত্তর পাননি তিনি। শুধু তাই নয়, এ বিষয়ে প্রতিবাদ জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি। চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রী আরও জানান, ফরাক্কা ব্যারেজ কর্তৃপক্ষ ভাঙন রোধে কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। তাই এ ব্য়াপারে এবার রাজ্য সরকারকেই উদ্যোগী হতে হয়েছে। কিন্তু, এই ভাঙন বন্ধ করতে বিপুল টাকার দরকার, আর সেটা জোগানো রাজ্য সরকারের পক্ষে অসম্ভব হয়ে পড়ছে বলেও চিঠিতে উল্লেখ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
আরও পড়ুন : AMTA Student Death: আনিস মৃত্যুর প্রতিবাদে কেন দেখা নেই পদ্মের? কী বলছে বঙ্গ বিজেপি?