
কলকাতা : পুরভোট নিয়ে শাসক শিবির আত্মবিশ্বাসী হলেও দলের ভাবমূর্তি যাতে কোনও ভাবেই ক্ষুন্ন না হয় সে দিকে বিশেষ নজর দিয়েছে দলের শীর্ষ নেতৃত্ব। কিছুদিন আগেই ভোট দানে বাধা দিলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে বার্তা দিয়েছিলেন অভিষেক। আর এবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) বুঝিয়ে দিলেন, ওয়ার্ডের বাইরের লোকের উপস্থিতি বরদাস্ত করা হবে না। কলকাতার বাইরের নেতারা শুধু প্রচারে আসতে পারবেন বলে জানিয়েছেন তৃণমূল (TMC) সুপ্রিমো। দলের অন্দরে এই বিষয়ে তিনি কড়া বার্তা দিয়েছেন বলে সূত্রের খবর।
তৃণমূল সূত্রে খবর, আজ তিনি দলের নেতাদের উদ্দেশে বলেছেন, কলকাতার আশেপাশে যাঁরা থাকেন, তাঁরা এসে প্রচার করতে পারেন। তবে প্রচারের কাজ যেন শুধু বক্তৃতাতেই সীমাবদ্ধ থাকে, সেই বার্তাই দিয়েছেন তিনি। প্রচারে বক্তৃতা ছাড়া ওই নেতাদের আর কোনও ভূমিকা যেন না থাকে, তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন মমতা। সূত্রের খবর, মমতা বলেছেন, ‘নিজের কোমরের জোরে জিততে হবে। বাইরের কোনও লোক যেন ভোটের দিন কলকাতায় না বসে থাকে।’
একুশের বিধানসভা নির্বাচনে জয়ের পর বর্তমানে তৃণমূলের কাছে পাখির চোখ ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচন। এর আগে ২০১৯- এর লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির আসন বেড়ে গিয়েছিল এ রাজ্যে। পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূলের ভাবমূর্তিতে যে ভাবে ক্ষুন্ন হয়েছিল, তার প্রভাব লোকসভায় পড়েছিল বলে মনে করে রাজনৈতিক মহল। তাই এবার পুরভোটের ক্ষেত্রে অত্যন্ত সাবধানী তৃণমূল কংগ্রেস। পঞ্চায়েত নির্বাচনে ভোট দানে ও মনোনয়ন জমা দেওয়ার ক্ষেত্রে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল শাসক দলের বিরুদ্ধে। ভোটের দিন বহিরাগত লোকজন নিয়ে আসার অভিযোগও বারবার উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। তাই সম্ভবত কোনও ঝুঁকি নিতে চাইছে না ঘাসফুল শিবির।
পুরভোটে যদি ভোটদানে বাধা দেওয়ার মতো ঘটনা সামনে আসে, তার প্রভাব পড়তে পারে ২০২৪- এর লোকসভা নির্বাচনে, সে জন্যই এই বিশেষ বার্তা বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
সম্প্রতি, পুরভোটের দলীয় প্রার্থীদের নিয়ে হওয়া বৈঠকেও কড়া বার্তা দিয়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ভোট দানে বাধা দেওয়া বা কোনও রকম বিশৃঙ্খলার অভিযোগ উঠলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে বার্তা দিয়েছেন তিনি। প্রয়োজনে প্রার্থীকে বহিষ্কারও করা হতে পারে। পুরভোটের রণকৌশল সংক্রান্ত বৈঠকে এই বার্তা দিয়েছেন তিনি।
তবে গেরুয়া শিবিরের দাবি, তৃণমূলের এ সব কৌশল আসলে আইওয়াশ। বিজেপি নেতারা মনে করেন প্রকাশ্যে এমন বার্তা দিলেও দলের অন্দরের স্ট্র্যাটেজি আলাদা। অভিষেকের ওই নির্দেশের পর বিজেপি নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার বলেছিলেন, ‘এইসব নির্দেশিকা ও ভিতরের অন্য নির্দেশিকার তফাৎ আছে। তৃণমূল ভোট লুঠ করবে এটা ঠিক করে রেখেছে বলেই তারা আলাদা করে কলকাতা পুরসভার নির্বাচন করছে।’ তাঁর দাবি, ভোট লুঠের পরিকল্পনা একইসঙ্গে করছে তৃণমূল।
আরও পড়ুন : Weather Update: জাওয়াদের দুর্যোগ কেটে গেলেও নিস্তার নেই, আবার কেন বৃষ্টি কলকাতায়?