
কলকাতা: একাধিক বিতর্ক। বারবার বিপর্যয়। তারপরেও বউবাজারের তলা দিয়ে চলল মেট্রো (Kolkata Metro)। হাওড়া ময়দান থেকে সেক্টর ফাইভ ৩২ মিনিটের যাত্রা। নানাবিধ বিতর্ক এবং সমালোচনার মধ্যেও নিজের কাজ সম্পূর্ণ করলেন ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো প্রকল্পের অন্তর্গত সল্টলেক থেকে এসপ্ল্যানেড পর্যন্ত যাবতীয় কাজের নির্মাণকারী সংস্থার চিফ অপারেটিং অফিসার রূপক সরকার।
রূপক যদিও বলছেন, যে পরিষেবা অনেক আগে সাধারণ মানুষ পেতে পারতেন, সেটা অনেক দেরি হয়ে গেল। এটাই আক্ষেপ থাকছে। এদিকে নতুন মেট্রো চালু হলেও বউবাজার বিপর্যয়ে বাড়িহারাদের মন এখনও খারাপ। এখনও বাড়ি না পাওয়ায় প্রকাশ্যেই উগরে দিয়েছেন ক্ষোভ। রূপক যদিও বলছেন এবার যেভাবে কাজ হয়েছে তাতে ভবিষ্যতে কোনও অসুবিধাই হবে না। স্পষ্ট বলছেন, “আমি আশ্বস্ত করছি, বউবাজার তলায় যে ধরনের কাজ হয়েছে তাতে রাতে মেট্রো চলাচলের জন্য ভূপৃষ্ঠের উপরে থাকা বাড়ি বা ঘরের বা সাধারন মানুষের কিছু হবে না। বারবার করে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার পরেই চালানো হয়েছে মেট্রো। কিন্তু কেউই টের পাননি। কারণ এমনই যন্ত্র বসেছে।”
কেন এত জোর দিয়ে এ কথা বলছেন রূপক? ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে তিনি বলেন, “যেভাবে টানেল তৈরি করা হয়েছে তাতে আগামীতে আর জল বেরিয়ে আসতে পারবে না। যে ধরনের কেমিক্যাল, আনুষাঙ্গিক যন্ত্র এবং পরিকাঠামো ব্যবহার করা হয়েছে তা অন্যান্য টানলে তুলনায় কিছুটা হলেও ভিন্ন।”
তবে বিপর্যয় যেহেতু হয়েছে তাই মানুষের মনে চিন্তা যে থাকবে তা মানছেন তিনি। তিনি বলছেন, “সমালোচনা এসেছে। কিন্তু থেমে থাকলে চলতো না সেটা আমি জানতাম। কাজ করার সময় বাড়ি ভেঙে পড়েছে। অস্বীকার করছি না। কিন্তু কলকাতার জিওলজিক্যাল অবস্থায় এমনই, যে কাজ করার সময় কিছু না কিছু সমস্যা হবেই। দুটো টানেল বোরিং মেশিন ভূগর্ভে প্রবেশ করিয়ে সুড়ঙ্গ তৈরি করতে হয়েছে। সেটা আরো বড় চ্যালেঞ্জ ছিল।”
কীভাবে হল কাজ?
রূপক বলছেন, “বিপর্যয়ের পর শ্যাফ্ট তৈরি করে কাজ হয়েছে। পরিকল্পনা করে স্টেপ বাই স্টেপ এই কাজ হয়েছে। আমি খুশি, কারণ এই মেট্রো নির্মাণ করা সম্ভবপর হয়েছে।” এখন দিনের শেষে গোটা কাজ সাফল্য পাওয়ায় খুশি তিনিও। বলছেন, “সাধারণ মানুষ এই মেট্রোতে ভিড় করছে। তুই যে কোনও কারণেই হোক কাজের যে বড়সড় সাফল্য এসেছে তা অস্বীকার করা যায় না। আমি নিজে গতকাল সেক্টর ফাইভে গিয়ে দেখেছি মেট্রোতে ভিড় উপচে পড়ছে। আগামীর চ্যালেঞ্জ নেওয়ার ক্ষেত্রে এতে স্বাভাবিকভাবেই আত্মবিশ্বাস বেড়েছে।”