আচমকা ‘চোখ’ বন্ধ কলকাতা পুলিশের! বিকল হয়ে গেল হাজারের বেশি সিসিটিভি ক্যামেরা
হাজারের বেশি সিসিটিভি ক্যামেরা একসঙ্গে বিকল হয়ে যাওয়ায় শহরের রাজপথে নজরদারির প্রক্রিয়া কার্যত থমকে গিয়েছে।
কলকাতা: শহরের রাস্তায় আচমকাই নজরদারির বন্ধ হয়ে গেল কলকাতা পুলিশের। মঙ্গলবার সকাল থেকে অচল হয়ে গিয়েছে কলকাতা পুলিশের কয়েক হাজার হাজার সিসিটিভি ক্যামেরা। লালবাজার সূত্রে খবর, কলকাতা ট্রাফিক পুলিশের অন্তত হাজারের বেশি সিসিটিভি ক্যামেরা একসঙ্গে বিকল হয়ে যাওয়ায় শহরের রাজপথে নজরদারির প্রক্রিয়া কার্যত থমকে গিয়েছে। লালবাজার থেকে শুরু করে ট্র্যাফিক কন্ট্রোল গার্ড, সব বিভাগই এককথায় অন্ধকারে। ফলে আপতত পথে মোতায়েন সার্জেন্টদের ভরসাতেই গোটা পরিস্থিতি সামাল দিতে হচ্ছে।
যদিও কী কারণে একসঙ্গে এতগুলি সিসিটিভি বিকল হয়ে গেল, সেই কারণ এখনও পর্যন্ত স্পষ্ট নয়। তবে পুলিখ সূত্রে জানা গিয়েছে, সকাল থেকে ট্রাফিক পুলিশের যে হাজার থেকে ১২০০ সিসিটিভি ক্যামেরা রয়েছে, তাতে কোনও ছবি আসছে না। এই সিসিটিভি ক্যামেরাগুলিকেই কলকাতা পুলিশের ‘চোখ’ বলা হয়ে থাকে। লালবাজারে বসে এই ক্যামেরার মাধ্যমেই বস্তুত গোটা কলকাতা শহরের উপর নজরদারি রাখেন পুলিশকর্তারা। কিন্তু সেই চোখ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বেজায় সমস্যার মধ্যে পড়তে হয়েছে কলকাতা পুলিশকে। একসঙ্গে আচমকা সবগুলি ক্যামেরা কাজ করা বন্ধ করে দেওয়ায় সাইবার হামলার আশঙ্কাও উড়িয়ে দিতে পারছেন না পুলিশকর্তাদের একাংশ।
এই জন্যই ঠিক কী কারণে এমনটা হল, তা তদন্ত করে দেখার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে কলকাতা পুলিশের সাইবার শাখাকে। কোনও যান্ত্রিক ত্রুটি জেরে এমনটা ঘটল, নাকি আশঙ্কা সত্যি করে বাস্তবেই কলকাতা পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের উপর কোনও শত্রু সাইবার হানা দিল, সেটা বর্তমানে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এই দুটি কারণ ছাড়া অন্য কোনও ভাবে একসঙ্গে সকল ক্যামেরা বিকল হওয়া একপ্রকার অসম্ভব বলেই মনে করা হচ্ছে।
তবে এই প্রথমবার এমনটা ঘটেনি। এর আগেও আমপান পরবর্তী সময় কলকাতা ট্রাফিক পুলিশের একগুচ্ছ সিসিটিভি একসঙ্গে বিকল হয়ে যায়। সেই সময় অবশ্য ঝড়ের দরুণ গাছ বা গাছের ডাল ভেঙে অধিকাংশ ক্ষেত্রে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছিল। সেই সময় দ্রুত সমস্ত ক্যামেরা সারিয়ে নেওয়া হয়েছিল। তবে এ বার ঠিক কী কারণে এমনটা ঘটল তা ভাবাচ্ছে কলকাতা পুলিশকে। শীঘ্রই সমস্যার সমাধান না করতে পারা গেলে তা আরও বড় সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে। যে কারণে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ করছে লালবাজার।
তবে কলকাতা পুলিশের একটি সূত্র জানাচ্ছে, সিসিটিভি ক্যামেরা বিভ্রাটের নেপথ্যে সাইবার হানার কোনও ঘটনা ঘটেনি। তবে বিকল হওয়া সিসিটিভি ক্যামেরার সংখ্যা ১৫০০-ও হতে পারে। কারণ ট্রাফিক বিভাগ ছাড়াও শহরের বিভিন্ন স্পর্শকাতর স্থান; যেমন কলকাতা হাইকোর্ট, রিজার্ভ ব্যাঙ্কের দফতর ইত্যাদি এলাকায় পুলিশের ক্যামেরা লাগানো থাকে। যতক্ষণ ক্যামেরা বন্ধ থাকল, সেই সময়ের মধ্যে যদি এই জায়গাগুলিতে, বা অন্য কোথাও বড় ঘটনা ঘটে গিয়ে থাকে, তখন কোন সূত্র ধরে এগোবে পুলিশ? আপাতত এই প্রশ্নটাই উঠছে নানা মহলে। আরও পড়ুন: ৫০-এর মধ্যে ৪৮ জনই ‘বিশেষ সম্প্রদায়ের’! রাজ্য পুলিশে কনস্টেবল নিয়োগ প্রক্রিয়াকে চ্যালেঞ্জ