কলকাতা: মুকুল রায় কোনও দিন বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগই দেননি। সূত্রের খবর, দলত্যাগ অভিযোগের শুনানিতে এমনই সওয়াল করেছেন মুকুল রায়ের আইনজীবী সায়ন্তক দাস।
মুকুল রায়ের আইনজীবীর সওয়াল
এদিনের শুনানির পর মুকুল রায়ের আইনজীবী সায়ন্তক দাস বলেছেন, “আমাদের যেটি বলার, সেটি স্পিকারের কাছে জানানো হয়েছে। বিরোধীদের তরফে একটি লিখিত রিজয়েন্ডার দেওয়া হবে।” শুক্রবার স্পিকারের কাছে মুকুলের দলত্যাগ-বিরোধী মামলার শুনানি ছিল। এদিনও শুনানিতে আসেননি মুকুল রায়। তাঁর হয়ে সওয়াল করেন আইনজীবী সায়ন্তক দাস।
বিরোধী পক্ষের আইনজীবীর বক্তব্য
পাল্টা সওয়াল করেন শুভেন্দু অধিকারী আইনজীবী বিল্বদল ভট্টাচার্য। তিনি এবিষয়ে রিটেন রিজয়েন্ডার দেবেন বলে জানিয়েছেন। এই মামলার পরবর্তী শুনানি ৩ জানুয়ারি। সেই দিনই এই মামলার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে পারে বলে আভাস দিয়েছেন বিরোধী পক্ষের আইনজীবী। এক্ষেত্রে উল্লেখ্য, ১৭ জানুয়ারির মধ্যে এই বিষয়টি শেষ করার কথা আগেই স্পিকারকে নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।
দলত্যাগ অভিযোগ মামলার প্রেক্ষাপট
উল্লেখ্য, এবারের বিধানসভা নির্বাচনে কৃষ্ণনগর উত্তর আসন থেকে বিজেপি প্রার্থী হিসেবে জয়ী হয়েছিলেন মুকুল রায়। ভোটের পর তিনি ফের তাঁর পুরানো দল তৃণমূলে যোগ দেন। এরপর তাঁর বিরুদ্ধে দলত্যাগ বিরোধী আইনে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানায় বিজেপি। গত ১৭ জুন মুকুলের বিধায়ক পদ খারিজের দাবি জানিয়ে বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে আবেদন করেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। এরইমধ্যে মুকুলকে পিএসি চেয়ারম্যান করা নিয়ে আপত্তি জানিয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন অম্বিকা রায়।
মুুকুলের স্ববিরোধী কিছু বক্তব্য
তবে এদিনের শুনানিতে আইনজীবী সায়ন্তনের চাঞ্চল্যকর সওয়াল কিন্তু কয়েকটি বিষয়ে ভীষণভাবে মুুকুল রায়ের বক্তব্যের বিরোধিতা করে। তৃণমূলে প্রত্যাবর্তনের পর মুকুল রায় কৃষ্ণনগরের তৃণমূলের সাংগঠনিক সভায় গিয়ে বলেছিলেন, “ভারতীয় জনতা পার্টির পক্ষ থেকে আমি বলতে পারি তৃণমূল পর্যুদস্ত হবে। এই কৃষ্ণনগরে স্বমহিমায় নিজেদের প্রতিষ্ঠা করবে বিজেপি। নিজের ক্ষমতায় নিজেদের প্রতিষ্ঠা করবে বিজেপি।” পরক্ষণেই তিনি ভুল বুঝতে পারেন। তবে মুখ থেকে বেরিয়ে ‘বাণ’ তখন বেরিয়ে গিয়েছে। আর তার সাতদিন পরই আবার ‘ভুল’! তিনি বলেছিলেন, কৃষ্ণনগর উত্তর কেন্দ্রে ফের প্রার্থী হলে তিনিই জিতবেন বিজেপির টিকিটে। তৃণমূলের হয়ে দাঁড়ালে কী হবে তা মানুষ ঠিক করবে! এই কথাটি আবার বলেছিলেন বিধানসভার বাইরে দাঁড়িয়েই।
মুকুল রায় একজন বিচক্ষণ রাজনীতিবিদ। তাতে রাজনীতির বিশ্লেষকরা চাণক্য উপাধি দিয়েছেন। তাই চাণক্যর মস্তিষ্কপ্রসূত বিভিন্ন রাজনৈতিক ‘পাজল গেম’ তাঁর অবস্থান নিয়েই ধন্দ তৈরি করছে!
তবে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও এই বিষয়টিকেই হাতিয়ার করতে চাইছেন বলে সূত্রের খবর। আইনজীবী জানিয়েছেন, এবিষয়ে লিখিত রিজয়েন্ডার দেওয়া হবে। কেন এমনটা একটা অদ্ভূত দাবি করেছেন মুকুলের আইনজীবী, এই বক্তব্যের সারবত্তাই বা কী? সেই প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। পাশাপাশি তাঁর দাবি, তাঁদের কাছে সমস্ত ফুটেজ রয়েছে এ সংক্রান্ত। নির্দিষ্ট সময়ে তা পেশ করা হবে।
আরও পড়ুন: Bratya Basu: মুখ্যমন্ত্রীকে আচার্য করার ‘ভাবনা’ রাজ্যের, কী বললেন শিক্ষামন্ত্রী?