
কলকাতা: পরপর নিম্নচাপ, একটানা বৃষ্টি, দিকে দিকে বন্যা পরিস্থিতি, বিগত কয়েক মাসে শুধু এই ছবিই দেখেছে বাংলা। এরইমধ্যে পুজো মিটতে না মিটতেই এক্কেবারে প্রকৃতির রুদ্ররূপ দেখেছে বাংলা। দেখেছে মৃত্যু মিছিল। সেই রেশ এখনও কাটেনি। মন খারাপ উত্তরবঙ্গের। এরইমধ্যে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের জেরে রাজ্যজুড়ে সেতু পরীক্ষা করার নির্দেশ দিলেন মুখ্যসচিব। সূত্রের খবর, বিশেষ করে উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতে বিশেষ নজরদারি চালানোর নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ।
শুধু তাই নয়, উত্তরবঙ্গে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে সেখানকার বাসিন্দাদের নষ্ট হওয়া নথিপত্র নতুন করে যাতে দ্রুত তৈরি করার যায় তাঁর নির্দেশও এসে গিয়েছে নবান্ন থেকে। ডুয়ার্সের একটা বড় অংশে দেখা গিয়েছিল বন্য়া পরিস্থিতি। কোথাও কোথাও তো সাড়ে তিনশো মিলিমিটারেরও বেশি বৃষ্টি হয়েছিল। মিরিকে বড় অংশ ঘর-বাড়ি ভেঙে এক্কেবারে মাটিতে মিশে গিয়েছে। এই অবস্থায় নথিপত্র না থাকলে নানা কাজে যে সাধারণ মানুষকে সমস্যায় পড়তে হতে পারে, জটিলতা যে আরও বাড়তে পারে তা বুঝেই সরকারের তরফে এই পদক্ষেপ বলে মত ওয়াকিবহাল মহলের।
শুক্রবার উত্তরবঙ্গের বিপর্যয় এবং আমাদের পাড়া আমাদের সমাধান প্রকল্প নিয়ে রিভিউ মিটিংয়ে বসেছিলেন মুখ্যসচিব। সেখানে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্র, স্বাস্থ্য, সেচ, পূর্ত, কৃষি, বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর সহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সচিবরা। ভার্চুয়ালি উপস্থিত ছিলেন সব জেলাশাসক।
প্রশাসনিক সূত্রের খবর, দুর্গত এলাকায় “আমাদের পাড়া আমাদের সমাধান” শিবির করার ক্ষেত্রে বিশেষ ব্যবস্থা নিতে হবে বলে এদিন নবান্ন থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নির্দেশ চলে গিয়েছে উত্তরবঙ্গের জেলাগুলির কাছে। শিবিরে আসা মানুষদের প্রয়োজনীয নথি না থাকলে, তাঁদের দ্রুত নথির ব্যবস্থা করে দিতে বলা হয়েছে। শুধু তাই নয়, ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ি তৈরি করার বিষয়টি বাংলার আবাস যোজনায় আনা যায় কিনা, তাও দেখার নির্দেশ।
অন্যদিকে রাস্তাঘাট সংস্কারের কাজ ইতিমধ্যেই পূর্ত দফতর শুরু করে দিয়েছে। বাঁধ সংস্কারের কাজও শুরু করে দিয়েছে সেচ দফতর। যাতে মানুষের কোনও সমস্যা তাৎক্ষনিক সমাধান করা যায় তার জন্য দুর্গত জেলাগুলির প্রশাসনকে ২৪ ঘণ্টাই সজাগ থাকার কথা বলা হয়েছে। অন্যদিকে জমা জলে ডেঙ্গির প্রকোপও বাড়তে পারে। সে কারণে স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগমকে ডেঙ্গি প্রতিরোধের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।