RG Kar: তিলোত্তমার চেস্ট মেডিসিন বিভাগেই ওষুধ কেনায় গরমিলের ইঙ্গিত!
RG Kar Medical: ২০২৩ এপ্রিল থেকে-২০২৪ মার্চের মধ্যে চেস্ট মেডিসিনের বিভাগীয় প্রধান ছিলেন সুস্মিতা কুণ্ডু। ক্যামেরার সামনে তিনি কিছু বলতে নারাজ। অফ ক্যামেরা তাঁর প্রতিক্রিয়া, “আমরা চিকিৎসকেরা প্রেসক্রিপশনে ওষুধের নাম লিখি। রোগী কোথা থেকে কী ওষুধ পাচ্ছেন তা আমাদের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে না।”
স্বাস্থ্য ভবন অনুমোদিত সংস্থার কাছ থেকে ওষুধ কেনা হয়নি বলে অভিযোগ উঠছে। বদলে রিষড়ার এক ওষুধ সরবরাহকারী সংস্থার কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকার ওষুধ ক্রয় করা হয় বলে খবর। স্বাস্থ্য ভবনের তালিকার বাইরে ২০২৩-২৪ আর্থিক বছরে ২ কোটি ৪ লক্ষ টাকার ওষুধ কিনেছে আরজি কর, সূত্র মারফত উঠে আসছে এই তথ্যও।
স্বাস্থ্য ভবন সূত্রে খবর, ২ কোটি ৪ লক্ষের মধ্যে রিষড়ার সংস্থাকেই শুধু ৬০ লক্ষ টাকার বরাত দেওয়া হয়েছে। তিলোত্তমার বিভাগে ইনহেলার সরবরাহেও রিষড়ার সংস্থার দাপট লক্ষ্য করা যাচ্ছে। স্বাস্থ্য ভবন স্বীকৃত সংস্থার কাছ থেকে কেন নামমাত্র ইনহেলার ক্রয় করা হল আরজি করে, চিকিৎসকরাই এ প্রশ্ন তুলছেন।
এসএসকেএম, এনআরএস, কলকাতা মেডিক্যাল, ন্যাশনালের তুলনায় আরজি করে ওষুধ ক্রয়ে ভিন্ন ব্যবস্থা কেন? টিভি নাইনের হাতে আসা চাঞ্চল্যকর তথ্যে উঠছে প্রশ্ন। পরিকাঠামো, রোগীর চাপে শহরের অন্য চার মেডিক্যাল কলেজের মতোই আরজি কর।
অথচ স্বাস্থ্য ভবন অনুমোদিত সংস্থাকে নামমাত্র ইনহেলার সরবরাহের বরাত দিয়েছে সন্দীপ ঘোষের নিয়ন্ত্রণে থাকা আরজি করের প্রশাসন, এমনই অভিযোগ। তিলোত্তমা নিজেও চেস্ট মেডিসিনের পিজিটি ছিলেন। সেই বিভাগে স্বাস্থ্য ভবনকে এড়িয়ে রিষড়ার সংস্থাকে লক্ষ লক্ষ টাকার ওষুধ সরবরাহের বরাত দেওয়ার কারণ কী? গুণমানে উত্তীর্ণ হওয়ার পরই স্বাস্থ্য ভবনের তালিকাভুক্ত হয় কোনও ওষুধ। সেই তালিকা থেকে কেন চেস্ট মেডিসিনে ব্যবহৃত ওষুধ কিনল না স্বাস্থ্য ভবন? ওষুধ সরবরাহে ঘাটতি থাকলে অন্য মেডিক্যাল কলেজ কীভাবে ইনহেলার ক্রয়ে অগ্রাধিকার পেল স্বাস্থ্য ভবনের অনুমোদিত সংস্থা?
অনুমোদিত সংস্থা থেকে কোন হাসপাতালে কত ইনহেলার ক্রয়-
এসএসকেএম: ৪৯ লক্ষ ৫৬ হাজার ৬৭২
ন্যাশনাল: ৪৩ লক্ষ ৯৯ হাজার ৩৬০
এনআরএস: ২৮ লক্ষ ৭৩ হাজার ২০০
কলকাতা মেডিক্যাল: ১১ লক্ষ ৩৬ হাজার ৪২০
আরজি কর: ৪ লক্ষ ৯৮ হাজার ২৮৮
(সময়কাল: ২০২৩ এপ্রিল-২০২৪ মার্চ)
*সূত্র: স্বাস্থ্য দফতর*
কেউ ৪০ লক্ষের উপরে, কেউ আবার ২৮ লক্ষের উপরে ইনহেলার কিনেছে স্বাস্থ্য ভবনের অনুমোদিত সংস্থা থেকে। সেখানে আরজি করে কেনা হয়েছে মাত্র ৪ লক্ষ! ২০২৩ এপ্রিল থেকে-২০২৪ মার্চের মধ্যে চেস্ট মেডিসিনের বিভাগীয় প্রধান ছিলেন সুস্মিতা কুণ্ডু। ক্যামেরার সামনে তিনি কিছু বলতে নারাজ। অফ ক্যামেরা তাঁর প্রতিক্রিয়া, “আমরা চিকিৎসকেরা প্রেসক্রিপশনে ওষুধের নাম লিখি। রোগী কোথা থেকে কী ওষুধ পাচ্ছেন তা আমাদের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে না।”
যে সংস্থার কাছ থেকে ইনহেলার ক্রয়ের অভিযোগ উঠছে, তার কর্ণধার অনুপ মণ্ডলের দাবি, “গত বছর ৩০ লক্ষ টাকার জিনিস দিয়েছি। চেস্ট মেডিসিনের সঙ্গে আমার কাজ না। স্টোর থেকে যা অর্ডার করে তাই দিই। চেস্টে লাগে মাল্টি ভিটামিন ইনজেকশন দিই আমি। টেন্ডারে যে কম দর হাঁকে সেই জিনিস দেয়। আমি কম দর হেঁকে পেয়েছি, সেটা কি আমার অপরাধ?”
যদিও চিকিৎসক রঞ্জন ভট্টাচার্য মনে করিয়ে দিয়েছেন, রিষড়া হুগলি জেলায়। যে হুগলি জেলা থেকেই আবার পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলের সভাপতিও আছেন। তিনি আবার শ্রীরামপুরের বিধায়কও। রঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, “ইডি, সিবিআইয়ের সবটাই খতিয়ে দেখা উচিত। এই ক্রয়ের দুর্নীতির কথা তিলোত্তমা জানতে পারায় চরম পরিণতি হল কি না।”