কলকাতা: রাজ্য সভাপতির দায়িত্ব পেয়েই মঙ্গলবার সকালে কলকাতায় পৌঁছলেন বিজেপি সাংসদ সুকান্ত মজুমদার (Sukanta Majumdar)। শহরে নেমেই নব মনোনীত রাজ্য সভাপতির ঘোষণা, ‘সমগ্র পশ্চিমবঙ্গকে আমি একসঙ্গে দেখতে চাই। এখানে উত্তরবঙ্গ, দক্ষিণবঙ্গের কোনও ভেদাভেদ নেই। আলাদা করে উত্তরবঙ্গ, দক্ষিণবঙ্গ কিছু হয় না।’ একই সঙ্গে ভবানীপুর উপনির্বাচন নিয়ে সুকান্ত মজুমদারের প্রতিক্রিয়া, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আরও একবার হারের স্বাদ দিতে সবরকম চেষ্টা করবে বিজেপি।
উচ্চশিক্ষিত-অধ্যাপক, মৃদুভাষী সুকান্ত মজুমদারকেই নতুন রাজ্য সভাপতি হিসাবে বেছে নিয়েছে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। রাজনীতিতে সুকান্তর সফর খুব একটা দীর্ঘ নয় ঠিকই। তবে ইতিমধ্যেই উত্তরবঙ্গে নিজের একটা আলাদা পরিচিতি তৈরি করেছেন তিনি। গত কয়েকদিন ধরে শোনা যাচ্ছিল, এবার বিজেপির রাজ্য সভাপতি বদল হবে। একাধিক নামও উঠে আসে জল্পনায়। সোমবারই সমস্ত জল্পনার অবসান ঘটিয়ে দিল্লি থেকে জানানো হয় এবার বাংলা সামলানোর ভার সংঘ পরিবার থেকে উঠে আসা বালুরঘাটের সাংসদ সুকান্ত মজুমদারের উপরই দিতে চায় দল।
নতুন রাজ্য সভাপতি মনোনীত হওয়ার পর মঙ্গলবার সকালেই উত্তরবঙ্গ থেকে কলকাতা আসেন তিনি। কলকাতা স্টেশনে নেমেই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে সুকান্ত মজুমদার বলেন, বিজেপি সেই সংগঠন যারা একটা নির্দিষ্ট নিয়ম নীতি মেনে চলে। ভারতীয় জনতা পার্টি যে ভাবে সংগঠন চালায়, তা নজির। তাই এই সংগঠন নিয়ে নতুন করে তাঁর ভাবনা চিন্তার কোনও প্রয়োজন নেই। নতুন রাজ্য সভাপতির মতে, এখন সংগঠন চালানোর লড়াই নয়, পশ্চিমবঙ্গকে বাঁচানোর লড়াই করতে হবে।
তালিবানি শাসন চলছে বাংলায়
বিজেপির নতুন রাজ্য সভাপতির মতে তালিবানি শাসন চলছে বাংলায়। সুকান্ত মজুমদার বলেন, “রাজ্যে তালিবানি শাসন চলছে। গত বেশ কয়েক বছর ধরে এটা চলছে। এটা আটকানোই আমাদের প্রথম চ্যালেঞ্জ।”
প্রসঙ্গ উপনির্বাচন
সুকান্ত মজুমদার বিজেপির রাজ্য সভাপতি হওয়ার এক সপ্তাহ পরই সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ উপনির্বাচন, ভবানীপুরে। সুকান্ত মজুমদারের কথায়, “আমাদের যাঁরা নেতৃত্ব রয়েছে, শুভেন্দুদা, দিলীপদা তাঁরা আগে থেকেই লেগে রয়েছেন এই ভোট নিয়ে। আগামিদিনে আমি তাঁদের সঙ্গেই যুক্ত হব। আরও শক্তি বাড়বে আশা করি। আমরা চেষ্টা করব মাননীয়া মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আরও একবার হারের স্বাদ দিতে।”
পশ্চিমবঙ্গ একটাই
গত কয়েকদিন আগেও বিজেপি সাংসদ জন বার্লার ‘বঙ্গভঙ্গ’ বিতর্ক অস্বস্তিতে ফেলেছে দলকে। যদিও বাংলা একটাই বলে বিশ্বাস করেন নতুন রাজ্য সভাপতি। সুকান্ত মজুমদারের মতে, “আমি পশ্চিমবঙ্গ বিজেপির রাজ্য সভাপতি। উত্তরবঙ্গ-দক্ষিণবঙ্গ এরকম কোনও বিভেদ রয়েছে বলে আমার মনে হয় না। সমগ্র পশ্চিমবঙ্গকে শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে তৎকালীন বুদ্ধিজীবী মহল এই বাংলাকে তৈরি করেছিলেন। সমগ্র পশ্চিমবঙ্গকে আমি একসঙ্গে দেখতে চাই। আলাদা করে উত্তরবঙ্গ দক্ষিণবঙ্গ কিছু হয় না।”
বাবুল থাকলে সুরেলা লড়াই হতো
বাবুল সুপ্রিয়র দলত্যাগ প্রসঙ্গে সুকান্ত মজুমদার বলেন, “বাবুলদা আমাদের নেতা ছিলেন। উনি কেন গিয়েছেন তা উনিই বলতে পারবেন। থাকলে ভাল হতো। লড়াই করেছি, আরও লড়াই একসঙ্গে করতে পারতাম। সুরেলা লড়াই হতো।”
আরও পড়ুন: Anandapur: তুমুল বৃষ্টিতে পুকুর-রাস্তা মিলেমিশে একাকার! তিন ‘মদ্যপ’ যাত্রী নিয়ে গাড়ি পড়ল জলে