Newtown: অর্ধেক পোশাক নেই মেয়েটির শরীরে, কম্বলের ফাঁক দিয়ে বেরিয়ে ছেলের মুখ! মাকে প্রশ্ন করতেই…

Body Recover: ষাটোর্ধ্ব ওই মহিলার নাম মালা কুঞ্জ। নিউটাউনের আবাসনে ছেলে ও মেয়ে নিয়ে থাকতেন তিনি।

Newtown: অর্ধেক পোশাক নেই মেয়েটির শরীরে, কম্বলের ফাঁক দিয়ে বেরিয়ে ছেলের মুখ! মাকে প্রশ্ন করতেই...
নিউটাউনে চাঞ্চল্যকর ঘটনা। নিজস্ব চিত্র।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Mar 01, 2022 | 7:58 PM

কলকাতা: মহিলার আচরণ খুব একটা স্বাভাবিক নয় বলছেন প্রতিবেশীরা। কিন্তু তা বলে ছেলে-মেয়ের মৃতদেহ আগলে যে বসে থাকতে পারেন, এ কথা ভাবলেই শিউরে উঠছেন আবাসনের অন্যান্য বাসিন্দারা। নিউটাউনের সিডি ব্লকে এই ঘটনা ঘিরে মঙ্গলবার সকাল থেকে উত্তেজনা ছড়ায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছয় নিউটাউন থানার পুলিশ। জানা গিয়েছে, সিডি ব্লকের এই আবাসনে ২০২০ সাল থেকে ভাড়া থাকে পরিবারটি। আটতলার একটি ঘরে ছেলে-মেয়েকে নিয়ে থাকেন মা। মঙ্গলবার সকালে হঠাৎই দরজার সামনে দাঁড়িয়ে চিৎকার করে পড়ে যান তিনি। এরপরই প্রতিবেশীরা গিয়ে দেখেন ঘর থেকে বোঁটকা গন্ধ বের হচ্ছে। তখনও কেউ বুঝতে পারেননি ঘরের ভিতর দু’টি লাশ পড়ে রয়েছে। সন্দেহ হতেই খবর দেওয়া হয় পুলিশে। পুলিশ এসে দেখে ঘরের ভিতর খাটে দু’টি দেহ পড়ে রয়েছে। মেয়েটির শরীরের অর্ধেক অংশে পোশাক নেই। ছেলেটির শরীর কম্বলে ঢাকা।

ষাটোর্ধ্ব ওই মহিলার নাম মালা কুঞ্জ। নিউটাউনের আবাসনে ছেলে ও মেয়ে নিয়ে থাকতেন তিনি। আবাসনের লোকজন জানান, প্রতিবেশীদের সঙ্গে খুব একটা কথাবার্তা বলত না পরিবারের কেউই। এই আবাসনের পরিচারিকা হীরা বৈরাগীর কথায়, “ওই মহিলা কেমন যেন একটা। দেখে সুস্থ মনে হয় না। আমি এখানে নীচে ঝাড়পোছ করি। ময়লা ফেলি। ওনার ফ্ল্যাটে বেল বাজিয়েছি। উনি আমার কাছ থেকে ফোনটা চেয়ে নিলেন। তারপর আর ফোনটা দিচ্ছেন না। বলছেন টাকা দেবেন আমাকে, কিন্তু ফোনটা দেবেন না। আমাকে নতুন ফোন কিনে নিতে বলছেন। সিকিউরিটি দাদাকে বললাম। তারপর উনি কায়দা করে ফোনটা ফিরিয়ে দিলেন। উনি কোনও দিনই গেট খোলেন না।”

হীরার কথায়, “প্রথম দিকে এরা এরকম ছিল না। ধীরে ধীরে কেমন যেন পাগলের মতো আচরণ করা শুরু করে দিল। ওই মহিলার স্বামী নেই। মেয়েটা বোধহয় অফিসে কাজ করত। লকডাউনে ঘরে থেকে থেকে কেমন হয়ে গিয়েছে। এরপর থেকেই গেট খোলে না, কারও সঙ্গে মেশে না, খাওয়া দাওয়াও করে না বোধহয়।”

এদিন পুলিশ এসে মৃতদেহ দু’টি উদ্ধার করে নিয়ে যায়। একইসঙ্গে মালা কুঞ্জকেও হাসপাতালে ভর্তি করানোর ব্যবস্থা করা হয়। যদিও কোনওভাবেই তিনি প্রথম থেকে অ্যাম্বুলেন্সে উঠতে রাজি হচ্ছিলেন না। বারবারই দাবি করেন, তিনি সুস্থ। তাঁর ঘরের চাবি যেন তাঁকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়।

সোসাইটির অ্যাডভোকেট সমিত মণ্ডলের কথায়, ২০২০ সালের ডিসেম্বরে এই আবাসনে আসে কুঞ্জ পরিবার। সমিত জানান, ২০২১ সালের মে মাসে তাঁকে জানানো হয় প্রায় দু’ মাস ঘরে দরজা বন্ধ করে বসে আছে তিনজন। এরপরই তিনি নিউটাউন থানায় বিষয়টি জানান। পুলিশ এসেছিল সে সময়। ঘরে মা, মেয়ে ও ছেলে ছিলেন। সমিত মণ্ডলের দাবি, দেখে সন্দেহ হচ্ছিল। মনে হচ্ছিল, কোনও ওষুধ খেয়ে রয়েছেন তাঁরা। ঘরের ভিতর বাজে গন্ধও বের হচ্ছিল। খাটের চারপাশে ওষুধ ছড়ানো ছিল। তখনই বলা হয়েছিল সবসময় দরজা জানলা খুলে রাখুন।

সমিত মণ্ডলের কথায়, “গত শনিবার ওই মালা কুঞ্জ হেল্প হেল্প করে চিৎকার করতে থাকেন। এরপর সকলে ছুটে গেলে উনি আবার দরজা বন্ধও করে দেন। নিউটাউন থানার পুলিশও আসে। কিন্তু তারাও দেড় ঘণ্টার চেষ্টায় দরজা খোলাতে পারেনি। তারা ফিরে যায়। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ জানতে পারি ঘর থেকে বেরিয়ে উনি সিঁড়ির সামনে পড়ে যান। তারপর নিউটাউন থানায় খবর দিই। অফিসাররা ঘরে ঢুকে দেখেন বিছানায় দু’টি দেহ পড়ে রয়েছে। পুলিশ যা বলছে চার পাঁচদিনের পুরনো দেহ হতে পারে।” কীভাবে এই ঘটনা ঘটল, নেপথ্যে কী লুকিয়ে সবটাই তদন্ত সাপেক্ষ, জানিয়েছে পুলিশ।

আরও পড়ুন: TMC Meeting: সামনে পঞ্চায়েত! আগামী সপ্তাহেই তৃণমূল স্তরে খোলনলচে বদলাতে পারেন মমতা