TMC Meeting: সামনে পঞ্চায়েত! আগামী সপ্তাহেই তৃণমূল স্তরে খোলনলচে বদলাতে পারেন মমতা
Trinamool Congress: সূত্রের খবর, এরপর ধাপে ধাপে সাজানো হবে জেলা ও ব্লক কমিটি।
কলকাতা: দীর্ঘদিন ধরে আটকে থাকা পুরভোট অবশেষে হল। বুধবারই ফলপ্রকাশ। এরপর নিঃসন্দেহে বড় ভোট ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত নির্বাচন। সে ভোট মিটতে না মিটতেই আসছে লোকসভা ভোট। একুশ থেকে পর পর চার বছর ব্যাক টু ব্যাক নির্বাচন। তৃণমূল নেতৃত্ব জানে, এই সময় সুসংবদ্ধ, চাঙ্গা সংগঠন না থাকলে লড়াইয়ে বেগ পেতে হবে। সে যতই শাসকদল হোক না কেন। তাই পুরভোট পর্ব মিটতেই রাজ্য কমিটি সাজিয়ে ফেলতে চলেছে তৃণমূল কংগ্রেস। সূত্রের খবর, এরপর ধাপে ধাপে সাজানো হবে জেলা ও ব্লক কমিটি। রাজনৈতিক মহলের মতে, একুশের ভোট কিংবা পুরভোটের ক্ষেত্রে যথেষ্ট বিশৃঙ্খলার মধ্যে দিয়েই যেতে হয়েছে দলকে। একদিকে প্রার্থীদের নিয়ে যেমন ক্ষোভ বিক্ষোভ সামনে এসেছে, একইভাবে দলের শীর্ষ নেতৃত্বের মধ্যেও কোন্দলের আভাস মিলেছে। এই ধরনের পরিস্থিতি দলকে বিড়ম্বনা ছাড়া যে আর কিছুই দেয় না, তা বুঝেছেন শীর্ষ নেতারাও। তৃণমূল সুপ্রিমো নিজে বলেছেন, যেহেতু সংগঠনটা বাংলা থেকে তৈরি হয়েছে তাই বাংলাটাও তিনিই দেখবেন। এ বার্তা যে কতটা তাৎপর্যপূর্ণ জাতীয় কর্মসমিতি ঘোষণার পরই তা টের পাওয়া গিয়েছে।
চলতি মাসেই জাতীয় স্তরের কমিটিতে সহ সভাপতির সংখ্যা তিন থেকে বাড়িয়ে চার করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ধাপে ধাপে রাজ্য স্তরেও বাকি কমিটি গঠন করে দেওয়া হবে। এর পাশাপাশি বিভিন্ন যে শাখা সংগঠনগুলি রয়েছে সেগুলিকেও খোলনলচে সাজানোর পরিকল্পনা রয়েছে বলে সূত্রের খবর। তৃণমূলের মূল লক্ষ্য বুঝিয়ে দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার শুধু সংগঠন গড়ে তোলাই নয়। একেবারে তৃণমূল স্তর অবধি দলের আদর্শও পৌঁছে দিতে হবে। বারবারই তিনি বলেছেন, এই দল সকলের। কাউকে দূরে সরিয়ে রাখা নয়। সকলকে আপন করে নিতে হবে। এই বার্তা সকল স্তরেই দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। দলীয় সূত্রে খবর, এই কাজ সমাপ্ত হলে ধাপে ধাপে জেলা ও ব্লক কমিটিও সাজিয়ে ফেলা হবে।
জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠকে ইতিমধ্যেই বিভিন্ন পদাধিকারীর নাম ঘোষণা হয়ে গিয়েছে। নবীন-প্রবীণ মিলিয়ে ঘোষণা করে দেওয়া হয়েছে জাতীয় স্তরের কমিটি। এবার শীঘ্রই রাজ্য কমিটি গড়ে দিতে চলেছেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সূত্রের খবর, আগামী ৮ মার্চ তিনি বৈঠক করবেন রাজ্য কমিটি নিয়ে। এমনও হতে পারে, দোলের আগেই এই রাজ্য কমিটি ঘোষণা করা হল। সূত্রের দাবি, সেই রাজ্য কমিটির বৈঠক থেকেই শাখা সংগঠনগুলিরও নতুন কমিটি ঘোষণা হতে পারে। পাশাপাশি রাজ্যজুড়ে পুরসভাগুলির চেয়ারম্যানের নামও ঘোষণা করা হতে পারে। যদিও শোনা যাচ্ছে, চেয়ারম্যানের নাম ঘোষণার আগে স্থানীয় জেলা নেতৃত্ব ও সংশ্লিষ্ট বিধানসভা এলাকার বিধায়কের সঙ্গে আলোচনা করা হতে পারে।
তৃণমূল সূত্রে খবর, জাতীয় স্তরের কমিটিতে যেমন সিনিয়র-জুনিয়র ভারসাম্য বজায় রেখে চলা হচ্ছে। তেমনি নবীন-প্রবীণ যাতে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে চলতে পারেন, সে ভাবেই রাজ্য কমিটি সাজানো হবে। দলীয় সূত্রে খবর, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠকে বলেছেন, নবীনদের সবসময়ই স্বাগত। কিন্তু কখনওই ভুললে চলবে না, ‘ওল্ড ইজ অলওয়েজ গোল্ড’। তাই ধরে নেওয়া হচ্ছে রাজ্য কমিটিতেও সেই ছাপ থাকবে। সূত্রের খবর, সমস্ত কমিটি যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তৈরি করে নতুন উদ্যমে আগামী দু’টি ভোটের জন্য প্রস্তুতি শুরু করবে শাসকদল। সূত্রের খবর, দল শুধু বহরে বাড়ানোই তৃণমূলের একমাত্র লক্ষ্য নয়। একইসঙ্গে সকলে মিলেমিশে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে যাতে কাজ করেন সে বার্তাই সকলের সামনে রাখছেন দলের সুপ্রিমো।