কলকাতা: আরজিকর (RG Kar Hospital) নিয়ে স্বাস্থ্য ভবনে ঘণ্টাদুয়েকের বৈঠক। আর তারপরই চমক। প্রত্যাশা সত্ত্বেও ঘটে গেল অপ্রত্যাশিত ঘটনা। আরজিকর হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান করা হল নির্মল মাজি (Nirmal Maji) ঘনিষ্ঠ সুদীপ্ত রায়কে। যদিও এই হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান শান্তনু সেন হতে পারেন বলেই প্রাথমিকভাবে জল্পনা ছিল। কিন্ত এ দিনের বৈঠকের পর সবটাই কার্যত উলটেপালটে গেল। ৭২ ঘণ্টা আগে এনআরএস (NRS Hospital) হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান হওয়া সেই সুদীপ্ত রায়কেই আরজিকর হাসপাতালেও একই জায়গা দেওয়া হল।
তবে এই নিয়োগের পিছনেও বিগত কয়েকদিন ধরে শিরোনামে থাকা উত্তরবঙ্গ লবির হাত রয়েছে বলে খবর। যদিও বৈঠক শেষে লবিবাজির কথা অস্বীকার করেছেন নির্মল মাজি। অধ্যক্ষের আচরণ নিয়ে যে অভিযোগ রয়েছে, তা ঠিক নয় বলে জানিয়েছেন রোগী কল্যাণ সমিতির নতুন চেয়ারম্যান সুদীপ্ত রায়। চিকিৎসক পড়ুয়াদের সঙ্গে বৈঠক করে দ্রুত জটিলতা কাটার ব্যাপারে আশাপ্রকাশ করেছেন স্থানীয় বিধায়ক অতীন ঘোষও।
বিষ্যুদবার স্বাস্থ্য সচিব নারায়ণ স্বরূপ নিগমের সঙ্গে প্রথমে বৈঠক করেন নির্মল মাজি, সুদীপ্ত রায় ও অতীন ঘোষ। এই বৈঠকের ঘণ্টাখানেক পরে স্বাস্থ্য ভবনে যান শান্তনু সেন। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই স্বাস্থ্যভবনে পৌঁছন আরজিকর হাসপাতালের অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ। তাঁরই পদত্যাগের দাবিতে গত ৪৮ ঘণ্টা ধরে কার্যত উত্তাল হয়ে রয়েছে আরজিকর হাসপাতাল। সেই অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ স্বাস্থ্যভবনে পৌঁছন।
এই বৈঠকের শেষেই বিকেল ৫ টা নাগাদ স্বাস্থ্য ভবনের তরফে বিজ্ঞপ্তি জারি করে সুদীপ্ত রায়ের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান পদে অভিষেক হয়। অধুনা নির্মল মাজি ঘনিষ্ঠ সুদীপ্তবাবুর অভিষেকের পিছনেও উত্তরবঙ্গ লবির হাত রয়েছে বলে খবর। যদিও নির্মলবাবু সেই সমস্ত অভিযোগ খারিজ করেছেন। তবে আরজিকর হাসপাতালে গত দু’দিন ধরে অধ্যক্ষের পদত্যাগের দাবি যে আন্দোলন চলছিল, এবং তার জেরে যে ধরনের জটিলতা সৃষ্টি হয়, তার নির্যাস যেন বিতর্কের অবকাশ জিইয়ে রাখল।
আরও পড়ুন: ভোট পরবর্তী হিংসা: কলকাতার অবস্থা ভয়ঙ্কর, ২০ কো-অর্ডিনেটরের বিরুদ্ধে FIR চেয়ে আবেদন হাইকোর্টে
উল্লেখ্য়, গত পরশুই এনআরএস-এর রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান পদ থেকে শান্তনু সেনকে সরিয়ে দেওয়া হয়। যেই জায়গায় আসেন সুদীপ্ত রায়। তাই মনে করা হচ্ছিল, এনআরএস-এর রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান হিসেবে শান্তনু সেনকেই আনা হতে পারে। কিন্তু আজকের বৈঠকের পর সে সমস্ত জল্পনায় জল পড়ে গেল বলা চলে। বস্তুত, অধ্যক্ষের পদত্যাগের দাবিতে তলা আন্দোলনের কারণেই গোটা পরিস্থিতি আমূল বদলে গেল বলে মনে করা হচ্ছে। সন্দীপ ঘোষ এবং অতীন ঘোষ দুজনেই আশ্বাস দিয়েছেন, প্রতিবাদী ডাক্তারি পড়ুয়াদের সঙ্গে তাঁরা আলোচনায় বসবেন যাতে জটিলতা দ্রুত কেটে যায়।
আরও পড়ুন: শুরুর আগেই ধাক্কা! মমতার স্বপ্নের প্রকল্প ‘দুয়ারে রেশন’-এর বিরুদ্ধে হাইকোর্টে ডিলাররা