নয়া দিল্লি : মোদী সরকারের ঘোষণা করা পদ্ম সম্মানের তালিকায় নাম থাকলেও পদ্মভূষণ (Padma Bhushan) প্রত্যাখ্যান করেছেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য (Buddhadeb Bhattacharya)। বিবৃতি দিয়ে তিনি জানিয়েছেন, পদ্ম সম্মানের বিষয়ে তাঁকে কিছু জানানো হয়নি। প্রশ্ন উঠেছে, তবে কি কেন্দ্রের তরফে কিছু জানানো হয়নি বুদ্ধবাবুকে? কেন্দ্রীয় সরকারি সূত্রে দাবি করা হয়েছে, অন্যান্য পুরস্কার প্রাপকদের মতো ফোন করা হয়েছিল বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকেও। তিনি শারীরিকভাবে অসুস্থ থাকায় কথা হয় তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে। সামাজিক ক্ষেত্রে অসামান্য অবদানের জন্য তাঁকে এই পুরস্কার দেওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়।
কেন্দ্রীয় সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্মান ঘোষণার আগে নিয়ম মাফিক স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের একজন উচ্চ পদস্থ আধিকারিক বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে ফোন করেন। বুদ্ধবাবু অসুস্থ থাকায় ফোনে কথা বলেন তাঁর স্ত্রী মীরা ভট্টাচার্য। নিয়ম মতো, কেউ পদ্ম পুরস্কার নিতে চান কি না তা জিজ্ঞেস করা হয় না, শুধুমাত্র জানানো হয়। এ ক্ষেত্রে যখন পুরস্কারের কথা জানানো হয়েছিল, মীরাদেবী নেতিবাচক কিছু বলেননি বলেই দাবি কেন্দ্রের। সেই আধিকারিক অভিনন্দন জানিয়ে ফোন রেখে দেন।
উল্লেখ্য, পদ্ম পুরস্কারের প্রত্যেক প্রাপককেই এ ভাবে উচ্চ পদস্থ আধিকারিকেরা ফোন করেন। সাধারণত কেউ পুরস্কার গ্রহণ করতে না চাইলে তখনই জানিয়ে দেন।
মঙ্গলবার প্রজাতন্ত্র দিবসের প্রাক-সন্ধেয় পুরস্কার ঘোষণার কিছুক্ষণের মধ্যেই তা প্রত্যাখ্যান করার কথা জানান বুদ্ধবাবু। বিবৃতিতে তিনি জানান, তাঁকে এই নিয়ে কেউ কিছু বলেনি। তাঁর বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘পদ্মভূষণ পুরস্কার নিয়ে আমি কিছুই জানি না। আমাকে এই নিয়ে কেউ কিছু বলেনি। যদি আমাকে পদ্মভূষণ পুরস্কার দিয়ে থাকে তাহলে আমি তা প্রত্যাখ্যান করছি।’
সিপিএমের তরফে বুদ্ধবাবুর পুরস্কার প্রত্যাখ্যানের বিষয়টি সোশ্যাল মিডিয়ায় জানানো হয়। ফেসবুক হ্যান্ডেলে বলা হয়, ‘সিপিআই(এম)-এর নীতি রাষ্ট্র থেকে এই ধরনের পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করার ক্ষেত্রে সামঞ্জস্যপূর্ণ। আমাদের কাজ জনগণের জন্য, পুরস্কারের জন্য নয়।’ একই কথা বলেন বর্ষীয়ান বাম নেতারাও। প্রত্যেকেই আর এক প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসুর কথা উল্লেখ করেছেন। ভারতরত্ন প্রত্যাখ্যান করেছিলেন জ্যোতি বসু। সেই পথে হেঁটেই প্রত্যাখ্যান বুদ্ধবাবুর।
বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের নাম পুরস্কার প্রাপকের তালিকায় থাকায়, বিজেপির কেন্দ্রীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেছিলেন, ‘যোগ্য ব্যক্তিকে সম্মান দেওয়া হয়েছে।’ কিন্তু সেই পুরস্কার প্রত্যাখ্যানের বিষয়টি ভালো চোখে দেখেননি দিলীপ ঘোষ। তিনি বলেন, ‘সিপিএম কোনওদিনই পরম্পরা বজায় রাখেনি। কমিউনিস্টরা চিরকাল দেশের সংস্কৃতিকে অপমান করেই এসেছে। তাই পুরস্কার না নেওয়াও সেই অপমানেরই পরিচয়।’