কলকাতা: তৃতীয় ঢেউয়ের দোরগোড়ায় রাজ্য। কলকাতায় মিলছে গোষ্ঠী সংক্রমণের ইঙ্গিত। ইতিমধ্যেই জেলায় জেলায় সতর্কবার্তা দিয়েছে স্বাস্থ্যভবন। প্রকাশ্যে আসছে একের পর এক বিস্ফোরক তথ্য। এক সপ্তাহের মধ্যেই একেবারে চূড়ায় পৌঁছেছে সংক্রমণ। দৈনিক সংক্রমণের আশঙ্কা ৩০-৩৫ হাজার। এমনটাই আশঙ্কা করছে স্বাস্থ্য় দফতর। নমুনা পরীক্ষার হারেও বিপদ বার্তা দিয়েছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর। স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা জানাচ্ছেন, বেসরকারি ল্যাবে অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পেয়েছে টেস্ট। হাতে আসা তথ্য নতুন করে ভয় ধরাচ্ছে মনে।
সংক্রমণের তৃতীয় ঢেউ নিয়ে আর গা ছাড়া মনোভাব দেখানোর কোনও জায়গা নেই, এমনটাই বলছেন স্বাস্থ্য় দফতরের অধিকর্তারা। স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা প্রতিদিনের তথ্য খতিয়ে দেখে একটি অভ্যন্তরিণ বিশ্লেষণ করেছেন। জেলাগুলিকে ইতিমধ্যেই তৃতীয় ঢেউ নিয়ে সতর্কবার্তা জারি করেছেন স্বাস্থ্য অধিকর্তারা। দৈনিক করোনা বুলেটিনে যে তথ্য সামনে আসছে, তার থেকে পরিস্থিতি আরও ভয়ঙ্কর বলে দাবি করছেন স্বাস্থ্য কর্তারা।
তবে একটা বিষয় মাথায় রাখতে হবে, ভয় দেখানো কিংবা আতঙ্কিত করার জন্য নয়, কিন্তু বেশ কিছু তথ্য সামনে এসেছে, যা সচেতন হওয়ার জন্য যথেষ্ট।
উঠে আসা কয়েকটি বিস্ফোরক তথ্য
প্রথম তথ্য.. তৃতীয় ঢেউ আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে রাজ্যে আছড়ে পড়তে চলেছে। এমনটাই আশঙ্কা করছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর। রাজ্য স্বাস্থ্যভবনের কর্তাদের বিশ্লেষণ, প্রত্যেকদিন দ্বিগুণ হারে বাড়ছে সংক্রমণ। সংক্রমণের গ্রাফচিত্র ক্রমেই উর্ধ্বমুখী।
দ্বিতীয় তথ্য... কলকাতায় গোষ্ঠী সংক্রমণের ইঙ্গিত স্পষ্ট। পাঁচ জনের মধ্যে চার জনের লোকাল নমুনা পরীক্ষায় ওমিক্রমণের সংক্রমণ স্পষ্ট। কলকাতায় টেস্ট ও পজিটিভিটি রেট সমান হারে বাড়ছে।
তৃতীয় তথ্য… প্রথম ঢেউয়ে অক্টোবরে পিক ছিল চার হাজার। দ্বিতীয় ঢেউয়ে ২০-২৫ হাজার দৈনিক সংক্রমণ আমরা দেখেছিলাম। তৃতীয় ঢেউয়ে দৈনিক সংক্রমণ ৩০-৩৫ হাজার পর্যন্ত হতে পারে। এমনটাই আশঙ্কা স্বাস্থ্য কর্তাদের।
রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের স্পষ্ট বার্তা, ‘কোভিড নিয়ে কথা হোক’। সাধারণ মানুষের কাছে স্বাস্থ্য ভবনের আবেদন, ‘কোভিড নিয়ে কথা হোক…’ এখন যা পরিস্থিতিতে, তাতে পিকনিক, বর্ষবরণ আর কিচ্ছু নয়, শুধু কথা হোক কোভিড নিয়েই! হাতে সময় এক সপ্তাহ। দৈনিক যদি ৩০-৩৫ হাজার সংক্রমণ হয়, তাহলে প্রস্তুতি নেওয়ার মতো সময়ই নেই রাজ্যের হাতে। যুব্ধকালীন তৎপরতায় হাসপাতাল, সেফ হোমগুলিকে তৈরি থাকার বার্তা দেওয়া হয়েছে। সরকারি স্বাস্থ্য আধিকারিকদেরও প্রস্তুত থাকার বার্তা দিয়েছে স্বাস্থ্য়ভবন। তৈরি হয়েছে ইন্টারন্যাল অ্যাসেসমেন্ট।
হোয়াটসঅ্যাপের বিভিন্ন গ্রুপে জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিকদের সচেতনতার বার্তা দেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্য দফতরের শীর্ষ কর্তাদের তরফে এই সতর্কবার্তা জারি করা হয়েছে। সেখানে স্পষ্ট বলা হয়েছে. প্রাইভেট ল্যাবগুলিতে নমুনা পরীক্ষার হার সরলরেখা বরাবর শীর্ষের দিকে এগোচ্ছে। সেদিক থেকে সরকারি ল্যাবগুলিতে নমুনা পরীক্ষা কার্যত হচ্ছে না বলেই অভিযোগ। সেক্ষেত্রে সরকারি ল্যাবগুলিকে নমুনা পরীক্ষা দ্বিগুণ-তিন গুণ করতে বলা হয়েছে। আরটিপিসিআর করার কথা বলেছেন রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকরা।
বিশেষ করে ছটি জেলাকে দেখানো হয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে পজিটিভিটি রেট কত বেশি আর নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা কত কম! উগ্বেগের এই ৬ জেলা হল বাঁকুড়া, বীরভূম, উত্তর দিনাজপুর, মালদা, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার। স্বাস্থ্যকর্মীরা যাতে কোনওভাবে আক্রান্ত না হন, সেদিকে লক্ষ্য রাখতে বলা হয়েছে। একইসঙ্গে বলা হচ্ছে, সমস্ত সরকারি হাসপাতালের বহির্বিভাগ ও জরুরি বিভাগে কোভিড টেস্ট করা বাধ্যতামূলক।
আরও পড়ুন: Weather Update: ক’দিন টানা বর্ষণ, আপনার জেলায় কবে বৃষ্টি জেনে নিন…