Online Education: বাংলায় ৪০ শতাংশ পড়ুয়ার বাড়িতেই নেই মোবাইল, পড়াশোনার সুযোগ পাচ্ছে ক’জন?

Online Education: দেড় বছরে বেশি সময় ধরে চলছে অনলাইন ক্লাস। স্কুল খুললেও পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত এখনও অনলাইনেই পড়াশোনা চলছে। কিন্তু কতজনের হাতে মোবাইল আছে, তা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন।

Online Education: বাংলায় ৪০ শতাংশ পড়ুয়ার বাড়িতেই নেই মোবাইল, পড়াশোনার সুযোগ পাচ্ছে ক'জন?
অনলাইনে ক্লাস করে ক্লান্ত পড়ুয়ারা অলংকরণ- অভীক দেবনাথ
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Nov 24, 2021 | 12:44 AM

কলকাতা : ভাইরাসের প্রকোপে গত বছরের শুরুর দিকে সব ক্ষেত্রেই বদলে যায় চেনা ছবি। পড়ুয়াদের স্কুল ব্যাগে জমেছে ধুলো, খাটো হয়েছে ইউনিফর্ম। মরচে পড়েছে টিফিন বাক্স বা জলের বোতলে। পড়ুয়াদের এক অংশের বাড়িতে রয়েছে স্মার্টফোন, ল্যাপটপ। তারা নিউ নর্মালে চালিয়ে যাচ্ছে পড়াশোনা। কিন্তু আর এক অংশের হাতে নেই ফোন, কম্পিউটার। এই দেড় বছরে তাদের পড়াশোনা কি এগোল? নাকি থমকে গেল সবটাই? কত শতাংশ পড়ুয়ার বড় হওয়া থেকে বাদ গেল প্রথাগত শিক্ষা? এক সমীক্ষায় উঠে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য। কতজনের হাতে রয়েছে মোবাইল? দেশের গড় পড়ুয়ার নিরিখে বাংলার পড়ুয়াদের ক্ষেত্রে সেই সংখ্যাটা অনেকটাই কম। ৪০ শতাংশ পড়ুয়ার বাড়িতেই নেই মোবাইল।

কী তথ্য উঠে এল অ্যানুয়াল স্টেটাস অব এডুকেশনের (ASER ) রিপোর্টে?

১. কতজনের বাড়িতে রয়েছে মোবাইল?

দেশের গড়- ৬৭.৬ শতাংশ, বাংলার গড়- ৫৮.৪ শতাংশ, কেরলের গড়- ৯৭.৫ শতাংশ।

২. বাড়িতে মোবাইল থাকলেও পড়ার সুযোগ নেই অনেকের। অনেকেরই হাতে নেই মোবাইল। এমন পড়ুয়ার সংখ্যা কত?

দেশের গড়- ২৬.১ শতাংশ, বাংলার গড়- ৪৬.৫ শতাংশ, কেরলের গড়- ২.৬ শতাংশ।

৩. কতজনের কাছে পৌঁছেছে স্টাডি মেটিরিয়াল?

দেশের গড়- ৩৬.২ শতাংশ, বাংলার গড়- ২৯.৮ শতাংশ, কেরলের গড়- ৭৪.৩ শতাংশ।

এক শিক্ষিকার কথায়, শহরের বুকে সরকারি যে সব স্কুল রয়েছে, সেখানে স্টাডি মেটিরিয়াল পৌঁছেছে। কিন্তু প্রত্যন্ত এলাকায় এ সব সমস্যা রয়েছে। যে গ্রামাঞ্চলে প্রিন্ট করিয়ে হাতে হাতে পৌঁছে দেওয়ার মতো পরিষেবা নেই সেখানে স্টাডি মেটিরিয়াল পৌঁছয়নি ঠিক মতো।

পড়াশোনার সুষোগ কমে গেলে কি স্কুলছুটের সংখ্যা বাড়বে না? পড়ুয়ারা কি দিনের পর দিন পড়াশোনা না করতে পেরে আগ্রহ হারাবে না? সেভ দ্য চিলড্রেন- এর সদস্য সুস্মিতা ঘোষ বলেন, ‘যে সময়টা তারা পড়াাশোনা করত, সেই সময় তারা এখন অন্য কিছু করছে। কেউ শিশু শ্রমের দিকে চলে যাচ্ছে। কারও হয়ত যে বয়সে বিয়ে হওয়ার কথা নয়, সেই বয়সে বিয়ে হয়ে যাচ্ছে। কেউ আবার বাবা- মায়ের সঙ্গে কাজে হাত লাগিয়েছে।’ তিনি মনে করেন, পড়াশোনার পাশাপাশি, এই সবকটা বিষয় মাথায় রাখা প্রয়োজন।

করোনা পরিস্থিতিতে অনলাইনে পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার স্বার্থে দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের ট্যাব কেনার জন্য ১০,০০০ টাকা করে দেওয়া হয়েছিল রাজ্য সরকারের তরফে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই ঘোষণার পর পড়ুয়াদের অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু তারপরও রাজ্যের যে ছবি সামনে আসছে, তা রীতিমতো উদ্বেগজনক। শুধু তাই নয়, সম্প্রতি এমন কিছু ঘটনা সামনে এসেছে, যা থেকে স্পষ্ট যে সরকারি টাকায় কেনা মোবাইল পড়াশোনার বাইরে ইন্টারনেটের নেশায় মত্ত করে দিচ্ছে পড়ুয়াদের। এমনকি মোবাইল নিতে নিষেধ করার জন্য সম্প্রতি আত্মহত্য়াও করেছে দুই ছাত্রী, যাদের বয়স ১৮-র আশেপাশে। তাই বদলে যাওয়া পদ্ধতিতে এক প্রজন্ম পড়াশোনা থেকে দূরে চলে যাচ্ছে না তো? উঠছে সেই প্রশ্ন।

আরও পড়ুন : ‘বাড়ি বাড়ি ঘুরে হাততালি কারা দেয়’, সংবিধানকে অপমান করছেন দিলীপ-কুণালরা? প্রশ্ন বৃহন্নলাদের