কলকাতা : কোথায় আছেন ডাক্তারবাবু? সঠিক পরিষেবা দিতে পারছেন তো চিকিৎসকেরা? এমন সন্দেহ থেকেই চিকিৎসকদের এক অভিনব নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। বলা হয়েছিল কাজে যোগ দেওয়ার পরই হোয়াটসঅ্যাপে শেয়ার করতে হবে লোকেশন। বারুইপুর মহকুমা হাসপাতালের তরফে এই নির্দেশ দেওয়া হলেও কার্যত বিতর্ক শুরু হয়ে যায় চিকিৎসক মহলে। স্বাস্থ্য দফতর এরকম একটি নির্দেশ দেওয়ার ক্ষেত্রে অনুমোদন দিয়েছে বলেই প্রাথমিকভাবে মনে করা হয়। এই নির্দেশ বিতর্ক শুরু হতেই নড়েচড়ে বসে স্বাস্থ্য ভবন। স্বাস্থ্য দফতরের তরফে এরকম কোনও নির্দেশ দেওয়া হয়নি বলেই সাফ জানিয়ে দেওয়া হল।
রাজ্যের স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী জানিয়েছেন, লোকেশন শেয়ার করার যে নির্দেশ দিয়েছে বারুইপুর হাসপাতাল, তা সম্পূর্ণ ভাবেই হাসপাতালের নিজস্ব। এটার সঙ্গে স্বাস্থ্য দফতরের কোনও রকম সম্পর্ক নেই। ওই নির্দেশের কথা জানতে পেরে তড়িঘড়ি বারুইপুর মহকুমা হাসপাতালের সুপারকে তলব করা হয় স্বাস্থ্য ভবনে। পরে ওই নির্দেশ প্রত্যাহার করতে বলে স্বাস্থ্য দফতর।
সম্প্রতি এই নির্দেশিকা জারি হয় বারুইপুরের ওই সরকারি হাসপাতালে। চিকিৎসকদের অন্তত ৪০ ঘণ্টা উপস্থিত থাকতে হবে বলে গত সপ্তাহে একটি নির্দেশিকা জারি করে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর। সেই নির্দেশিকার সূত্র ধরে সোমবার লোকেশন শেয়ারের কথা বলে বারুইপুর মহকুমা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তাতে বলা হয়, বহির্বিভাগ, ওটি, অন কল পরিষেবা, ইমার্জেন্সি, এইচডিইউ, এসএসসিইউয়ে কর্মরত সব চিকিৎসকদের কাজে যোগ দেওয়ার সময় লোকেশন শেয়ার করতে হবে। কে কখন, কোথায় আছে, তা যেন নজরে থাকে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের এই নির্দেশিকা ঘিরে জোর চর্চা শুরু হয় চিকিৎসক মহলে।
বারুইপুর মহকুমা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের ওই নির্দেশিকায় হোয়াটসঅ্যাপে পাঠানোর জন্য তিনটি মোবাইল নম্বরও দেওয়া হয়। তিনটি নম্বরের মধ্যে একটি স্বাস্থ্য দফতরের এক পদস্থ কর্তার। তাই স্বাভাবিকভাবেই স্বাস্থ্য দফতরের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। এই নির্দেশিকা ঘিরে চিকিৎসকদের একাংশ বেশ অসন্তুষ্ট হয়। তাঁদের বক্তব্য, এ ভাবে লোকেশন শেয়ার করে হাজিরা নিশ্চিত করার নির্দেশ চিকিৎসকদের জন্য অপমানজনক। তবে এর পাল্টা যুক্তিও রয়েছে। স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকদের একাংশের দাবি, হাসপাতালের কর্মসংস্কৃতি ফেরাতে হলে এ ভাবেই প্রযুক্তির সাহায্য নিতেই হবে। তবে, আপাতত স্বাস্থ্য দফতরের তৎপরতায় সেই নির্দেশিকা প্রত্যাহার করা হয়েছে।