কলকাতা: লক্ষ্মীপুজোর পরদিনই লক্ষ্মী এল বাংলার ঘরে। রাজ্যে নতুন শিল্পের আগমন। মেদিনীপুরের খড়গপুরে (Kharagpur) হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগে রঙের কারখানা করছে আদিত্য বিড়লা গোষ্ঠী। সূত্রের খবর, এই রঙের কারখানায় উৎপাদন শুরু হলে ৬০০ মানুষের সরাসরি কর্মসংস্থান হবে। এ ছাড়াও পরোক্ষ ভাবে কর্মসংস্থান হবে আরও দেড় হাজার মানুষের। নয়া শিল্পের হাত ধরে রাজ্যের কাজের সুযোগেরও যে একটা দরজা উন্মুক্ত হবে, তেমনটাই মনে করছে রাজ্য।
নবান্ন সূত্রে খবর, গত ৪ অক্টোবর দুর্গাপুজোর আগে এ রাজ্যে একটি রঙের কারখানা করতে চেয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি লিখেছিল এই শিল্পগোষ্ঠী। তারই প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার নবান্নে মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদীর সঙ্গে বৈঠকে বসেন বিড়লা শিল্পগোষ্ঠীর কার্যনির্বাহী সভাপতি সুনীল বাজাজ ও চিফ অপারেটিং অফিসার অজিত কুমার।
জানা গিয়েছে, মেদিনীপুরের বিদ্যাসাগর শিল্পতালুকে ৮০ একর জমির উপর এই রঙের কারখানা তৈরি করতে চায় আদিত্য বিড়লা গোষ্ঠী। মূল কারখানা তো তৈরি হবেই, একই সঙ্গে সহযোগী উৎপাদন কেন্দ্রও তারা তৈরি করবে বলে ইচ্ছাপ্রকাশ করেছে। এই প্রকল্পটির জন্য প্রায় ১ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করবে তারা। প্রস্তাবিত কারখানাটি আগামী দেড় থেকে দু’ বছরের মধ্যে চালু হবে বলে আশা নবান্নের।
গত সেপ্টেম্বরেই দুর্গাপুরে ৪০০ কোটি টাকার প্রকল্পের শিলান্যাস করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পানাগড় শিল্পতালুকে শিল্পায়নের বার্তা দেওয়া হয়েছিল ২০০৮ সালে। সেই শিল্প তালুকেই স্থাপিত হচ্ছে একটি পলিফিল্ম কারখানা। শিল্পই যে এই মুহূর্তে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মূল লক্ষ্য, সে কথাই এই প্রকল্পের শিলান্যাস করে বার বার বলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
সামাজিক প্রকল্পের পর এ বার যে তাঁর সরকারের নজর শিল্পের দিকেই তাও বুঝিয়ে দিয়েছেন তিনি। তাজপুর বন্দর, ডেডিকেটেড ফ্রেট করিডর-সহ একাধিক প্রকল্পের কথা ঘোষণা করেছেন ইতিমধ্যেই। কয়লা খনি থেকে শুরু করে আইটি- সব ক্ষেত্রে প্রকল্পের কথা ঘোষণা করা হয়েছে। প্রায় দেড় লক্ষ কোটির প্রকল্প ও ৪-৫ লক্ষ কর্মসংস্থানের সুযোগ আনা হচ্ছে বলেও রাজ্যের তরফে একাধিক বার দাবি করা হয়েছে।
সম্প্রতি তাজপুরে বন্দর তৈরির প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে। তাজপুর সমুদ্রবন্দর নির্মাণের জন্য পশ্চিমবঙ্গ শিল্পন্নয়ন নিগমের তরফে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে টেন্ডার ডাকা হয়েছে। সমুদ্র বন্দর তৈরি করতে পারবে এমন সংস্থাগুলি আগামী ২০ ডিসেম্বরের মধ্যে টেন্ডারের আবেদনপত্র জমা দিতে বলা হয়েছে।
১৬ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগে তাজপুরে গড়ে উঠবে এই গভীর সমুদ্রবন্দর। এটাই রাজ্যের প্রথম গভীর সমুদ্রবন্দর। এই বন্দর নির্মাণ সম্পূর্ণ হলে কয়েক হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হবে বলে আশাপ্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। এরপরই সম্প্রতি তাজপুরে গ্রিনফিল্ড বন্দর তৈরির প্রক্রিয়া শুরু করে রাজ্য। এরইমধ্যে আবার নতুন শিল্পের আগমনী। খড়গপুরে রঙের কারখানা তৈরি করতে চলেছে দেশের জনপ্রিয় শিল্পগোষ্ঠী।
আরও পড়ুন: রক্তমাখা শার্ট ধুতে গিয়েই বিপত্তি মিঠুর! প্রমাণ লোপাটের চেষ্টাই ধরিয়ে দিল পুলিশের হাতে