Gariahat Double Murder: রক্তমাখা শার্ট ধুতে গিয়েই বিপত্তি মিঠুর! প্রমাণ লোপাটের চেষ্টাই ধরিয়ে দিল পুলিশের হাতে
Gariahat: রবিবার গড়িয়াহাট থানা এলাকার ৭৮ এ কাঁকুলিয়া রোডের একটি তিনতলা বাড়ি থেকে সুবীর চাকি ও তাঁর গাড়ির চালক রবীন মণ্ডলের রক্তাক্ত, ক্ষত বিক্ষত দেহ উদ্ধার হয়।
কলকাতা: কাঁকুলিয়ায় জোড়া (Gariahat Murder) খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত মিঠু হালদারকে ৩ নভেম্বর পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিল আলিপুর আদালত। আলিপুর পুলিশ কোর্টে অভিযুক্ত মিঠু হালদারকে বৃহস্পতিবার তোলা হয়। এদিন মিঠুর বিরুদ্ধে আদালতে সওয়াল করেন সরকারি আইনজীবী। তিনি আদালতে জানান, খুনের পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে সরাসরি ভাবে যুক্ত মিঠু। তাঁর বাড়ি থেকে রক্তমাখা জামা কাপড় পাওয়া গিয়েছে।
রবিবার গড়িয়াহাট থানা এলাকার ৭৮ এ কাঁকুলিয়া রোডের একটি তিনতলা বাড়ি থেকে সুবীর চাকি ও তাঁর গাড়ির চালক রবীন মণ্ডলের রক্তাক্ত, ক্ষত বিক্ষত দেহ উদ্ধার হয়। তদন্তে নেমে প্রথম দিকে ধোঁয়াশা থাকলেও ধীরে ধীরে এবার বোধহয় কিছু সূত্র হাতে আসছে তদন্তকারীদের। মঙ্গলবার সকালে লালবাজারের হোমিসাইড শাখার তদন্তকারীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। থ্রিডি স্ক্যানারে ঘটনার পুনর্নির্মাণের মধ্যে দিয়েই একাধিক আততায়ীর উপস্থিতির বিষয়ে এক প্রকার নিশ্চিত হন তদন্তকারীরা। অন্যদিকে পরিবারের সঙ্গে কথা বলে এ কথাও স্পষ্ট হয়, এই ঘটনায় বাড়ি কেনাবেচার একটা যোগ রয়েছে।
মঙ্গলবার পুলিশ কুকুর নিয়ে ঘটনাস্থলে গেলে বালিগঞ্জ স্টেশন অবধি চলে যায় ওই কুকুর। ১ ও ২ নম্বর প্ল্যাটফর্মে ঘোরাঘুরি করে সে। এরপরই তদন্তকারীরা নিশ্চিত হন এই ঘটনায় ট্রেনের কোনও যোগ রয়েছে। সুবীর চাকির মোবাইল ফোনের কল ডিটেইল সংগ্রহ করে পুলিশ। এলাকার জমির দালালদের তালিকাও তৈরি করে তারা। এর মধ্যে একটি এমন নম্বর ছিল রবিবার যে নম্বরটি কাঁকুলিয়া রোড এলাকাতেই ছিল। পুলিশ জানতে পারে ভুয়ো নথি দিয়ে ওই সিমকার্ড তোলা হয়। কিন্তু লাভ হয়নি।
হ্যান্ডসেটের আইএমইআই নম্বর ধরে মালিককে চিনে ফেলে পুলিশ। এরপরই ওই নম্বর ডায়মন্ড হারবার অবধি নিয়ে যায় তদন্তকারীদের। মঙ্গলবার রাতেই মিঠু হালদারের বাড়িতে যায় পুলিশ। মিঠু ছিলেন না। তবে তাঁর ছোট ছেলে বিলাস ও ভাই তরুণকে আটক করা হয়। বুধবার সকালেই ধরা পড়ে মিঠু। এরপরই একের পর এক রহস্যের শল্ক মোচন শুরু হয়।
অভিযোগ, মিঠু হালদারের বড় ছেলে ভিকি তাঁর সঙ্গীদের নিয়ে সুবীর চাকি ও রবীন মণ্ডলকে খুন করেন। গোটা ঘটনার সবটা জানতেন মা। খুনের আগে সুবীর চাকি বাড়ি বিক্রির একটি বিজ্ঞাপন দিয়েছিলেন। যা ভিকি দেখতে যান। কিন্তু দেড় কোটি টাকায় তা কিনতে রাজি হননি ভিকি। এরপরই অন্য নামে ক্রেতা সেজে রবিবার ভিকি সুবীর চাকির সঙ্গে দেখা করেন বলে অভিযোগ।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সুবীর চাকিকে খুনের কোনও পরিকল্পনা ছিল না ভিকির। ভিকি চেয়েছিল সুবীরবাবুকে ভয় দেখিয়ে টাকা আত্মসাৎ করতে। কিন্তু সুবীরবাবু ভিকিকে চিনে ফেলায় তাঁকে খুন করে ভিকি। কলকাতার পুলিশ কমিশনার সৌমেন মিত্র বলেন, “আমাদের ডিকেক্টিভ ডিপার্টমেন্ট ও অন্যান্য অফিসাররা মিলে গড়িয়াহাটের জোড়া খুনের সমাধান করেছে। আরও কিছু গ্রেফতারি বাকি আছে।”
জানা গিয়েছে মিঠু হালদার ও তাঁর দুই ছেলের বিরুদ্ধে অভিযোগ নতুন নয়। দুই ছেলে ভিকি ও বিলাসকে নিয়ে স্বামীকে মাদক খাইয়ে ৮০ হাজার টাকা হাতানোর অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। স্বামীর সঙ্গে ছাড়াছাড়ির পর ডায়মন্ড হারবারে বিধবা পরিচয়ে ভাড়া থাকতেন মিঠু। পুলিশের দাবি, খুনের পর বালিগঞ্জ স্টেশন থেকে ছেলে ভিকির রক্তমাখা জামা নিয়ে ডায়মন্ড হারবারের বাড়িতে ফিরে যান। প্রমাণ লোপাটে সে জামা ধুতে গেলে সন্দেহ হয় বাড়ির মালিকের। এরপরই ধীরে ধীরে পর্দা ফাঁস হতে শুরু করে।
আরও পড়ুন: Humanity: বৃদ্ধের পায়ে গ্যাংগ্রিন, এগিয়ে এল না কেউ! পাশে দাঁড়াল মানবিক পুলিশ