কলকাতা : সামনে চার পুরনিগমে নির্বাচন। করোনা পরিস্থিতিতে প্রচার পর্ব কিছুটা ধাক্কা খেলেও সব শিবিরে প্রস্তুতি তুঙ্গে। আর এরই মধ্যে প্রকাশ্যে চলে এসেছে শাসকদলের অন্তর্দ্বন্দ্ব। কলকাতার পর বাকি পুরনিগমগুলি নিয়েও যখন আত্মবিশ্বাসী তৃণমূল, তখন দলের প্রথম সারিতে এই দ্বন্দ্ব যে খুব একটা শোভা পায় না, সেটা আগেই বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছিল ঘাসফুল শিবিরের তরফ থেকে। আর এবার বিতর্ক থামাতে আসরে নামলেন তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। সূত্রের খবর, শুক্রবার সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় ও কুণাল ঘোষ দুজনকেই ফোন করেছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার শ্রীরামপুরের সাংসদের এক বিশেষ মন্তব্যের পরই ধরেই বিতর্কের সূত্রপাত। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘ব্যক্তিগত মত’ মন্তব্যের বিরোধিতা করেছেন কল্যাণ। আর সেই ইস্যুতে কল্যাণের বিরোধিতা করেছেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। দুজনেই নিজস্ব অবস্থানে অনড় থেকে বক্তব্য পেশ করতে থাকেন। বৃহস্পতিবারই পার্থ চট্টোপাধ্যায় এই প্রসঙ্গে বলেছিলেন, ‘কারোরই এমন কোনও মন্তব্য করা উচিৎ নয়, যাতে দল এবং সরকার অস্বস্তিতে পড়ে।’
তারপরও তরজা থামেনি। তৃণমূলের অন্দরে গোষ্ঠীকোন্দল নতুন নয়। তবে এ ভাবে শীর্ষ স্তরের নেতাদের মধ্যে আক্রমণাত্মক বাক্য বিনিয়ম সাধারণের মধ্যে বিরুপ প্রভাব ফেলতে পারে বলেও মনে করেন দলের একাংশ। কুণাল ঘোষ নিজেই জানিয়েছিলেন, পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন দলের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির তরফ থেকে পুরো বিষয়টার ওপর নজর দেওয়া হচ্ছে। আর এবার সরাসরি ফোন করে বিতর্ক থামানোর আর্জি জানালেন তিনি। জানা গিয়েছে, শুক্রবার দুপুরে ফোন করে দুই নেতাকে তিনি সতর্ক করেছেন। যাতে আর বিতর্ক না বাড়ে, সেই বার্তাই দিয়েছেন পার্থ।
শুক্রবার কুণাল ঘোষ টুইটারে লেখেন, ‘চ্যাপ্টার ক্লোজড’। সঙ্গে একটি হাসির ইমোজি দেন তিনি। কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কাজিয়ায় ইতি টানলেন বলেই মনে করা হয়। তৃণমূলের অস্বস্তি বাড়তে শুরু করেছে বলেই কুণাল বিতর্ক থেকে সরে আসেন বলে মনে করা হচ্ছে।
তবে সাংবাদিক সম্মেলনে ‘চ্যাপ্টার ক্লোজড’ কথাটির ব্যাখ্যা দেন কুণাল ঘোষ। তাঁর বক্তব্য, “আমি কোভিড পজিটিভ ছিলাম। ডাক্তাররা বললেন সুস্থ আছি। তাই লিখেছি চ্যাপ্টার ক্লোজড।”
তবে তরজা যে শেষ হয়নি সেটাও বোঝা যায় এ দিনই। কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর ফেসবুকে কবি শ্রীজাতর কবিতার লাইন উদ্ধৃত করেন। ‘মানুষ থেকেই মানুষ আসে, বিরুদ্ধতার ভিড় বাড়ায়, আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ তফাৎ শুধু শিরদাঁড়ায়’, কল্যাণের এই টুইটের পরই পাল্টা টুইট করেন কুণাল। তনু দত্তের ‘শিরদাঁড়া’ কবিতাটি পোস্ট করেন কুণাল ঘোষ। তা থেকেই স্পষ্ট হয়, কাজিয়া এখনও বহাল। তবে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের হস্তক্ষেপে এই বিতর্কের অবসান হবে কি না, সেটাই এখন দেখার।
আরও পড়ুন : Dilip Ghosh On Municipality Election: সরকার তো চাইবেই ভোট করাতে, কমিশনকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে: দিলীপ ঘোষ