Dilip Ghosh On Municipality Election: সরকার তো চাইবেই ভোট করাতে, কমিশনকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে: দিলীপ ঘোষ
Dilip Ghosh On Municipality Election: শুক্রবার আদালত কমিশনকে প্রশ্ন করে, ৪-৬ সপ্তাহ ভোট পিছিয়ে দেওয়া যায় কিনা। কমিশনকেই সেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা বলে আদালত। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সিদ্ধান্ত জানানোর নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
কলকাতা: “রাজ্য সরকার চাইবেই ফাঁক তালে ভোট করাতে, তাতেই তাদের লাভ। কমিশনকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। মানুষের প্রাণ বিপন্ন করে গণতন্ত্র রক্ষা করার কোনও মানে হয় না।” পুরভোট নিয়ে হাইকোর্টের শুক্রবারের পর্যবেক্ষণ প্রসঙ্গে বললেন বিজেপির সর্ব ভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ। শুক্রবার আদালত কমিশনকে প্রশ্ন করে, ৪-৬ সপ্তাহ ভোট পিছিয়ে দেওয়া যায় কিনা। কমিশনকেই সেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা বলে আদালত। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সিদ্ধান্ত জানানোর নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
আদালতের পর্যবেক্ষণ প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষ বলেন, “ভোট পিছানোর দরকার, এটা সবাই বুঝেছেন। এটাই প্রথম কথা। পিছানোর সিদ্ধান্ত কে নেবে, তা নিয়েই ছিল সমস্যা। আসলে নির্বাচন কমিশন ও রাজ্য সরকার এখানে তো আলাদা কিছু নয়। রাজ্য সরকারের অঙ্গুলি হেলনেই কমিশন সব করছে। তৃণমূল ক্যান্ডিডেট লিস্ট ঘোষণা করে দিচ্ছে। আমার মনে হয় মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা চলছে। কলকাতা ও বাংলা সংক্রমণে চ্যাম্পিয়ন হয়ে গিয়েছে।”
তার সঙ্গে দিলীপের সংযোজন, “এখন প্রশ্ন হচ্ছে, ভোট স্থগিত করা যায় কি? যদি কোনও প্রার্থীর মৃত্যু হয়, তাহলে কি ভোট স্থগিত হয় না? যদি নির্দল প্রার্থীরও মৃত্যু হয়, তাহলেও ভোট বন্ধ করা যায়। তার মানে ভোট বন্ধ করা যায়, প্রয়োজন হলেই। এখন ডিজাস্টার ঘোষণা করা হবে। ডিজাস্টার ঘোষণা করা হবে কিনা, তা নিয়ে দ্বিমত রয়েছে। রাজ্য সরকারের লাইন সেটা ধার্য করে। তবে অনেকেই বলছেন ভোট বন্ধ করার কথা। মানুষের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে গণতন্ত্র রক্ষা করার কোনও দরকার নেই। ২ বছরেও যদি গণতন্ত্র নষ্ট না হয়, তাহলে আর ৯ মাসে ৬ মাসে হবে না। রাজ্য সরকারের এই ফাঁক তালে ভোট করে দিলে লাভ। এই দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনকেই নিতে হবে।”
অন্যদিকে, কংগ্রেস নেতা প্রদীপ ভট্টাচার্য বলেন, “আমার মনে হয় নির্বাচন কমিশনকে জানাতে বলে তো লাভ নেই। হাইকোর্ট নির্বাচন কমিশনকে পিং পয়েন্ট করেছে। ঠিকই করেছেন। কারণ কমিশনই নির্বাচন পরিচালনা করে। কিন্তু ব্যাক গ্রাউন্ড মিউজিক যারা করে, যারা আসল নিয়ামক, তার নাম পশ্চিমবঙ্গ সরকার। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী কী চান, সেটা জানা দরকার। আদালত ঠিকই রয়েছে। তবে রাজ্য সরকারকেও যদি এর সঙ্গে জড়িয়ে নিত আদালত, তাহলে আমার মনে হয় ভালো হত।”
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার মামলা চলাকালীন যে ভাবে রাজ্য ও নির্বাচন কমিশন একে অপরের কোর্টে বল ঠেলেছে, তাতে স্তম্ভিত আদালত। বৃহস্পতিবারের গোটা শুনানি পর্বে প্রধান বিচারপতির উল্লেখ্যযোগ্য পর্যবেক্ষণ ছিল, আইন তৈরির ২৭ বছরেও কেন স্পষ্ট নয় কে পুরভোট করবে! তবে এদিন আদালতের তরফে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়, নির্বাচন কমিশনকেই বিবেচনা করে দেখতে হবে ৪-৬ সপ্তাহ পুরভোট পিছিয়ে দেওয়া যায় কিনা। তবে সচেতকদের মতে, এরই মাধ্যমে স্পষ্ট হল যে নির্বাচন সংক্রান্ত সর্বোচ্চ ক্ষমতা কমিশনকেই দিতে চায় আদালত।
রাজ্যের করোনার বর্তমান পরিস্থিতির পুঙ্খানুপুঙ্খ তথ্য তুলে দেওয়া হয়েছে আদালতের কাছে। সেক্ষেত্রে নির্বাচন এক থেকে দেড় মাস পিছিয়ে দেওয়ার কথা মনে করছে আদালত। আর সে ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারে কমিশনই। গোটা বৃহস্পতিবারের শুনানিতে ভোট পিছানোর দায়িত্ব নিজেদের কাঁধ থেকে ঝেড়ে ফেলতে চেয়েছে কমিশন ও রাজ্য সরকার। তবে শুক্রবারের অর্ডারে আদালত স্পষ্ট করে দিয়েছে, ভোট সংক্রান্ত যাবতীয় সিদ্ধান্ত নেওয়ার দায়িত্ব কেবল কমিশনেরই। এক্ষেত্রে এদিনের অর্ডারে সুপ্রিম কোর্টের একাধিক জাজমেন্টের উল্লেখ করেছেন বিচারপতি। অর্ডারের একেবারের শেষ পংক্তিতে সেই বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে।