AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

Municipality Election Calcutta High Court: ৪ থেকে ৬ সপ্তাহ পুরভোট পিছনো যায় কি? ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে কমিশনকে জানানোর নির্দেশ আদালতের

Municipality Election 2022: আদালতের তরফে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়, নির্বাচন কমিশনকেই বিবেচনা করে দেখতে হবে ৪-৬ সপ্তাহ পুরভোট পিছিয়ে দেওয়া যায় কিনা। তবে সচেতকদের মতে, এরই মাধ্যমে স্পষ্ট হল যে নির্বাচন সংক্রান্ত সর্বোচ্চ ক্ষমতা কমিশনকেই দিতে চায় আদালত।

Municipality Election Calcutta High Court: ৪ থেকে ৬ সপ্তাহ পুরভোট পিছনো যায় কি? ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে কমিশনকে জানানোর নির্দেশ আদালতের
কলকাতা হাইকোর্ট (ফাইল ছবি)।
| Edited By: | Updated on: Jan 14, 2022 | 12:56 PM
Share

কলকাতা: ৪ পৌরনিগমের ভোট নিয়ে বড় পর্যবেক্ষণ হাইকোর্টের। পুরভোট পিছানো নিয়ে বিবেচনার নির্দেশ দিল হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব ও বিচারপতি অজয় কুমার মুখোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ। ৪ থেকে ৬ সপ্তাহ পুরভোট পিছনো যায় কি? তা নিয়ে রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে সিদ্ধান্ত নিতে বলল হাইকোর্ট। কমিশনকে ৪৮ ঘণ্টা সময় দিল আদালত।

আদালত এদিন স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, পুরভোট মামলার নিষ্পত্তি হয়েছে। অর্থাৎ আদালতকে জানানোর আর বিশেষ কিছু প্রয়োজন নেই। গোটি বিষয়টি নিয়ে এবার নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত নেবে। যাবতীয় অর্ডার দেখে কমিশন সিদ্ধান্ত নিতে পারে বলে মনে করছে আদালত।

প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার মামলা চলাকালীন যে ভাবে রাজ্য ও নির্বাচন কমিশন একে অপরের কোর্টে বল ঠেলেছে, তাতে স্তম্ভিত আদালত। বৃহস্পতিবারের গোটা শুনানি পর্বে প্রধান বিচারপতির উল্লেখ্যযোগ্য পর্যবেক্ষণ ছিল, আইন তৈরির ২৭ বছরেও কেন স্পষ্ট নয় কে পুরভোট করবে! তবে এদিন আদালতের তরফে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়, নির্বাচন কমিশনকেই বিবেচনা করে দেখতে হবে ৪-৬ সপ্তাহ পুরভোট পিছিয়ে দেওয়া যায় কিনা। তবে সচেতকদের মতে, এরই মাধ্যমে স্পষ্ট হল যে নির্বাচন সংক্রান্ত সর্বোচ্চ ক্ষমতা কমিশনকেই দিতে চায় আদালত।

রাজ্যের করোনার বর্তমান পরিস্থিতির পুঙ্খানুপুঙ্খ তথ্য তুলে দেওয়া হয়েছে আদালতের কাছে। সেক্ষেত্রে নির্বাচন এক থেকে দেড় মাস পিছিয়ে দেওয়ার কথা মনে করছে আদালত। আর সে ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারে কমিশনই। গোটা বৃহস্পতিবারের শুনানিতে ভোট পিছানোর দায়িত্ব নিজেদের কাঁধ থেকে ঝেড়ে ফেলতে চেয়েছে কমিশন ও রাজ্য সরকার। তবে শুক্রবারের অর্ডারে আদালত স্পষ্ট করে দিয়েছে, ভোট সংক্রান্ত যাবতীয় সিদ্ধান্ত নেওয়ার দায়িত্ব কেবল কমিশনেরই। এক্ষেত্রে এদিনের অর্ডারে সুপ্রিম কোর্টের একাধিক জাজমেন্টের উল্লেখ করেছেন বিচারপতি। অর্ডারের একেবারের শেষ পংক্তিতে সেই বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে।

এদিনের আদালতের পর্যবেক্ষণ প্রসঙ্গে মামলাকারীর আইনজীবী বিক্রম বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আদালত এদিন জানিয়ে দিয়েছে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে কমিশন একটা সিদ্ধান্ত নেবে পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে। আমাদেরকেও বলা হয়েছে, আমাদের কাছে যা নথি আছে, তা কমিশনকে জমা দিতে। আমরাও আবেদন জানাব। যাতে নির্বাচন পিছনো যায়। ”

শুক্রবারের আদালতের পর্যবেক্ষণের আরও একটি বিষয় উল্লেখ্যযোগ্য। যেহেতু নির্বাচন কমিশন একটি স্বাধীন স্বতন্ত্র সংস্থা। আবার হাইকোর্টও একটি স্বাধীন প্রতিষ্ঠান। তাই আদালত আদৌ কমিশনের এই সিদ্ধান্তে হস্তক্ষেপ করতে পারে কিনা, তা নিয়েই প্রশ্ন উঠতে পারে। তাই সরাসরি হাইকোর্ট পুরভোট নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত না নিয়ে, তা কমিশনের ওপরই ছাড়লেন।

প্রসঙ্গত, মামলাকারীর তরফে আইনজীবী বিকাশ ভট্টাচার্য প্রথম থেকেই সওয়াল করেছিলেন, “রাজনৈতিক দলগুলো প্রচার করছেন প্রচুর মানুষ নিয়ে। ভ্যাকসিন নেওয়ার পর এত লোক জড়ো হলে করোনা আরও বাড়বে। এত কিছু ব্যবস্থার পরেও প্রচুর লোক একত্রে জড়ো হচ্ছে।” এই বিষয়টি এদিন আদালতে তুলে ধরেন তিনি।

তাঁর বক্তব্য, “ভোটকে চ্যালেঞ্জ করা হচ্ছে না। এক্ট্রাঅডিনারি পরিস্থিতি। নমিনেশন দিতে গিয়েও ভিড় দেখা যাচ্ছে। যদি এই অবস্থায় কমিশন বন্ধ না করে, কোর্টের উচিত নির্বাচন বন্ধ করা।”

কিন্তু বৃহস্পতিবার গোটা শুনানি পর্বে প্রথম থেকেই রাজ্য সরকার ও নির্বাচন কমিশনের মধ্যে চলে দায় এড়ানোর চেষ্টা। কে সিদ্ধান্ত নিতে পারবে ভোট পিছিয়ে দেওয়ার ? তা নিয়েই চলে টানাপোড়েন। কমিশনের পক্ষ থেকে আইনজীবী জয়ন্ত মিত্র এরপর আদালতে জানান, ভোটের দিন ঠিক করে ফেলেছে রাজ্য সরকার। প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব প্রশ্ন করেন, “কমিশন কী ভাবছে এই পরিস্থিতিতে কি করা উচিত?” উত্তরে কমিশনের আইনজীবী বলেন, “এক্ষেত্রেও রাজ্যের সঙ্গে কথা বলতে হবে।”

কমিশন যখন আদালততে একথা জানাচ্ছেন, তখন রাজ্যের তরফে আইনজীবী সম্রাট সেন বলেন, “রাজ্য নির্বাচন কমিশন প্রাথমিকভাবে দিন ঘোষণা করেছে। রাজ্য তাদের মতামত জানায়। যদি ভোট পিছতে হয় তাহলে কমিশনের একমাত্র দায়িত্ব আইন প্রয়োগ করে তারা সেটা করতে পারে।” এই পরিস্থিতি সমাধান সূত্র অধরাই থেকে গিয়েছিল। রায়দান স্থগিত রেখেছিল আদালত।

এদিনের আদালতের নির্দেশ প্রসঙ্গে মামলাকারীর আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, “আদালত অত্যন্ত সাংবিধানিকভাবে ও সঙ্গতকারণে এই নির্দেশ দিয়েছে। নির্বাচন কমিশন একটা স্বাধীন সংস্থা। তাকে স্বাধীনভাবে বিচারবিবেচনা করতে হবে। সরকারের মুখাপেক্ষী না হয়ে। আদালত নিজে থেকে স্থগিতাদেশ দেয়নি। আমার মনে হয় আদালত স্বতন্ত্র কোনও প্রতিষ্ঠানের সিদ্ধান্তে হস্তক্ষেপ করতে চায়নি। ”

আরও পড়ুন: Municipality Election Calcutta High Court: বিড়ালের গলায় ঘণ্টা বাঁধবে কে? একে অন্যের কোর্টে বল ঠেলল কমিশন-রাজ্য! স্থগিত ‘পুর’ রায়দান