কলকাতা : গত কয়েকদিন ধরেই বগটুই ইস্যুকে কেন্দ্র করে উত্তাল হয়েছে বিধানসভা। দোষীদের শাস্তির দাবিতে, সরব হয়েছেন বিরোধী দল তথা বিজেপি বিধায়করা। ওয়েলে নেমে বিক্ষোভ, ওয়াকআউট করে প্রতিবাদ জানিয়েছেন তাঁরা। আর সোমবার সকালে বিধানসভায় যা ঘটল, তা কার্যত নজিরবিহীন। দু’দলের বিধায়করাই ধস্তাধস্তিতে জড়ালেন। আহত হয়েছেন তৃণমূল বিধায়ক, আক্রান্ত হয়েছে বিজেপি বিধায়কেরাও। এই ঘটনার পিছনে বিজেপির ষড়যন্ত্র রয়েছে বলেই দাবি করলেন তৃণমূলের পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্য়ায়। তিনি জানান, গঠনমূলক আলোচনার বদলে বারবার বিধানসভার কাজে বাধা দেওয়া হচ্ছে। রাজ্যের উন্নয়নকে ব্যহত করছেন বিজেপি বিধায়করা।
বিধানসভার ধস্তাধস্তির পর পার্থ চট্টোপাধ্যায় সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘বিধানসভার ঐতিহ্য ও মর্যাদা ক্ষুণ্ণ করা হয়েছে। গঠনমূলক সমালোচনার পরিবর্তে কাজে বাধা দেওয়া হচ্ছে।’ বিজেপি বিধায়কদের নিশানা করে পার্থ চট্টোপাধ্যায় আরও বলেন, ‘এদের কাজ সন্ত্রাস করা। রোজ সকালে ভাঙচুর চালানো। সবার কাজ বিঘ্নিত করার চেষ্টা করছে ওরা। অধ্যক্ষ আজ বাধ্য হয়ে সাসপেন্ড করেছেন।’ তিনি আরও উল্লেখ করেন, নিজেদের বিধানসভা এলাকা নিয়ে কোনও আলোচনা করেন না বিজেপি বিধায়করা।
পরিকল্পিতভাবে কাজ বিঘ্নিত হতে পারে বলে দাবি করেছেন পার্থ। এ দিনের ঘটনাকে অত্যন্ত লজ্জাজনক, ন্যক্কারজনক বলে আখ্য়া দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘যে ভাবে মাইক খুলে নিয়েছে। কাগজ ছিঁড়ে দিয়েছে। কর্মীদের ওপর আক্রমণ করেছে তাতে নিন্দার ভাষা নেই।’
এ দিকে, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর দাবি, তাঁদের ওপর আক্রমণ হয়েছে আর তাঁদেরই সাসপেন্ড করা হয়েছে। তিনি বলেন, সংখ্যালঘু মহিলা ও শিশুর মৃত্যুর ঘটনা আর বসিরহাটে ধর্ষণের প্রতিবাদ করতে গিয়ে বিজেপি বিধায়করা সাসপেন্ড হয়েছি। এর থেকে খুশির খবর কিছু হতে পারে না।
সোমবারও অধিবেশনের শুরুতেই বিজেপি বিধায়করা প্ল্যাকার্ড হাতে ওয়েলে নেমে বিক্ষোভ দেখান। অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়কে ঘিরে একটি নিরাপত্তারক্ষীদের একটি বলয় তৈরি করা হয়। এরপরই দেখা যায়, বিজেপির মহিলা বিধায়করা ওই সমস্ত মহিলা নিরাপত্তারক্ষীদের বেষ্টনী ভাঙতে শুরু করেন। তাতেই সমস্যার সূত্রপাত। শুরু হয় কার্যত ধস্তাধস্তি। ধস্তাধস্তির মাঝে পড়েন ফিরহাদও। তৃণমূল বিধায়ক অসিত মজুমদার অসুস্থ হয়ে পড়েন বলে খবর। অ্যাম্বুলেন্সে তাঁকে এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী, মনোজ টিগ্গা, দীপক বর্মা, নরহরি মাহাতো, শঙ্কর ঘোষকে সাসপেন্ড করা হয়েছে।
আরও পড়ুন : Bagtui Massacre: রামপুরহাট হাসপাতালে চুক্তিভিত্তিক কর্মী সেজে কাদের আনাগোনা? কীসের ইঙ্গিত দিলেন শতরূপ?