কলকাতা: উত্তাল সংস্কৃত কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়। উঠল অধ্যাপকের অপসারণের দাবি। চলল অবস্থান বিক্ষোভ। তৃতীয় বর্ষের এক ছাত্রীর চাঞ্চল্যকর অভিযোগ, অফলাইন পরীক্ষার নাম করে দমদমের ফ্ল্যাটে ডেকে তাঁর শ্লীলতাহানি করেছেন অধ্যাপক পরিতোষ দাস। ইতিমধ্যে ওই অধ্যাপকের বিরুদ্ধে আমহার্স্ট স্ট্রিট থানায় এফআইআর দায়ের করেছেন ছাত্রী।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষেরও কানে গিয়েছে এই চাঞ্চল্যকর অভিযোগ। উপাচার্য ডক্টর সোমা বন্দ্যোপাধ্যায় টিভি নাইন বাংলাকে জানিয়েছেন, অভিযোগপত্র পেলেই তদন্ত কমিটি গড়ে ঘটনা খতিয়ে দেখবে বিশ্ববিদ্যালয়।
ঠিক কী ঘটেছে?
গত অক্টোবর মাসের ২৪ তারিখ অফলাইন পরীক্ষা নেবেন বলে দমদমের ফ্ল্যাটে ওই ছাত্রীকে ডাকেন অভিযুক্ত অধ্যাপক। ছাত্রীর বন্ধুদের দাবি, ওই অধ্যাপক ফ্ল্যাটের দরজা বন্ধ করে অশ্লীল ব্যবহার করেন। এর পর সেখান থেকে কোনও ক্রমে পালিয়ে বাঁচেন ওই ছাত্রী। বিশ্ববিদ্যালয় খোলার পর এই বিষয়টি সম্পর্কে বন্ধুরা জানতে পারে।
৩০ ডিসেম্বর দায়ের হয় এফআইআর। পরদিন অর্থাৎ, ১ ডিসেম্বর পরিতোষ দাসের অপসারণ দাবি করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে অবস্থানে বসেন পড়ুয়ারা। ওই ছাত্রী টিভি নাইন বাংলাকে জানান, “আমাকে অফলাইন পরীক্ষার জন্য ফ্ল্যাটে ডাকেন উনি। বাড়িটা আমি আগে চিনতাম না। পরে সেখানে যাই। তার পর ঠিকানা দেওয়াতে আমি যাই। সেখানে যেতে আমার সঙ্গে… খারাপ ব্যবহার করেন উনি। এর আগে ওঁনাকে শুধু পড়াশোনার সূত্রেই চিনতাম।”
কী বলছে কর্তৃপক্ষ?
উপাচার্য ডক্টর সোমা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান,”এটি খুবই দুর্ভাগ্যজনক। মেয়েটির কষ্ট আমি বুঝতে পারছি। তবে এখনও ওই ছাত্রীর কাছ থেকে কোনও অভিযোগপত্র পাইনি। থানাতে এফআইআর হয়েছে আমি শুনেছি। ছাত্রছাত্রীরা আমাকে ফোন করেছিল। আমি অভিযোগপত্র দিতে বলেছি। সেটা যতক্ষণ না আমরা পাব, ততক্ষণ পদক্ষেপ করতে পারছি না। অভিযোগ পেলেই বিধি মেনে উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করব।” তাঁর আরও সংযোজন, “এটা বিশ্ববিদ্যালয় পরিসরে ঘটেনি। শুনতে পেলাম একমাস সাতদিন আগে ঘটেছে। অভিযুক্তের ফ্ল্যাটে যা হওয়ার হয়েছে। তাই আমাদের জানালে, আমরা পদক্ষেপ করতে পারব।”
শিক্ষাবিদ দেবাশিস সরকার এ বিষয়ে বলেন, “যদি এই অভিযোগ সত্যি হয়, তাহলে তা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। যদি অভিযোগ সত্যি না হয়, তা হলেও তা নিন্দার। কেন একজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রী এমন অভিযোগ করবেন!”
উল্লেখ্য, এর আগে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে এমনই এক অভিযোগে উত্তাল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকের বিরুদ্ধে ধর্ষনের অভিযোগ ওঠে। বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে এক গবেষক ছাত্রীর সঙ্গে সহবাস করেছিলেন ওই অধ্যাপক। এই অভিযোগে ওই গবেষক ছাত্রী যাদবপুর থানা ও বিশ্ববিদ্যালয়ে অভিযোগ দায়ের করেন।
আরও পড়ুন: Sovan Chatterjee: ‘সিঁদুর নিয়ে ছেলেখেলা করিনি, শপথ নিয়েছি… আমার ৩ সন্তান’, বিস্ফোরক শোভন