কলকাতা : বারবার ফোনে আসছিল খুনের হুমকি। পুলিশকে জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি। সমস্যা বাড়তে থাকায় আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন ডায়মন্ড হারবারের ব্যবসায়ী প্রসূন মন্ডল। সেই মামলা যখন হাইকোর্টে বিচারাধীন তারই মধ্যে মৃত্যু হল মামলাকারী ওই ব্যবসায়ীর। সেই মামলায় আজ পুলিশ সুপারের কাছে রিপোর্ট তলব করল হাইকোর্ট। পাশাপাশি মৃত ব্যক্তির পরিবারকে ২৪ ঘন্টার মধ্যে নিরাপত্তা দেওয়ার নির্দেশ দিলেন বিচারপতি। মামলা চলাকালীনই এ ভাবে মামলাকারীর মৃত্যুতে বিস্মিত হাই কোর্ট।
দিন কয়েক আগেই ডায়মন্ডহারবার এলাকায় খুন হন প্রসূন মন্ডল নামে ওই ব্যবসায়ী। জানা গিয়েছে, ওই ব্যক্তির ভাইকে কিছুদিন আগেই খুন হতে হয়েছিল। প্রাণনাশের হুমকি বারবারই দেওয়া হত প্রসূনকেও। পুলিশকেও একাধিকবার সে কথা জানানো হয়েছে পরিবারের তরফে। অভিযোগ পুলিশ সবকিছু জানা সত্বেও এতদিন ধরে কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। এরপর হাইকোর্টে মামলা করা হয়েছিল। আবেদনে জানানো হয়েছিল যে ভাই ইতিমধ্যেই খুন হয়েছেন। তাই এবার যেন পুলিশ গুরুত্ব দিয়ে বিষয়টা কি দেখে। এই মামলা-মোকদ্দমার মধ্যেই খুন হয়েছেন প্রসূন মন্ডল।
আজ শুক্রবার শুনানিতে খুনের কথা শুনে ক্ষুব্ধ হন বিচারপতি। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মামলাকারীর পরিবারকে নিরাপত্তা দেওয়ার নির্দেশ দেন পুলিশকে। পাশাপাশি, এই ঘটনায় তদন্তের অগ্রগতি কতটা হয়েছে তা-ও জানতে চান বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা। আগামী ৯ নভেম্বরের মধ্যে রিপোর্ট তলব করা হয়েছে পুলিশের কাছে। পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার মামলা চলাকালীন এ ভাবে একজন মামলাকারী খুন হলেন তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিচারপতি।
আরও পড়ুন : Kali Puja: কালীপুজোয় বাজি চাই না, হাইকোর্টে দায়ের হল জনস্বার্থ মামলা
সূত্রের খবর, পুলিশ জানতে পেরেছে যে দীর্ঘ দিন ধরেই ব্যবসায়ী প্রসূনের সঙ্গে ওই প্রতিবেশীদের সঙ্গে জমি নিয়ে বিবাদ চলছিল। অভিযোগ, প্রসূনের জমির দলিল সহ বিভিন্ন কাগজপত্র জাল করে বিক্রিও করে দিয়েছে তাঁর প্রতিবেশীরা। তা নিয়েই বিবাদের সূত্রপাত৷ প্রসূনের পরিবারের তরফে জানা গিয়েছে, গত সোমবার দুপুরে কুলপি ভূমি এবং ভূমি সংস্কার দফতরে এই মামলার সব পক্ষকেই ডাকা হয়েছিল। সেখানেই রওনা দিয়েছিলেন প্রসূন। কিন্তু বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে যাওয়ার পরই ওই প্রতিবেশীরা তাঁর ওপর চড়াও হয় বলে অভিযোগ। সেখানেই প্রসূনকে খুন করা হয়। পরে তাঁর দেহ উদ্ধার করে নিয়ে যায় পুলিশ।
পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ অবশ্য এ রাজ্যে নতুন নয়। ভোট পরবর্তী হিংসা মামলাতেও অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। ওনেক ক্ষেত্রেই পুলিশ অভিযোগ প্রহণ করেনি বলে দাবি করেছে পরিবার। আপাতত ভোট পরবর্তী হিংসা মামলার তদন্ত করছে সিবিআই।