কলকাতা: ‘ভোট পরবর্তী হিংসা’য় খুনের অভিযোগ তুলেছেন কাঁকুরগাছির নিহত বিজেপি কর্মী অভিজিৎ সরকারের পরিবার। সিবিআই তদন্ত ভার নেওয়ার পর থেকেই এই ঘটনায় একাধিকবার অভিজিতের দাদা বিশ্বজিৎ সরকারের সঙ্গে কথা বলেছেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারীরা। কখনও বিশ্বজিতের বাড়িতে গিয়েছেন তাঁরা। কখনও আবার নিজাম প্যালেস কিংবা সিজিও কমপ্লেক্সে হাজির হয়েছেন বিশ্বজিৎ নিজে। রবিবার ফের কাঁকুরগাছিতে অভিজিৎ সরকারের বাড়িতে পৌঁছল সিবিআই। এদিন অভিজিতের মায়ের বয়ান রেকর্ড করা হয় বলে সূত্রের খবর। এদিনও ফের সিবিআইয়ের কাছে পুলিশের বিরুদ্ধে বিশ্বজিৎ নালিশ জানান বলে দাবি সূত্রের। তা নিয়েও কথা হয় বলে জানা গিয়েছে।
একুশের বিধানসভা ভোটের আবহে একাধিক বিজেপি কর্মীর খুনের অভিযোগ ওঠে। সেই তালিকায় প্রথম নামই কাঁকুরগাছির অভিজিতের। ভোটের দিন গলায় তার পেঁচানো উদ্ধার হয় অভিজিৎ সরকারের মৃতদেহ। তাঁর পরিবার প্রথম থেকেই দাবি তোলে, বিজেপি করার অপরাধে অভিজিৎকে খুন করা হয়েছে। একই সঙ্গে এই ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলে নিহতের পরিবার।
সম্প্রতি অভিজিৎ সরকারের এই মোবাইল ফোন নিয়ে সিবিআই দফতরে গিয়েছিলেন দাদা বিশ্বজিৎ। বিশ্বজিতের বক্তব্য, অভিজিৎ সম্ভবত আগেই বুঝতে পেরেছিলেন, তিনি খুন হতে পারেন। সেই জন্যই নিজের মোবাইল ফোন লুকিয়ে রেখেছিলেন বলে মনে করছেন বিশ্বজিৎ। সূত্রের খবর, মোবাইল ফোনে অভিজিতের মৃত্য়ুর আগের মুহূর্তের বেশ কিছু ভিডিয়ো রয়েছে। সেগুলি তদন্তকারীদের কাজে লাগতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্বজিৎ। সেই ভিডিয়ো নিয়েই সম্প্রতি সিবিআই দফতরে হাজির হন তিনি।
বিজেপির অভিযোগ ভোটের আবহে এবং ভোটের ফল প্রকাশের পর লাগাতার খুন, ধর্ষণ, মারধর, লুঠপাট, হুমকির মুখে পড়তে হচ্ছে তাদের নেতা-কর্মীদের। পুলিশের ভূমিকাও এ ক্ষেত্রে প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়েছেন দিলীপ ঘোষ, শুভেন্দু অধিকারীরা। আদালতে এই নিয়ে একের পর এক মামলাও দায়ের হয়।
সব ক্ষেত্রেই মানবাধিকার লঙ্ঘনের কথা বলা হয়। সে সব মামলার শুনানি যত এগিয়েছে, ততই রাজ্যকে আদালতের ভর্ৎসনার মুখে পড়তে হয়েছে। রাজ্যের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন কলকাতা হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দল। জাতীয় মানবাধিকার কমিশনও রিপোর্টে কোণঠাসা করা হয়েছে বাংলার আইনশৃঙ্খলাকে। সবদিক নজরে রেখে গত ১৯ অগস্ট এই মামলার তদন্তের ভার সিবিআইয়ের হাতে তুলে দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। একই সঙ্গে তদন্তকার্যে গঠিত হয় তিন সদস্যের সিটও।
হাইকোর্টের নির্দেশের পরই পুরোদমে রাজ্যের ঘাঁটি তৈরি করে সিবিআই। জেলায় জেলায় দিনরাত চষে নানা তথ্য়ও উঠে আসছে বলে সিবিআই সূত্রে খবর। ইতিমধ্যেই ,চার্জশিটও পেশ করেছে তদন্তকারী এই দল। অভিজিৎ সরকারের রহস্যমৃত্যুর পর্দা ফাঁস করতে বার বার নিহত বিজেপি কর্মীর বাড়িতে যান তদন্তকারীরা। আরও পড়ুন: ভবানীপুরের ভোট নিয়ে তবে কি আদালতেই যাচ্ছে বঙ্গ বিজেপি? জোরাল হচ্ছে জল্পনা