Partha Chatterjee: ২৫ বছরের বিধায়ক, জেল থেকে ছাড়া পেতেই পার্থকে ‘আবার চাই’ পোস্টার বেহালা পশ্চিমে
Poster for Partha Chatterjee: ১২৫ নম্বর ওয়ার্ডের নাগরিক বৃন্দের তরফে বিভিন্ন জায়গায় পোস্টার দেওয়া হয়েছে। নাগরিক বৃন্দের তরফে বলা হয়, "বেহালা পশ্চিমের নবরূপকার পার্থ চট্টোপাধ্যায়। বেহাল পশ্চিমকে নতুন করে সাজিয়েছেন। অশান্ত বেহালা পশ্চিমকে শান্ত বেহালায় পরিণত করেছেন তিনি।" পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে তাঁরা বলেন, "যে কেউ অভিযোগ করতেই পারেন। প্রমাণ তো হয়নি। বেহালা পশ্চিমে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের জায়গা কেউ নিতে পারবে না।"

কলকাতা: গত ৩ বছর সাড়ে ৩ মাসে তাঁর জীবনে বদলে গিয়েছে অনেক কিছুই। দল থেকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। মন্ত্রিত্ব গিয়েছে। তবে এতদিন পর নাকতলার বাড়িতে ফিরে একটা বিষয় ‘স্বস্তি’ দিতে পারে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে। যে বেহালা পশ্চিমের তিনি গত ২৫ বছরের বিধায়ক, সেখানে তাঁর সমর্থনে পোস্টার পড়ল। বেহালা পশ্চিমে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে ‘আবার চাই’ বলে পোস্টার দেওয়া হল ১২৫ নম্বর ওয়ার্ডের নাগরিক বৃন্দের তরফে।
তৃণমূল রাজ্যে ক্ষমতায় এসেছে ২০১১ সালে। আর পার্থ চট্টোপাধ্যায় বেহালা পশ্চিমের বিধায়ক হন তারও দশ বছর আগে। ২০০১ সাল থেকে এই আসনে তিনিই তৃণমূলের বিধায়ক। ২০২২ সালের ২৩ জুলাই নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় তাঁকে গ্রেফতার করে ইডি। তারপর একের পর এক মামলায় তাঁর নাম যোগ হয়। সেইসব মামলা থেকে জামিন পেয়ে এদিন বাড়ি ফিরেছেন পার্থ।
এদিন তাঁকে ঘিরে উচ্ছ্বাস দেখা গিয়েছে। কিন্তু, প্রশ্ন উঠছে, জেল থেকে ছাড়া পেলেও কি ছাব্বিশের নির্বাচনে তৃণমূলের টিকিট পাবেন পার্থ? শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার হওয়ার পর পার্থকে তৃণমূল থেকে সাসপেন্ড করা হয়। শাসকদলের প্রথম সারির নেতারাও পার্থর থেকে দূরত্ব বাড়ান। কয়েকদিন আগে বেহালা পশ্চিমে তৃণমূলের প্রার্থী নিয়ে নতুন জল্পনা ছড়ায়। সাত বছর পর তৃণমূলে ‘ঘর ওয়াপসি’ হয়েছে শোভন চট্টোপাধ্যায়ের। একসময় শোভন বেহালা পূর্বের বিধায়ক ছিলেন। এখন সেখানকার বিধায়ক শোভন-পত্নী রত্না চট্টোপাধ্যায়। ছাব্বিশের নির্বাচনে শোভনকে বেহালা পশ্চিমে প্রার্থী করা হবে কি না, তা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে জল্পনা বাড়ে।
এসবের মধ্যে জেল থেকে ছাড়া পেয়ে বাড়ি ফিরলেও এখনও পর্যন্ত পার্থকে নিয়ে তৃণমূলের নেতারা বাড়তি কোনও উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেননি। তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ গতকাল বলেছিলেন, “আইনের বিষয়। যদি কোর্টে কোনও ব্যক্তি জামিনের আবেদন করে থাকেন, আর কোর্ট যদি মনে করে জামিন পেতে পারেন তাহলে তিনি আইন মতোই জামিন পাবেন।” অন্য কোনও তৃণমূল নেতা এখনও কোনও মন্তব্য করেননি।
তবে পার্থকে ফের বেহালা পশ্চিমের প্রার্থী হিসেবে দেখতে চান অনেকেই। ১২৫ নম্বর ওয়ার্ডের নাগরিক বৃন্দের তরফে বিভিন্ন জায়গায় পোস্টার দেওয়া হয়েছে। নাগরিক বৃন্দের তরফে বলা হয়, “বেহালা পশ্চিমের নবরূপকার পার্থ চট্টোপাধ্যায়। বেহাল পশ্চিমকে নতুন করে সাজিয়েছেন। অশান্ত বেহালা পশ্চিমকে শান্ত বেহালায় পরিণত করেছেন তিনি।” পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে তাঁরা বলেন, “যে কেউ অভিযোগ করতেই পারেন। প্রমাণ তো হয়নি। বেহালা পশ্চিমে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের জায়গা কেউ নিতে পারবে না।”

নাকতলা উদয়ন সংঘ ক্লাবের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিলেন পার্থ। ওই ক্লাবের সম্পাদক দেবব্রত দে বলেন, “পার্থ চট্টোপাধ্যায় নাকতলা উদয়ন সংঘের পুজোর সঙ্গে শুধু নয়, ক্লাবের প্রতিটি পরিবারের সঙ্গে তিনি যুক্ত। পুজোয় সবসময় তাঁকে পাশে পেয়েছি। আগামিদিনেও পাব। পার্থদার ফিরে আসাটা ব্যক্ত করার ভাষা নেই। আমরা ক্লাবের সদস্যরা খুবই খুশি। খুশি পূজোর সঙ্গে যুক্ত সমস্ত মানুষও।”
তৃণমূল পার্থকে নিয়ে এখনও কোনও বার্তা না দিলেও তাঁর সমর্থনে বিভিন্ন জায়গায় পোস্টার পড়েছে। এখন দেখার বেহালা পশ্চিমের ২৫ বছরের বিধায়ক ছাব্বিশের নির্বাচনে আদৌ টিকিট পান কি না।
