পিকে-হীন মাঠে তৃণমূলের হয়ে ‘ডায়মন্ড ছকেই’ খেলবে আইপ্যাক
চুক্তি অনুযায়ী, পঞ্চায়েত থেকে পুরসভা, প্রত্যেকটি নির্বাচনেই মমতার হয়ে মাঠে নামবে টিম আইপ্যাক।
নয়া দিল্লি: ২-৩-৩-১-১! ফুটবলে এই ছক প্রাচীন ও প্রসিদ্ধ। এইভাবে দল সাজিয়ে বহু ম্যাচ বের করে নিয়েছেন কোচেরা। আবার বিফলেরও ইতিহাস রয়েছে। ভোট কুশলী প্রশান্ত কিশোর এই ছকে তৃণমূল সাজিয়েছিলেন কি না তা জানা নেই। তবে তৃণমূল জাতীয় স্তরে মাঠে নামার সময় স্ট্রাইকার পরিবর্তন করবে না, তা আন্দাজ করছে রাজনৈতিক মহল। তৃণমূলের হয়ে গোলটা করবেন মমতাই। মাঠে তাই ভোটকুশলী পিকে না থাকলেও তাঁর ছকের অনেকটা মিলিয়েই খেলবে তৃণমূল। তা অভিপ্রেত। পুরনো টিম ম্যানেজম্যান্টের ওপরই ভরসা রেখেই তাই ২০২৬ পর্যন্ত আইপ্যাকের সঙ্গে চুক্তি করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনে ল্যান্ডস্লাইড ভিক্ট্রি পেয়েছে তৃণমূল (TMC)। ২৯৪ বিধানসভার ২১৩ আসনেই জয়লাভ করেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল। এই জয়ে নিঃসন্দেহে বড় অবদান রয়েছে ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোরের। অন্তত এমনটাই মনে করে রাজনৈতিক মহল। কারণ, ভোটের অনেক আগেই পিকে বলেছিলেন বিজেপি ২ অঙ্ক ছোঁবে না। খাতায় কলমে মিলেছে পিকের মুখের কথা। ৭৭-এই থামতে হয়েছে বিজেপিকে। বাংলা জয়ের পর এ বার জাতীয় স্তরে রাজনৈতিক মাটি শক্ত করতে চায় তৃণমূল। সর্বভারতীয় সম্পাদকের দায়িত্ব পেয়ে এমনই ইঙ্গিত দিয়েছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই মর্মেই টিম আইপ্যাকের সঙ্গে চুক্তি সেরে নিল তৃণমূল। আগামী ৫ বছর অর্থাৎ ২০২৬ সাল পর্যন্ত হাতে হাত মিলিয়ে কাজ করবে আইপ্যাক। কিন্তু ভোটকুশলী হিসেবে প্রশান্ত কিশোরকে পাচ্ছে না তৃণমূল।
চুক্তি অনুযায়ী, পঞ্চায়েত থেকে পুরসভা, প্রত্যেকটি নির্বাচনেই মমতার হয়ে মাঠে নামবে টিম আইপ্যাক। নেতৃত্বে থাকবেন ৯ জন। তবে প্রশান্ত কিশোর ছাড়া কেমন পার্ফরম্যান্স হবে আইপ্য়াকের, সেটাই এখন দেখার বিষয়। ২০২৬ পর্যন্ত তৃণমূলের হয়ে কাজ করবে আইপ্যাক। তার মধ্যে ২০২৪ সালে লোকসভা নির্বাচন রয়েছে। সেই নির্বাচন নিয়েও জল্পনা তুঙ্গে। জাতীয় স্তরে মোদী বিরোধিতার মুখ হতে পারেন মমতা। এই নিয়ে আগেই উত্তাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়া।
আগুনে ঘি ঢেলেছে পিকের পাওয়ার সাক্ষাৎ। কয়েকদিন আগেই মহারাষ্ট্রে জাতীয়তাবাদী কংগ্রেস পার্টির প্রধান শরদ পাওয়ারের সঙ্গে বৈঠক সেরেছেন প্রশান্ত কিশোর। সেখান থেকেই জাতীয় স্তরে জল্পনা, হয়তো মোদী বিরোধী ফ্রন্টের নেপথ্যে থাকতে পারেন তিনি। কিন্তু খোদ পিকেই সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যমে বাংলার নির্বাচনের পর সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, “আমি যা করছি আর চালিয়ে যেতে চাই না। অনেক করে ফেলেছি। এখন একটা ব্রেক প্রয়োজন। আমি এখান থেকে বেরতে চাই।” সূত্রের খবর, পিকে চাইলেও তাঁকে যেতে দিতে নারাজ তৃণমূল। আইপ্যাক ও তৃণমূল দুই পক্ষই পিকেকে চেয়েছে। এখন ক্যাপ্টেনকে নিয়েই প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে ডায়মন্ড ছক সাজাবে আইপ্যাক? না কি পিকের দেখিয়ে যাওয়া ছকেই খেলা চলবে, সেটাই আলোচ্য।
আরও পড়ুন: ‘তারিখ পে তারিখ’! সারদা মামলায় সিবিআইয়ের উপর ক্ষুব্ধ হাইকোর্ট