কলকাতা : একাধিকবার ধর্ষণের (Physical Assault) শিকার মাটিয়ার নির্যাতিতা নাবালিকা। চিকিৎসকদের ‘ফরেন্সিক মেডিকো লিগাল’র প্রাথমিক রিপোর্টে উঠে এল এমনই শিউরে ওঠার মতো তথ্য। আর জি কর মেডিকেল কলেজ সূত্র জানা গিয়েছে,চিকিৎসকদের পর্যবেক্ষণে উঠে এসেছে এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য। সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, চিকিৎসকদের পর্যবেক্ষণ ওই ১১ বছরের নাবালিকার উপর দীর্ঘ সময় ধরে একাধিক বার ভয়ঙ্কর অত্যাচার চলেছে। মেডিকো লিগাল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার পর পুলিশের হাতে প্রাথমিকভাবে যে রিপোর্ট দেওয়া হয়েছে, তাতে স্পষ্ট করে বলা হয়েছে, বালিকা একাধিকবার নির্যাতনের শিকার। পাশবিক অত্যাচার চলেছিল তাঁর উপর। সেই কারণেই ওই নাবালিকা কিশোরীর গোপনাঙ্গ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, এমনকী ক্ষুদ্রান্ত্রও পর্যন্ত ছিন্ন ভিন্ন হয়ে গিয়েছে।
এমন পাশবিক অত্যাচার দেখে আর জি কর হাসপাতালের চিকিৎসকদের অনেকেই এই ধর্ষণের ঘটনাকে নির্ভয়াকাণ্ডের সঙ্গে তুলনা করছেন। চিকিৎসকদের অনুমান, এক্ষেত্রে হয়ত ধারালো কোনও অস্ত্র দিয়ে আঘাত করা হয়নি। কিন্তু এতটাই তার অভিঘাত, তাতে নাবালিকার ক্ষুদ্রান্ত্র পর্যন্ত ছিন্ন ভিন্ন হয়ে গিয়েছে। একবার নয়, একাধিকবার পাশবিক অত্যাচার চলেছে ওই নাবালিকার উপর।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, নির্যাতিতার বুকে সংক্রমণ ধরা পড়েছে। শুক্রবার রাতে আর জি করে ভর্তির পর, শনিবারই নাবালিকার শারীরিক অবস্থা অত্যন্ত সঙ্কটজনক বলে জানানো হয়েছিল। তারপর থেকে এখনও কার্যত যমে মানুষে টানাটানি চলছে। নির্যাতিতার শারীরিক অবস্থা এখনও অত্যন্ত সঙ্কটজনক বলেই জানাচ্ছে আর জি কর কর্তৃপক্ষ।
উত্তর ২৪ পরগনার মাটিয়া থানা এলাকার বাসিন্দা ওই নাবালিকাকে বৃহস্পতিবার রাত থেকেই খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। মেয়ে সারারাত বাড়ি না ফেরায় নির্যাতিতা নাবালিকার বাবা মাটিয়া থানায় অভিযোগও দায়ের করেন। তাঁর সন্দেহ হয়, কেউ তাঁর মেয়েকে অপহরণ করে নিয়ে গিয়েছে। এরপর শুক্রবার রাতে মাটি থানা এলাকা থেকেই রক্তাক্ত, অচৈতন্য অবস্থায় উদ্ধার করা হয় কিশোরীকে। প্রথমে তাঁকে স্থানীয় গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করা হলেও সেই রাতেই তাঁকে স্থানান্তরিত করা হয় কলকাতায়। কলকাতায় আর জি কর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে রাত ১ টা থেকে ৩ টে পর্যন্ত প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে তাঁরা গোপনাঙ্গে অস্ত্রোপচার করা হয়। আর জি কর হাসপাতালে তাঁর চিকিৎসার জন্য পাঁচ সদস্যের মেডিকেল টিমও গঠন করা হয়েছে। তাতে রয়েছেন, স্ত্রী রোগ বিশেষজ্ঞ, সার্জারি, মেডিসিন, সাইকোলজি বিভাগের চিকিৎসক।
এদিকে এই নারকীয় ঘটনার তদন্ত নেমে পুলিশ ইতিমধ্যেই ওই নাবালিকার মাসি ও তাঁর প্রেমিককে গ্রেফতার করেছে। জানা গিয়েছে, মোবাইলে গেম খেলার প্রলোভন দেখিয়ে ওই মাসি নাবালিকাকে কিছু টাকা ও একটি মোবাইল তার প্রেমিকের কাছে পৌঁছে দিতে বলে। এরপর থেকেই আর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না নাবালিকার। শুক্রবার ধৃতদের আদালতে পেশ করা হলে বিচারক তাদের ছয় দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।