Railway Minister: ‘বাড়ির বাল্ব নয়, পয়েন্টে লাগালাম আর জ্বলতে শুরু করল’, রাজ্যে এসে ‘করমণ্ডল কবচ’ নিয়ে মমতাকে জবাব রেলমন্ত্রীর

Railway Minister: ট্রেন দুর্ঘটনা রুখতে ঘটা করে কবচের মতো সুরক্ষাব্যবস্থা চালু করা হলেও করমণ্ডল-বিপর্যয়ের সাক্ষী থেকেছে ওড়িশার বাহানাগা। রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবকে পাশে দাঁড় করিয়ে কার্যত এভাবেই কটাক্ষ করেছিলেন এ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁরই পাল্টা জবাব এই শহরে এসে দিলেন রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব।

Railway Minister: ‘বাড়ির বাল্ব নয়, পয়েন্টে লাগালাম আর জ্বলতে শুরু করল', রাজ্যে এসে ‘করমণ্ডল কবচ’ নিয়ে মমতাকে জবাব রেলমন্ত্রীর
মমতাকে আক্রমণ রেলমন্ত্রীর
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jun 22, 2023 | 12:01 AM

কলকাতা: বাহানাগায় রেল বিপর্যয়ের দিন এ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee) কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবকে (Railway Minister Ashwini Vaishnav) পাশে দাঁড় করিয়ে দুর্ঘটনার কারণ হিসাবে কবচ না থাকাকেই দায়ী করেছিলেন। এবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শহরে এসে জবাব দিলেন রেলমন্ত্রী। বললেন, ৯০ এর দশকে যখন বিশ্ব জুড়ে রেল দুর্ঘটনা আটকাতে প্রযুক্তির উন্নয়ন করা হচ্ছে তখন যাঁরা রেলমন্ত্রী বা রেলমন্ত্রীকে দায়িত্বে ছিলেন তারা তখন ভারতবর্ষের রেল দুর্ঘটনা আটকাতে ব্যবস্থা নিলেন না কেন? কেন তখন যন্ত্র তৈরি করতে পারলেন না? এখন রাজনীতি করা হচ্ছে কেন? আমি স্পষ্ট করে জানাচ্ছি, বাহানাগা রেল দুর্ঘটনার সঙ্গে কবচের কোনও সম্পর্ক নেই।

বুধবার হাওড়া ময়দানে আসেন রেলমন্ত্রী 

বুধবার ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো প্রকল্পের গঙ্গার নিচের মেট্রোর কাজ পরিদর্শন করতে হাওড়া ময়দান স্টেশনে আসেন রেলমন্ত্রী। সেখানেই রেল বিপর্যয় নিয়ে বলতে গিয়ে তিনি স্পষ্ট ভাষায় বলেন, “বাহানাগা রেল বিপর্যয়ের সঙ্গে কবচের কোনও সম্পর্ক নেই। লুপ লাইনের গন্ডগোলের জন্যই এই দুর্ঘটনা ঘটেছিল। কিন্তু অনেকেই এই ঘটনা নিয়ে রাজনীতি করার চেষ্টা করছেন। আমি রাজনীতি করব না। কিন্তু যাঁরা এই রাজনীতি করার চেষ্টা করছেন, তাঁদের একটা কথাই জিজ্ঞেস করতে চাই, ৯০ এর দশকে যখন বিশ্ব জুড়ে ট্রেন দুর্ঘটনা আটকাতে যন্ত্রপাতির আধুনিকীকরণ করা হচ্ছে, তখন ভারতবর্ষে করা হল না কেন? ২০১৪ তে নরেন্দ্র মোদির সরকারের আসার আগে ট্রেন দুর্ঘটনা আটকাতে অত্যাধুনিক যন্ত্রের ব্যবহার করা হল না কেন?” 

রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মধ্যে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শহরে এসে বাহানাগা রেল দুর্ঘটনা নিয়ে ঘুরিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই সপাটে জবাব দিলেন তিনি। নব্বইয়ের দশকে যেহেতু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাজপেয়ী সরকারের রেলমন্ত্রী ছিলেন, তাই তাঁকেই ঘুরিয়ে এই জবাব বর্তমান রেলমন্ত্রীর। ঘটনার পরের দিন অর্থাৎ ৩ জুন এরা যে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘটনাস্থলে পৌঁছে গিয়ে রেলমন্ত্রীকে পাশে দাঁড় করিয়ে এই দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে রেলমন্ত্রকের কর্তব্যের গাফিলতিকেই ঘুরিয়ে দায়ী করেছিলেন। কিন্তু রেলমন্ত্রী সেই সময় এই বিপর্যয়ের কারণে এতটাই বিপর্যস্ত ছিলেন তা নিয়ে স্পষ্ট করে কোন উত্তর দেননি। তবে মন্ত্রী ঘনিষ্ঠমহল সূত্রে খবর, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্যের উত্তর দিতে তিনি সময় খুঁজছিলেন। যেটা কলকাতা শহরে পা দিয়েই সরাসরি না হলেও ঘুরিয়ে দিয়ে দিলেন। স্বাভাবিকভাবেই এই দুর্ঘটনার কারণ নিয়ে যে ফের রাজনৈতিক টানাপোড়েন শুরু হল তা বলাবাহুল্য। 

“এটা কোন বাড়ির বাল্ব নয়। পয়েন্টে লাগালাম আর জ্বলতে শুরু করল”

এদিন রেলমন্ত্রী হাওড়া ময়দান স্টেশন থেকে ট্রলিতে গঙ্গার নিচে থাকা লাইন দিয়ে এসপ্ল্যানেড স্টেশন পর্যন্ত পৌঁছান। গোটা রাস্তা এবং মেট্রো স্টেশনগুলির অবস্থা কী হয়ে রয়েছে তা তিনি খতিয়ে দেখেন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন কেএমআরসিএল এর কর্তারা, কলকাতা মেট্রোর জেনারেল ম্যানেজার সহ শীর্ষকর্তারা। এরপর রাতে ফেয়ারলি প্লেসে দক্ষিণ পূর্ব রেল, পূর্ব রেল এবং কলকাতা মেট্রো রেল ম্যানেজারদের সঙ্গে রিভিউ বৈঠক করেন। তবে এদিন হাওড়া ময়দান স্টেশনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বাহানাগা স্টেশন রেল বিপর্যয় নিয়ে প্রথম থেকেই স্পষ্ট ভাষায় উত্তর দেন। তিনি কবচ নিয়ে বলতে গিয়ে বলেন, “এটা কোনও বাড়ির বাল্ব নয়। পয়েন্টে লাগালাম আর জ্বলতে শুরু করল। ট্রেনে এবং রেললাইনে কবচ বা অটোমেটিক ট্রেন প্রটেকশন সিস্টেম বসানোর আগে এবং পরে নানান পরীক্ষা করতে হয়। যা যথেষ্টই সময় সাপেক্ষ। পার্বত্য এলাকা হোক বা সমতল, কবচ এর বৈশিষ্ট্য সম্পূর্ণ ভিন্ন হয়। কবচ বসানোর পর সেফটি ইন্টিগ্রেটেড লেভেলের সার্টিফিকেট পাওয়া অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়ে। যখন এই কবচ বসানোর কাজ শুরু হয়, তখন এর সম্পর্কে রেলের কর্মী থেকে আধিকারিকরা ছিলেন অনভিজ্ঞ। তাই প্রথম বছরে মাত্র ৪০ কিমি লাইনে এই কবচ বসানো হয়েছিল। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে অত্যন্ত দ্রুতগতিতে কাজ করে প্রায় ২০০০ কিমি রেললাইনকে এই কবচের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে।” যা আগামী কয়েক বছরের মধ্যে বার্ষিক ৬০০০ কিমিতে পৌঁছে যাবে বলে তিনি দাবি করেন।