‘আমরা মায়ের কোনও চিকিৎসা করাতে পারছি না’, বৃদ্ধা পড়ে এসএসকেএমের মেঝেতে, হাউ হাউ করে কাঁদলেন মেয়ে

TV9 Bangla Digital | Edited By: সায়নী জোয়ারদার

Jul 20, 2021 | 12:38 PM

SSKM: করোনা কালে একদিকে সাধারণ রোগীর চিকিৎসা নিয়ে একটা সমস্যার অভিযোগ যখন বারবার উঠেছে, একইসঙ্গে কলকাতার সরকারি হাসপাতালগুলির রেফার রোগ নিয়েও অভিযোগ রোজকার।

আমরা মায়ের কোনও চিকিৎসা করাতে পারছি না, বৃদ্ধা পড়ে এসএসকেএমের মেঝেতে, হাউ হাউ করে কাঁদলেন মেয়ে
নিজস্ব চিত্র।

Follow Us

কলকাতা: ১৮ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে অসুস্থ বৃদ্ধাকে ফেলে রাখার অভিযোগ উঠল এসএসকেএমের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, এর আগে এনআরএস হাসপাতালেও ওই রোগীকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। কিন্তু তারা ভর্তি নেয়নি। এসএসকেএমে রেফার করে দেয়। কিন্তু এসএসকেএমে পৌঁছনোর পর থেকে চরম বিপদের মুখে তাঁদের পড়তে হয় বলে অভিযোগ বৃদ্ধার ছেলের। এদিকে ক্রমেই সঙ্কটজনক হচ্ছে রোগীর অবস্থা। আপাতত এসএসকেএমের জরুরি বিভাগে নিয়ে যাওয়া হয়েছে তাঁকে।

মুর্শিদাবাদের বাসিন্দা নূর খাতুনের সম্প্রতি ব্রেন স্ট্রোক হয়। এরপরই শুরু হয় মাথায় রক্তক্ষরণ। পরিস্থিতি জটিল হওয়ায় সোমবার সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। এর আগে নীলরতন সরকার হাসপাতালেও নিয়ে যাওয়া হয় ওই রোগীকে। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেয়, তারা এই চিকিৎসা করে না। এ চিকিৎসা একমাত্র এসএসকেএমেই করানো হয়।

এদিকে এসএসকেএমে আনা হলেও রাতভর ওই মহিলাকে ফেলে রাখা হয়। পরিবারের দাবি, হাসপাতাল থেকে বলা হয় মঙ্গলবার আউটডোরে দেখার পর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে ওই রোগীকে কোথায় নেওয়া হবে। হাসপাতালের মেঝেতে শুয়ে ১৭-১৮ ঘণ্টা কেটে যায় ওই মহিলার। পরে আউটডোর খুললে সেখানে চিকিৎসকরা দেখে জানান, রোগীর অবস্থা ভাল নয়। কিন্তু হাসপাতালে কোনও বেডও নেই বলে জানানো হয়। পাঠিয়ে দেওয়া হয় এমার্জেন্সিতে।

এদিকে রোগীর অবস্থা ক্রমেই সঙ্কটজনক হচ্ছে। রীতিমত কাতরাচ্ছেন। শরীরে চেতনা নেই। বাঁ দিকটা একেবারেই অসাড়। রোগীর মেয়ের কথায়, “গাড়ি ভাড়া দিতে দিতে আমরা শেষ হয়ে যাচ্ছি। আমরা চার ভাই বোন পাঁচটা ডাক্তার পাঁচটা হাসপাতাল ঘুরে ঘুরে বেড়াচ্ছি। আমাদের মায়ের কোনও চিকিৎসা হচ্ছে না। আমরা মায়ের কোনও চিকিৎসা করাতে পারছি না।” প্রসঙ্গত, নীলরতন সরকার হাসপাতাল ও চিত্তরঞ্জন হাসপাতালেও ওই রোগীকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। কিন্তু দুই জায়গা থেকেই জানানো হয়, এ রোগের চিকিৎসা এখানে হয় না।

করোনা কালে একদিকে সাধারণ রোগীর চিকিৎসা নিয়ে একটা সমস্যার অভিযোগ যখন বারবার উঠেছে, একইসঙ্গে কলকাতার সরকারি হাসপাতালগুলির রেফার রোগ নিয়েও অভিযোগ রোজকার। এ প্রসঙ্গে মেডিক্যাল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের মৃদুল সরকার জানান, “এটা আজ নতুন নয়। যখন একটা জেলা থেকে কোনও রোগী কলকাতায় আসে, একাধিক হাসপাতালে ঘোরে। কোথাও সুযোগ পায়, কোথাও পায় না। অনেকে চিকিৎসার অভাবে মারাও যায়। আমাদের স্বাস্থ্যক্ষেত্রের অব্যবস্থা এই ঘটনাগুলির প্রমাণ। আগের সরকারের আমলেও এ ঘটনা ঘটেছে। এখনও ঘটছে। এই পরিকাঠামোর যদি বদল না আসে, সরকার যদি জেলা থেকে আসা রোগীদের ভর্তির ক্ষেত্রে কোনও নির্দিষ্ট ব্যবস্থা না রাখে তা হলে এ অবস্থা চলবেই।” আরও পড়ুন: ‘অপ্রতিরোধ্য মমতা’কে রুখতে নয়া কৌশল, ২১ জুলাই বিজেপির ‘মানবাধিকার দিবস’ পালন

Next Article