কলকাতা: ফের কঠোর হচ্ছে বিধি। এবার শহরে বিমান ওঠানামায় কড়া নির্দেশিকা জারি করল নবান্ন। শহরে ব্রিটেনের বিমান অবতরণের ক্ষেত্রে জারি করা হয়েছে নিষেধাজ্ঞা। আগামী ৩ জানুয়ারি ২০২২ থেকে এই নিষেধাজ্ঞা বলবৎ করা হচ্ছে। বৃহস্পতিবারই এ সংক্রান্ত একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে নবান্ন। যেখানে সাক্ষর রয়েছে অতিরিক্ত মুখ্যসচিব বিপি গোপালিকার।
ওমিক্রনে কড়া হচ্ছে রাজ্য। ভিন দেশ থেকে এলে যাত্রীদের কোভিড পরীক্ষা অত্যাবশ্যক করা হয়েছে। নিজের খরচেই সেই পরীক্ষা করাতে হবে। সূত্রের খবর, এ নিয়ে অসামরিক বিমানমন্ত্রককে চিঠিও দিয়েছে রাজ্য। এদিন বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, কেন্দ্রের তালিকা অনুযায়ী ব্রিটেনের মতো ‘ঝুঁকিপূর্ণ দেশ’ থেকে কোনও বিমান আপাতত কলকাতায় নামবে না।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গঙ্গাসাগরে সাংবাদিক সম্মেলন করে ব্রিটেনের প্রসঙ্গ তুলে ধরেছিলেন। এই ব্রিটেনের বিমানের অবতরণের ক্ষেত্রে কলকাতায় কী করা হবে তা পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। অসামরিক বিমানমন্ত্রক কী করছে সে দিকে নজর রাখা হবে। এরই মধ্যে রাজ্যের অতিরিক্ত মুখ্যসচিব এবং স্বরাষ্ট্রসচিব বিপি গোপালিকা অসামরিক বিমানমন্ত্রকের সচিবকে তিনি চিঠি দিয়েছেন। সেখানে ব্রিটেন থেকে কলকাতায় সমস্ত উড়ানে নিষেধাজ্ঞার কথা বলা হয়েছে। অর্থাৎ ব্রিটেন থেকে আসা কোনও বিমান আগামী ৩ জানুয়ারি থেকে আর কলকাতায় অবতরণ করতে পারবে না। অন্যান্য ঝুঁকিপূর্ণ দেশের ক্ষেত্রে আরটিপিসিআর টেস্ট অত্যাবশ্যক করা হয়েছে।
ইতিমধ্যেই আট রাজ্যকে চিঠি দিয়ে প্রস্তুত থাকতে বলেছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক। মৃত্যুর হার কমাতে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। হাসপাতালগুলি প্রস্তুত রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ও করোনা টিকাকরণে যাতে আরও বেশি গতি আনা যায়, সেই নির্দেশও দেওয়া হয়ছে।
মুম্বই ও দিল্লি, এই দুই শহরে করোনা সংক্রমণ সবথেকে বেশি হারে বৃদ্ধি পেলেও পিছিয়ে নেই কলকাতা। তালিকায় রয়েছে গুরগাঁও, চেন্নাই, বেঙ্গালুরু, আহমেদাবাদ। কলকাতায় মিলছে গোষ্ঠী সংক্রমণের ইঙ্গিত। ইতিমধ্যেই জেলায় জেলায় সতর্কবার্তা দিয়েছে স্বাস্থ্যভবন। প্রকাশ্যে আসছে একের পর এক বিস্ফোরক তথ্য।
আশঙ্কা করা হচ্ছে, এক সপ্তাহের মধ্যেই একেবারে চূড়ায় পৌঁছতে পারে সংক্রমণ। স্বাস্থ্য দফতরের আশঙ্কা দৈনিক সংক্রমণ ৩০-৩৫ হাজারও ছুঁতে পারে। নমুনা পরীক্ষার হারেও বিপদ বার্তা দিয়েছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর। স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা জানাচ্ছেন, বেসরকারি ল্যাবে অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পেয়েছে টেস্ট। হাতে আসা তথ্য নতুন করে ভয় ধরাচ্ছে মনে।
হোয়াটসঅ্যাপের বিভিন্ন গ্রুপে জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিকদের সচেতনতার বার্তা দেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্য দফতরের শীর্ষ কর্তাদের তরফে এই সতর্কবার্তা জারি করা হয়েছে। সেখানে স্পষ্ট বলা হয়েছে. প্রাইভেট ল্যাবগুলিতে নমুনা পরীক্ষার হার সরলরেখা বরাবর শীর্ষের দিকে এগোচ্ছে। সেদিক থেকে সরকারি ল্যাবগুলিতে নমুনা পরীক্ষা কার্যত হচ্ছে না বলেই অভিযোগ। সেক্ষেত্রে সরকারি ল্যাবগুলিকে নমুনা পরীক্ষা দ্বিগুণ-তিন গুণ করতে বলা হয়েছে। আরটিপিসিআর করার কথা বলেছেন রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকরা।