কলকাতা : এবার কি রাজনীতি ছাড়তে চলেছেন রুদ্রনীল ঘোষ (Rudranil Ghosh)? বিষয়টি নিয়ে এখন রাজ্য রাজনীতিতে জোর জল্পনা ছড়িয়েছে। TV9 বাংলাকে রুদ্রনীল ঘোষ জানিয়েছেন,বিজেপি করায় তিনি অভিনয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। রুদ্রনীলের কথায়, তিনি অফার পাচ্ছেন। কিন্তু যেহেতু তিনি বিজেপির সঙ্গে যুক্ত, তাই তাঁকে বাদ দিয়ে দেওয়া হচ্ছে। সেই সঙ্গে তিনি আরও বলেছেন, “আমাকে পেট চালাতে হবে। আমি সিনেমা ও থিয়েটারে অভিনয় করি। এটা করে আমার পেট চলে। সত্যিই যদি রাজনীতি করে আমি কাজ না পাই, তাহলে আমাকে রাজনীতি ছেড়ে দিতে হবে।”
যদিও রুদ্রনীল ঘোষ সরাসরি বলেননি যে তিনি বিজেপি ছাড়তে চলেছেন। কিন্তু রাজনীতি ছাড়ার যে আভাস তিনি দিয়েছেন, তার অর্থ বিজেপিকেও ছাড়তে হবে তাঁকে। এই বিষয়ে বঙ্গ বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্যের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন,”একটা সুস্থ স্বাভাবিক সমাজে একজন মানুষ যদি নিজের রাজনৈতিক মতামত, মতাদর্শকে ব্যক্ত করতে গিয়ে, তাঁর জীবন জীবিকা লুঠ হয়ে যায়, তাহলে আমরা কোন সমাজে আছি? কোন আইনের শাসন এখানে আছে? কোন সরকার এখানে আছে?” সেই সঙ্গে বাংলার সাংস্কৃতিক গরিমার কথা উল্লেখ করে শমীকবাবুর আরও সংযোজন, “আমাদের মনে রাখতে হবে আমরা কোথা থেকে এসেছি, আমরা কোথায় যাব।”
বিষয়টি নিয়ে রুদ্রনীল ঘোষ অবশ্য জানান, “প্রথমত আমি পেশাদার রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব নই। যেমন আর পাঁচজন মানুষ যিনি চাকরি করেন, ব্যবসা করেন এবং রাজনীতি সচেতন মানুষ। ঠিক তেমনই আমাদের রাজ্যের বিভিন্ন ঘটনা, যা যা ঘটছে, সেই অনুযায়ী আমরা আমাদের রাজ্যকে কোন জায়গায় দেখতে চাই, সেই হিসেবে কখনও শাসক পক্ষে, কখনও বিরোধীদের পক্ষে অবস্থান নিই। যাঁরা বিজেপির সঙ্গে যোগাযোগে ছিলেন, তাঁদের কাজের অবস্থা ক্রমান্বয়ে দেখতে পেয়েছি। রাজনীতি অবশ্যই ভালবাসি। ছোটবেলা থেকে রাজনীতি করি। শাসক দলের সঙ্গে থেকে সুবিধাজনক অবস্থান নয়। কেউ বলতে পারবেন না আমি খুব খারাপ অভিনয় করি। কিন্তু ২০২১ সালে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর থেকেই সেই অনুপাতে আমার কাজ অসম্ভব রকম কমে গিয়েছে। ৩০ দিনের মধ্যে হয়ত দুইদিন বা একদিন কাজ করি। এইভাবে চলা যায় না। আমাদের কাছে পেটটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। যাঁরা বিজেপিতে এসে আবার ফিরে গিয়েছেন, তাঁরা মুখে যাই বলুন না কেন – এই সংক্রান্ত একটি বিষয় রয়েছে।”
সেই সঙ্গে রুদ্রনীলের আরও অনুরোধ, “মুখ্যমন্ত্রী নিজেও একজন শিল্পী। তিনি ছবি আঁকেন, কবিতা লেখেন, গান লেখেন। শিল্পীদের জন্য অনেক কিছু করার চেষ্টা করেন। তাঁর দলেরই কেউ যেন এই ধরনের ভয়ের বাতাবরণ তৈরি না করেন। এটা আমার তাঁর কাছে অনুরোধ।” বিজেপি নেতৃত্বের কাছেও বিষয়টি জানিয়েছেন তিনি। তাঁর বক্তব্য, বিকল্প কিছুর ব্যবস্থা করুক বিজেপি। কারণ, “সবার উপর পেট সত্য, তাহার উপর নাই।”
বিষয়টি নিয়ে রুদ্রনীলকে কটাক্ষ করেছেন তৃণমূল নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার। বলেন, “এ রকম তো কোনও ঘটনা নেই। তিনি টালিগঞ্জের বিভিন্ন প্রোডাকশনে কাজ করতেন, আবার কাজ করবেন। দুই বছর করোনার সময়ে অনেকের অনেক সমস্যা গিয়েছে। তিনি অন্য সমস্যাকে ঢেকে রাখার চেষ্টা করছেন না তো? তিনি রাজনৈতিকভাবে এত ব্যস্ত ছিলেন, প্রচারের দায়িত্বে ছিলেন, সেখানে তো ২৪ ঘণ্টাই দায়িত্ব ছিল। সেই সময় জীবিকা নির্বাহের কাজ করবেন কীভাবে। কিন্তু তথাগতবাবু যে কামিনী কাঞ্চন যোগের কথা বলেছেন, সেগুলি সম্পর্কেও উনি বললে ভাল করতেন।”
আরও পড়ুন : Rudranil Ghosh Interview: ‘দুয়ারে সরকারের প্ল্যান আমার’, মমতার ‘তুরুপের তাসকে’ ট্রামকার্ড রুদ্রনীলের!
আরও পড়ুন : Rudranil Ghosh Interview: ‘গিরগিটি’, ‘টিকটিকি’ বলে ট্রোলড হয়েছেন, সে সব দেখে হাসতেন রুদ্র, কেন জানেন?