কলকাতা: ব্রিকস, ইন্দো জাপান কনফারেন্সে অংশগ্রহণ তো করেইছিলেন, তিনি নাকি লড়েছিলেন লোকসভা নির্বাচনেও। এবার তদন্তকারীদের কাছে এমনটাই দাবি করলেন সনাতন রায় চৌধুরী (Sanatan Roy Chowdhury)। ইতিমধ্যেই তদন্তকারীদের হাতে এসেছে ২০০৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের প্রার্থী তালিকা। তাতে দেখা যাচ্ছে, দমদম কেন্দ্রে #0093DD পার্টির পাশে পাশে প্রার্থী হিসাবে নাম রয়েছে সনাতনের। তিনি ভোট পেয়েছিলেন ৫,২৮৫ টি। শতাংশের হিসাবে তা ০.৫৪।
তদন্তকারীদের সনাতন জানিয়েছেন, ২০০৯ সালে লোকসভা ভোটে তিনি লড়েছিলেন। দমদম কেন্দ্র থেকে লোক জনশক্তি পার্টির টিকিটে লড়েছিলেন তিনি। এবার আরও এক চাঞ্চল্যকর দাবি করলেন সনাতন রায় চৌধুরী। দেবাঞ্জন দেবের তদন্ত এখনও গুটিয়ে উঠতে পারেননি তদন্তকারীরা। তারই মধ্যে আবার সনাতন রায় চৌধুরী! তদন্তকারীদের দাবি, এর হাত আরও অনেক বেশি লম্বা!
কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবী সনাতন যা যা দাবি করছেন, তা শুনে রীতিমতো স্তম্ভিত তদন্তকারীরা। জেরায় সনাতন তদন্তকারীদের কাছে জানিয়েছেন, ২০১৩ সালের সেপ্টেম্বর ইন্দো-জাপান কনফারেন্সে অংশ গ্রহণ করেছিলেন। ভারতের প্রতিনিধি হিসাবে ইন্দো-জাপান বিজনেস সামিট টোকিওতে অংশগ্রহণ করেছিলেন তিনি। এরপর দক্ষিণ আফ্রিকায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের প্রতিনিধি হয়ে ব্রিকস সম্মেলনে গিয়েছিলেন। যে সম্মেলনে হাজির ছিলেন খোদ প্রধানমন্ত্রীও।
সনাতন আদতে কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবী। কিন্তু বেশ কয়েকমাস যাবৎ তিনি দাবি করে আসছিলেন, রাজ্য সরকারের স্ট্যান্ডিং কাউন্সিলের সদস্য, সিবিআইয়ের আইনজীবী, মুখ্যমন্ত্রী দফতরের উপদেষ্টা হিসাবে। কিন্তু শেষের দাবিটি করতে গিয়েই ফাঁদে পড়েছিলেন সনাতন। তালতলা থানার ওসির কাছে গত ২৫ জুন সনাতন ফোন করে মুখ্যমন্ত্রী দফতরের উপদেষ্টা বলে পরিচয় দেন। তখনই সন্দেহ হয় পুলিশ কর্তার। তিনি একটি স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করেন।
এরপর গোটাটা প্রকাশ্যে আসতে শুরু করে ৩০ জুন। গড়িয়াহাট থানায় আরও একটি অভিযোগ দায়ের হয়। ভুয়ো পরিচয় ভাঙিয়ে গড়িয়াহাটের একটি ১০ কোটি টাকার সম্পত্তি আত্মসাৎ করার চেষ্টা করছিলেন সনাতন। মঙ্গলবার সিঁথি থেকে গ্রেফতার করা হয় সনাতনকে।
আরও পড়ুন: রুদ্রর সঙ্গে ছবি, বাড়িতে বিজেপির ‘সদস্যতা’ রসিদও! ধৃত সনাতন যেন দ্বিতীয় দেবাঞ্জন
তদন্তে জানা গিয়েছে, হাইকোর্টের বিচারপতির সই এবং সিল জাল করে ভুয়ো কোর্ট অর্ডার বের করে নিয়েছিল সনাতন। সেই জাল নথি দিয়ে সম্পত্তি হাতানোরও চেষ্টা হয়েছিল। ৮ ম্যান্ডেভিলা গার্ডেনের মালিক পুলিশকে অভিযোগ জানিয়েছেন, গত ২৭ জুন তিনি একদিনের জন্য বাইরে গিয়েছিলেন। ফিরে এসে দেখেন, পরিবার সূত্রে পাওয়া ওই সম্পত্তির অন্দরে থাকা অফিসে জাঁকিয়ে বসে রয়েছেন ধৃত সনাতন রায়চৌধুরী। তিনি নিজেকে ‘ডক্টর’ বলেও পরিচয় দেন। সম্পত্তির মালিককে সনাতন জানান, হাইকোর্টের অর্ডার পেয়ে এই সম্পত্তি তিনি দখল করেছেন। এরপরই ওই মালিক গড়িয়াহাট থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।