কলকাতা: শুক্রবারই সারদা-কাণ্ডে অতিরিক্ত চার্জশিট পেশ করেছে এনফোর্সমেন্ট ডাইরেক্টটরেট বা ইডি। সেখানে দুই সাংবাদিকের নাম রয়েছে। এর মধ্যে একজন কুণাল ঘোষ। যিনি আবার তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদকও বটে। এই সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিটে নাম থাকা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজের উষ্মা প্রকাশ করেন কুণাল। দাবি করেন, চার্জশিটে নাম না থাকলেও এবং টাকা ফিরিয়ে দেওয়ার পরও সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিটে তাঁর নাম আসলে স্নায়ুর চাপ সৃষ্টির একটা কৌশল।
শুক্রবার টুইটার ও ফেসবুকে পৃথক দু’টি পোস্ট করেন কুণাল ঘোষ। টুইটারে কুণাল লেখেন, ‘শুনলাম সারদা মামলায় ইডি আমার নাম অতিরিক্ত চার্জশিটে রেখেছে। ২০১৩ সালে আমি সব তথ্য পেশ করেছি। চার্জশিটে কতজনের মধ্যে আমার নাম ছিল না। বৈধ বেতন ও বিজ্ঞাপনের টাকা স্বেচ্ছায় ফেরত। তবু, আট বছর চার্জশিট !!! কোর্টে বুঝে নেব। এসব করে আমার স্নায়ুতে চাপ দেওয়া যায় না।’
শুনলাম সারদামামলায় ED আমার নাম অতিরিক্ত চার্জশিটে রেখেছে। 2013 সালে আমি সব তথ্য পেশ করেছি। চার্জশিটে কতজনের মধ্যে আমার নাম ছিল না। বৈধ বেতন ও বিজ্ঞাপনের টাকা স্বেচ্ছায় ফেরত। তবু, আট বছর চার্জশিট !!! কোর্টে বুঝে নেব। এসব করে আমার স্নায়ুতে চাপ দেওয়া যায় না।
— Kunal Ghosh (@KunalGhoshAgain) August 27, 2021
অন্যদিকে ফেসবুকে কুণাল ঘোষ লেখেন, ‘EDর চার্জশিট! কতটা মিথ্যা এবং কল্পিত, একটি উদাহরণ দিই। বাকিটা কোর্টে বুঝব। তদন্তকারী এজেন্সি যা খুশি লিখে জড়িয়ে দিতে পারে, কিন্তু তার পরেও লড়াই আছে। বেঙ্গল মিডিয়া ( BMPL) , অর্থাৎ চ্যানেল টেনের প্রতিটি কর্মী এবং প্রতিটি সদস্য জানেন যে সুদীপ্ত সেন যখন শান্তনু ঘোষের কাছ থেকে এটি কেনেন, তখন আমি ত্রিসীমানায় ছিলাম না। এমনকি সুদীপ্ত সেনকে চিনতাম না। আমাদের সঙ্গে আলাপ অনেক পরে, চ্যানেল ১০ তখন চলছে পুরোদমে। অথচ কী অবলীলায় ইডি লিখে দিল আমি বা আমরা কিনিয়েছি। লিখল বটে, বিভ্রান্তি ছড়ালো, কিন্তু কোর্টে প্রমাণ করতে হবে তো। যা ইচ্ছে লিখে দিলেই কাজ শেষ?’
যদিও সূত্রের খবর, সাপ্লিমেন্টারি যে চার্জশিট ইডি দিয়েছে, সেখানে কুণাল ঘোষের ‘স্ট্র্যাটেজি মিডিয়া’ সংস্থার নাম রয়েছে। অন্যদিকে এই অতিরিক্ত চার্জশিটে নাম রয়েছে অপর সাংবাদিক সুমন চট্টোপাধ্যায়ের। তাঁর দু’টি সংস্থার নামও সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে। ইডি-র ভাষায় এই সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিটকে প্রসিকিউশন কমপ্লেনও বলা হয়ে থাকে। বিচারক ইডি-র সেই প্রসিকিউশন কমপ্লেন গ্রহণ করেছেন। এরপরই ইডি-র পক্ষ থেকে চার্জশিটে নাম থাকা ব্যক্তি ও সংস্থাগুলির বিরুদ্ধে বিচার শুরু করার আবেদন জানানো হয়েছে। সেই মতোই আদালতে এ বার শুনানি শুরু হবে বলে জানা গিয়েছে।
ফের সারদা মামলা নিয়ে সক্রিয়তা শুরু করল ইডি। নির্বাচনের আগেও এই মামলায় কুণাল ঘোষ-সহ আরও বেশ কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল। সেই সূত্রে ধরেই এ দিনের চার্জশিট জমা পড়েছে। সূত্রের খবর, কুণাল ঘোষ এবং সুমন চট্টোপাধ্য়ায়া কী ভাবে সুদীপ্ত সেনের সংস্থা সারদা থেকে আর্থিকভাবে লাভবান হয়েছেন, সেই তথ্য আরও বিবরণী-সহ চার্জশিটে তুলে ধরা হয়েছে। প্রসঙ্গত, এর আগে সারদা মামলায় দীর্ঘদিন কারাবাসে থেকেছেন কুণাল ঘোষ। আইকোর চিটফান্ড মামলা গ্রেফতার করা হয় সুমন চট্টোপাধ্যায়কেও। আপাতত দু’জনই জামিনে মুক্ত। আরও পড়ুন: দক্ষিণ কলকাতায় দিনে দুপুরে ‘উধাও’ পার্ক, ঝুলছে ‘তৃণমূল কংগ্রেস কার্যালয়’ লেখা ফ্লেক্স!