দক্ষিণ কলকাতায় দিনে দুপুরে ‘উধাও’ পার্ক, ঝুলছে ‘তৃণমূল কংগ্রেস কার্যালয়’ লেখা ফ্লেক্স!

KMC Area: এই ঘটনা অস্বস্তি বাড়িয়েছে দলের অন্দরে। এ নিয়ে তৃণমূলের নেতৃত্বই দাবি করেছে, এমনটা কেউ করে থাকলে তা অনুচিত হয়েছে।

দক্ষিণ কলকাতায় দিনে দুপুরে 'উধাও' পার্ক, ঝুলছে 'তৃণমূল কংগ্রেস কার্যালয়' লেখা ফ্লেক্স!
নিজস্ব চিত্র।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 28, 2021 | 12:24 AM

কলকাতা: এক সময় যা ছিল শিশুদের খেলার পার্ক। অভিযোগ, এখন সেখানে ওড়ে তৃণমূল কংগ্রেসের কার্যালয়ের ফ্লেক্স। কলকাতা পুরসভার ৯৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাটজুনগরের এই ঘটনা নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক।

দেড় কাঠার জমির উপর তৈরি এই পার্ক আজকের নয়। কমল বসু মেয়র থাকাকালীন উদ্বাস্তু পুনর্বাসন দফতরের জমি জবরদখল মুক্ত করে শিশুদের জন্য এই পার্কটি তৈরি করেছিলেন। সেই ফলক এখনও জ্বলজ্বল করছে সেখানে। প্রাণশঙ্কর সাহা সেই সময় কাউন্সিলর। তাঁর উদ্যোগেই বসানো হয় স্লিপ, দোলনা। কিন্তু দীর্ঘদিন পরিত্যক্ত থাকায় ঝোপ জঙ্গলে ভরে যায় এই এলাকা।

অভিযোগ, মাস কয়েক আগে জমির এক দিকে সাফাই কমপ্যাক্টর স্টেশন তৈরি করে পুরসভা। এরপরই সেখানে ধীরে ধীরে শাসকদলের স্থানীয় নেতারা আনাগোনা শুরু করেন বলে অভিযোগ। জমির বাকি অংশ সাফ করে সেখানে তৃণমূলের দলীয় কার্যালয়ের ফ্লেক্স লাগানো হয়। পুরসভার জমিতে কী ভাবে দলীয় কার্যালয় খোলা হল তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।

কাটজুনগরের এই জমি দীর্ঘদিন পরিত্যক্ত অবস্থায় ছিল। সেখানে দোলনা, স্লিপ থাকলেও এখন আর বাচ্চারা সেখানে যায় না। বলা ভাল, যাওয়ার মতো অবস্থায় নেই পার্কটি। এলাকার বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মীরা। ঝোপ জঙ্গল পরিষ্কার করে ফ্লেক্স লাগিয়ে বুঝিয়ে দিয়েছে এখানে খুব শীঘ্রই দলীয় কার্যালয় হবে শাসকদলের।

স্থানীয়দের বক্তব্য, “আমরা চেয়েছিলাম এলাকায় একটা সুলভ শৌচাগার হোক। যদি তা না হয় একটা ভাল পার্ক থাকুক। বাচ্চা-বৃদ্ধরা সেখানে যেতে পারবেন। জনকল্যাণ উন্নয়নে কিছু করা হোক। কিন্তু এরকম ঘটনা আমরা ভাবতেই পারছি না। রাতারাতি এই শাসকদলের ফ্লেক্স লাগানো আমাদের হতবাক করছে।” বিতর্ক আরও জোরাল হয়েছে, কারণ এই ওয়ার্ড কলকাতা পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য রতন দে’রই ওয়ার্ডে।

এই ঘটনা অস্বস্তি বাড়িয়েছে দলের অন্দরে। এ নিয়ে তৃণমূলের নেতৃত্বই দাবি করেছে, এমনটা কেউ করে থাকলে তা অনুচিত হয়েছে। এটা বাচ্চাদের খেলার জায়গা ছিল। এ প্রসঙ্গে রতন দে’র সঙ্গে টিভি নাইন বাংলার তরফে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, এ বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না। তাই মন্তব্যও করবেন না। এখানেই প্রশ্ন উঠছে, এলাকার কাউন্সিলর, যিনি আবার পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্যও, তাঁর এলাকায় এমন ঘটনা অথচ তিনি তা টেরও পেলেন না!

এ প্রসঙ্গে রতন দে মুখ খুলতে না চাইলেও কলকাতা পুরসভার প্রশাসক ফিরহাদ হাকিম বলেন, “পার্ক থাকলে সেই পার্ককে আবারও ফিরিয়ে আনা হবে। আমাদের সরকার চায় প্রকৃতির সঙ্গে কোনও আপোষ চলবে না। আর ফ্লেক্স লাগিয়ে দিলেই তো পার্টি অফিস করা যাবে না। এগুলি অনেকে থাকে অতি উৎসাহী, করে ফেলে। কোনও পার্ক নিয়ে পার্টি অফিস, তৃণমূল এটাকে কখনওই মদত দেবে না।” যদিও এ বিষয়ে বিজেপির কটাক্ষ, আসলে তৃণমূল তো এখন খেলা হবে মন্ত্রে বিশ্বাসী। মানুষ তাদের জিতিয়ে তৃতীয় বার সরকারের মসনদে বসিয়েছে। তারা এটা খেলা হিসাবেই নিচ্ছে। আরও পড়ুন: ভর সন্ধ্যায় রাস্তায় পড়ে কাতরাচ্ছে যুবক, ভেসে যাচ্ছে রক্তে! প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, পুলিশ এবার একটু কঠোর হোক