Sayantan Basu: রাজ্য কমিটি থেকে নাম বাদ, হোয়াইটস অ্যাপ গ্রুপ থেকে ‘লেফট’ হয়ে গেলেন সায়ন্তন বসু
Sayantan Basu: লোকসভা নির্বাচনের পর থেকে সায়ন্তন নিজেকে একটু আড়ালে রাখতে শুরু করেছিলেন। একুশের নির্বাচনের পরে তা আরও প্রকট হয়ে ওঠে। তারপরই রাজ্য কমিটির নতুন তালিকায় নতুন চমক।
কলকাতা: বিজেপির রাজ্য কমিটি ঘোষণা হয়েছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে, বিদায়ী কমিটির সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু ও সম্পাদক সঙ্ঘমিত্রা চৌধুরীর নাম নেই। রাতেই ঘটে আরও একটি কাকতালীয় ঘটনা। বিজেপির হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে নতুন রাজ্য কমিটির তালিকা ঢোকা মাত্রই সায়ন্তন বসু সেই গ্রুপ ছেড়ে বেরিয়ে যান। বিজেপি সূত্রে তেমনটাই খবর। যদিও এ বিষয়ে সায়ন্তন বসুর সাফ বক্তব্য, “এটাই তো স্বাভাবিক। রাজ্য কমিটিতে না থাকলে, হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে থাকাটা তো নৈতিক নয়। তাই ওই গ্রুপ থেকে বেরিয়ে গিয়েছি।”
যদিও সায়ন্তন বসুর মতো একজন নেতার নাম রাজ্য কমিটির তালিকায় না থাকার বিষয়টি দলের জোর চর্চিত। বিষয়টি নিয়ে বিস্মিত অনেক বিজেপি নেতাও।
প্রসঙ্গত, রাজ্য কমিটির নতুন তালিকা প্রকাশিত হওয়ার পর একটি টুইট করেন সায়ন্তন বসু। তিনি লেখেন, “আমি বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। দিলীপ ঘোষ ও সুকান্ত মজুমদারের প্রতিও আমি কৃতজ্ঞ। শেষ ছ’বছর ধরে আমি দলের প্রতি যে দায়িত্ব পালন করে, আমাকে যে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, তার জন্য আমি কৃতজ্ঞ। আমি আশা করছি, আগামী দিনে নতুন টিম দলকে নতুন জায়গায় পৌঁছে দেব।”
প্রসঙ্গত, সপ্তাহ তিনেক আগেই সিঙ্গুরে বিজেপির রাজ্য নেতৃত্বের তিন দিনের কর্মসূচি ছিল। রাজভবনের সামনে দাঁড়িয়ে এই কর্মসূচির কথা ঘোষণা করেছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। তিনি সেদিন জানিয়েছিলেন, সিঙ্গুরের কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দেবেন সায়ন্তন বসু। কিন্তু লক্ষ্যণীয়ভাবে তাঁকে সিঙ্গুরে সেভাবে দেখা যায়নি। এক্ষেত্রে আরও একটি বিষয় উল্লেখ্য। লোকসভা নির্বাচনের পর থেকে সায়ন্তন নিজেকে একটু আড়ালে রাখতে শুরু করেছিলেন। একুশের নির্বাচনের পরে তা আরও প্রকট হয়ে ওঠে। তারপরই রাজ্য কমিটির নতুন তালিকায় নতুন চমক।
বিজেপি-র নতুন রাজ্য কমিটিতে নাম নেই দীর্ঘ দিন রাজ্য সাধারণ সম্পাদক পদে থাকা সায়ন্তন বসুর- বিষয়টি দলের নেতাদেরও চমকে দিয়েছে। সঙ্গে চমকেছে প্রতিপক্ষও। বুধবার রাতেই বিধাননগরে তাঁর বাড়িতে যান তৃণমূলের কয়েক জন নেতা। সূত্রের খবর, তাঁদের মধ্যে এক জন তৃণমূলের বর্তমান বিধায়ক এবং এক জন প্রাক্তন বিধায়ক ছিলেন। তা হলে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিতে চলেছেন সায়ন্তন? জল্পনা তুঙ্গে।
তবে তৃণমূল নেতাদের এক জনের দাবি, এই বৈঠক নিছকই সৌজন্যমূলক। পুরনো পরিচিত হিসাবেই তাঁরা সায়ন্তনের বাড়িতে গিয়েছিলেন। চা খেতে খেতে বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
এদিকে, নতুন রাজ্য কমিটিতে জায়গা পেয়েছেন অগ্নিমিত্রা পাল। তিনি থাকছেন রাজ্য কমিটির সাধারণ সম্পাদকের পদে। এতদিন দলের মহিলা মোর্চার সভাপতি ছিলেন অগ্নিমিত্রা পাল। তাঁর জায়গায় এবার দলের রাজ্য মহিলা মোর্চার নতুন সভাপতি হচ্ছেন তনুজা চক্রবর্তী।
বিজেপির নতুন রাজ্য কমিটিতে সহ সভাপতি থাকছেন ১১ জন। সাধারণ সম্পাদকের পদে রয়েছে পাঁচ জনের নাম। বিজেপির সাংগঠনিক পরিকাঠামো অনুযায়ী, সভাপতি পদের পরেই সবথেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হল সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন)-এর পদ এবং অন্যান্য সাধারণ সম্পাদকেরা। সেদিক থেকে দেখতে গেলে দলের নতুন রাজ্য কমিটিতে সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে থাকছেন সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়, জ্যোতির্ময় সিং মাহাতো, অগ্নিমিত্রা পাল, দীপক বর্মণ এবং জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়।
উল্লেখ্য, বঙ্গ বিজেপির সাংগঠনিক দুর্বলতা নিয়ে বার বার প্রশ্ন উঠেছে। দলের বাইরে হোক বা দলের অন্দরে, এই ধরনের প্রশ্নবাণ সামাল দিতে মাঝে মধ্যেই নাকানি চোবানি খেতে হয়েছে বঙ্গ বিজেপির নেতাদের। সদ্য় সমাপ্ত কলকাতা পুরভোটের ফলাফলের পরেও সেই একই প্রশ্ন অনেকেই তুলতে শুরু করেছিলেন। আর ঠিক তার একদিন পরেই এই ব্যাপক সাংগঠনিক রদবদল বঙ্গ বিজেপির অন্দরে। তাহলে কি সেই দুর্বলতাকে ঢাকা দিতেই এই ব্যাপক আকারে সাংগঠনিক ভোল বদলে দেওয়ার চেষ্টা? সেই উত্তরের দিকেই তাকিয়ে থাকছেন রাজ্য রাজনীতির পর্যবেক্ষকরা।
আরও পড়ুন: Sayantan Basu: বিজেপির রাজ্য কমিটিতে নাম নেই, সায়ন্তনের নতুন রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে জোর চর্চা