AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

Sonagachi: বাবার হাত ধরে সোনাগাছিতে আসা, শরীর বিকিয়েই উত্তরণ হয় এই বঙ্গ ‘নায়িকা’র

Sonagachi: এই সোনাগাছিতে বসেই একদিন আর পাঁচটা মেয়ের মতো সংসার করার স্বপ্ন দেখেছিলেন পূর্ণিমা। কিন্তু শরীর বিকিয়েছেন, মন তো আর বিকোতে পারেননি। পূর্ণিমা বলেন, "আমি হতে পারতাম, কারোর ঘরের বউ, কারোর পুত্রবধূ। কিন্তু আমি মনে করেছি, সবার ভাগ্যে তো আর সব সয় না।

Sonagachi: বাবার হাত ধরে সোনাগাছিতে আসা, শরীর বিকিয়েই উত্তরণ হয় এই বঙ্গ 'নায়িকা'র
এই নায়িকার গল্প সম্মান বাড়াবে আপনার মনেImage Credit: TV9 Bangla
| Updated on: Jan 16, 2024 | 3:08 PM
Share

কলকাতা: বয়স ৫৫ বছর। অনেকটা বছর পেরিয়ে গিয়েছে তাঁর এই পেশায়। বলাই যেতেই পারে, কলকাতার যে গলি তথাকথিত উচ্চশিক্ষিত ভদ্রসমাজ মাড়াতে চান না, সেই গলিরই বয়োজ্যেষ্ঠ সদস্য তিনি। সেখানকার নায়িকা তিনি। তাঁর গায়ের চামড়া এখনও চকচকে। মুখে দিনে দু’বার এখনও পড়ে বেসন-গোলাপ জলের প্রলেপ। চামড়া টানটান রাখতে হবে! তবেই না আসবে কাস্টোমার! সোনাগাছির পূর্ণিমা চট্টোপাধ্যায় আজও বসে থাকেন ঘরের দুয়ারে। তবে এখন চোখ তাঁর ম্লান। যা হয় আর কী! সব পেশাতেই তো একটা বয়স ফ্যাক্টর! আর যেখানে শরীর কথা বলে, সেখানে তো সবচেয়ে বেশি। বক্ষভাঁজের আকর্ষণ কমেছে, চামড়ায় পড়েছে ভাঁজ, আর সমানুপাতিক হারেই কমছে আয়। অথচ একটা সময়ে তাঁরই শরীরের চাহিদা ছিল তুঙ্গে। আজও যখন সে সব কথা বলেন, দুটো চোখ জ্বলজ্বল করে তাঁর। ‘আল জাজিরা’কে এক খোলামেলা সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন পূর্ণিমা।

সব থেকে অবাক হওয়ার বিষয়, তাঁকে শরীর বিক্রি করতে বাধ্য করেছিলেন বাবাই। তাঁর এখন ৫৫ বছর বয়স।  একটি বড় পরিবারে জন্মেছিলেন। তিনিই ছিলেন ভাইবোনেদের মধ্যে বড়। বাবার ওপর চাপ বাড়ছিল। তাই বাবাই তাঁকে একদিন কলকাতা ঘুরতে নিয়ে আসার নাম করে রেখে গিয়েছিল সোনাগাছি। জীবনের প্রথম বাস্তবতার মুখোমুখি হয়েছিলেন পূর্ণিমা। রোজগার শুরু করেছিলেন। তাঁর কথায়, শরীর বেঁচে। আজও তা তিনি অবলীলায় বলে চলেন।

পূর্ণিমা বলেন, “বাবাই আমার হাত ধরে এখানে দিয়ে গিয়েছিল। আজও মনে আছে সেই দিনটা। আমি বাড়ির বড় মেয়ে। রাস্তায় আসতে আসতে আমাকে বুঝিয়েছিল, আমাকে অনেক দায়িত্ব নিতে হবে। আমি মনে করেছিলাম, ভগবানই আমাকে দিয়ে এই কাজ করাচ্ছে। আমাকে পরিবারের ভার বহন করতে হবে। আমি সেটা মনে করেই মন দিয়ে কাজ করে গিয়েছি।”

এই সোনাগাছিতে বসেই একদিন আর পাঁচটা মেয়ের মতো সংসার করার স্বপ্ন দেখেছিলেন পূর্ণিমা। কিন্তু শরীর বিকিয়েছেন, মন তো আর বিকোতে পারেননি। পূর্ণিমা বলেন, “আমি হতে পারতাম, কারোর ঘরের বউ, কারোর পুত্রবধূ। কিন্তু আমি মনে করেছি, সবার ভাগ্যে তো আর সব সয় না। ভগবান আমাকে আর্শীবাদ করেছেন। আমি আমার পাঁচ ভাইবোনকে বড় করেছি, মানুষ করেছি। বাবা-মাকে দেখেছি।” কিন্তু এখন তো আর সেই যৌবন নেই। ফলে ‘কাস্টোমার’রা মুখ ফিরিয়ে অন্য ঘরে ঢুকছে। চোখেমুখে সেই চিন্তার ছাপ পূর্ণিমার। তিনি বলেন, “আজ তো আমার বয়স হয়েছে। আমার পাশে কেউ নেই। আমার আয়ও কমে আসছে। আর কয়েকবছর পর আমার কী হবে আমি জানি না!”