কলকাতা: এবার আইকোর (Icore) মামলায় সিবিআই (CBI)-এর মুখোমুখি হলেন প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় (Sovan Chatterjee)। ভুইফোঁড় অর্থলগ্নি সংস্থা আইকোরের সঙ্গে যোগ থাকার অভিযোগে এর পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee) ও মদন মিত্রকেও (Madan Mitra) জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। এবার সেই একই মামলার তদন্তের স্বার্থে তলব করা হল শোভন চট্টোপাধ্যায়কে। বৃহস্পতিবার সকালে ১০ টার পর সিবিআই দফতরে গিয়েছিলেন শোভন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ও (Baisakhi Banerjee)। এ দিন প্রায় তিন ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় তাঁকে।
এ দিন জিজ্ঞাসাবাদের পর দুপুর ১ টা নাগাদ সিবিআই দফতর থেকে বেরিয়ে তিনি জানান, কোনও অভিযোগ নেই তাঁর বিরুদ্ধে। সাক্ষী হিসেবে এ দিন জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে বলে জানান তিনি। শোভন জানান, তিনি যখন মেয়র ছিলেন তখন কলকাতার ঐতিহ্যবাহী ‘উত্তম মঞ্চ’ বিক্রি হয়ে যাচ্ছিল। একসময় তরুণ কুমার ও অন্যা্ন্যরা মিলে উত্তম কুমারের স্মৃতিতে ওই মঞ্চ বানিয়েছিলেন। তাই উত্তম মঞ্চ বিক্রি হওয়ার খবর পেয়েই খোঁজ খবর শুরু করেন শোভন। প্রাক্তন মেয়রের দাবি, তিনি জানতে পেরেছিলেন যে আইকোরের কর্ণধারই ওই মঞ্চ কিনে নিয়েছে। এ কথা জানার পর কলকাতা পুরসভার তরফে আইকোর কর্তাকে প্রস্তাব দেওয়া হয়, যত দামে তিনি কিনেছেন তত দাম দিয়ে পুরসভা ওই মঞ্চ নিয়ে নিতে চায়।
জানা যায়, আইকোর কর্তার ইচ্ছা ছিল উত্তম মঞ্চ কিনে নিয়ে বহুতল তৈরি করা হবে। কিন্তু উদ্যোগ নিয়ে উত্তম মঞ্চকে রক্ষা করেছিলেন বলে উল্লেখ করেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। তাঁর দাবি, এই সব বিষয়েই জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে তাঁকে।
গত কয়েকদিন আগেই আইকোর চিট ফান্ড কেলেঙ্কারির সঙ্গে যোগ থাকার অভিযোগে কামারহাটির বিধায়ক মদন মিত্র ও তাঁর ছেলে স্বরূপ মিত্রকে সিবিআই তলব করে। সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সে সিবিআই দফতরে হাজিরাও দেন মদন মিত্র। জানা গিয়েছে আইকোর সংস্থার প্রোডাক্ট লঞ্চের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মদন মিত্র। কী কারণে ওই সংস্থার অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন তিনি? সংস্থার কার কার সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ রয়েছে? এই সব বিষয়ই জানতে চাওয়া হয় মদন মিত্রের কাছে।
এ ছাড়া, একই মামলায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে রাজ্যের মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কেও। আইকোর-এর একটি অনুষ্ঠানে তাঁকে উপস্থিত থাকতে দেখা গিয়েছিল। শুধু তাই নয়, ওই সংস্থার কর্তাদের ভূয়ষী প্রশংসাও করতে শোনা গিয়েছিল তাঁকে। কেন রাজ্যের একজন বিধায়ক তথা প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হিসেবে এরকম একটি অনুষ্ঠানে হাজির হলেন তিনি, তা নিয়েই তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে সিবিআই। সিবিআই দফতরে বারবার হাজিরা এড়িয়ে যান তিনি। অবশেষে শিল্প দফতরের অফিসে গিয়ে তাঁকে জেরা করেন সিবিআই আধিকারিকেরা।