কলকাতা : তাঁকে নিয়ে বঙ্গ রাজনীতিতে জোরদার আলোচনা শুরু হয়েছে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তড়িঘড়ি দিল্লি ডেকে পাঠিয়েছেন। আর তিনি বলছেন, তাঁর সাংসদ এলাকায় চটশিল্পের সঙ্গে যুক্ত মানুষরা সমস্যায় পড়েছেন। তাই কেন্দ্রে নিজের দলের সরকার সত্ত্বেও সরব হয়েছেন তিনি। সেজন্যই কেন্দ্রীয় বস্ত্রমন্ত্রী পীযূষ গোয়েলের ডাক পেয়েই আজ দিল্লি রওনা দিয়েছেন ব্যারাকপুরের বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিং (Arjun Singh)। আজ রাতে পীযূষ গোয়েলের সঙ্গে বৈঠক করবেন তিনি। সেই বৈঠক ফলপ্রসূ না হলেও কী করবেন? তাও জানিয়ে দিলেন অর্জুন। বললেন, আলোচনা ফলপ্রসূ না হলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় চাইবেন।
গত কয়েকদিনে কেন্দ্রীয় সরকারের নীতির বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন ব্যারাকপুরের সাংসদ। তাঁর অভিযোগ, চটকলগুলি পাটচাষি ও ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে কেনা পণ্যের দামের ঊর্ধ্বসীমা বেঁধে দেওয়ায় সমস্যায় পড়েছেন এই শিল্পের সঙ্গে জড়িত বহু মানুষ। কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সরব হয়েই থামেননি অর্জুন। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও চটশিল্প বাঁচাতে চিঠি লিখেছেন। একই চিঠি লিখেছেন ওড়িশা, অসম, বিহারের মুখ্যমন্ত্রীকেও। কিন্তু, মমতাকে তাঁর চিঠি লেখা নিয়েই গুঞ্জন ছড়ায়।
রাজ্য বিজেপিতে যখন টানাপোড়েন চলছে, তখন অর্জুনের এই সরব হওয়া নিয়ে নানা জল্পনা শুরু হয়। সেই জল্পনাকে অবশ্য বিশেষ গুরুত্ব দিতে চাননি অর্জুন। তাঁর স্পষ্ট বক্তব্য, তাঁর সাংসদ এলাকায় ২০টি চটকল রয়েছে। যার উপর লক্ষাধিক মানুষের পেট চলে। অর্জুন সিংয়ের বক্তব্য, এভাবে পাটের দাম বেঁধে দেওয়ায় পাটকলগুলির কাজকর্ম ব্যাহত হচ্ছে। বহু কারখানা কার্যত জোর করেই বন্ধ করে দিতে হচ্ছে। কেন্দ্রের নীতির জন্য কারখানা বন্ধ হলে মানুষ কেন তাঁদের পাশে থাকবে, সেই প্রশ্নও তুলে দেন ব্যারাকপুরের বিজেপি সাংসদ।
মুখ্যমন্ত্রীদের চিঠি লেখার পর আজ দিল্লি থেকে ডাক আসে অর্জুন সিংয়ের। রাজধানীতে পৌঁছেও গিয়েছেন তিনি। রাতে পীযূষ গোয়েলের সঙ্গে বৈঠক। এদিকে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই মুহূর্তে দিল্লিতে রয়েছেন। আজ কলকাতায় ফেরার কথা থাকলেও তিনি ফিরে আসেননি। মমতা যদি ডাকেন যাবেন দেখা করতে? টিভি নাইন বাংলাকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে এই প্রশ্ন শুনে অর্জুনের বক্তব্য, যদি ডাকেন অবশ্যই যাবেন।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর সঙ্গে আজকের বৈঠকের দিকে তাকিয়ে রয়েছেন অর্জুন সিং। তাঁকে যখন ডাকা হয়েছে, তখন ইতিবাচক কিছু একটা হবে বলেই মনে করছেন। কিন্তু, যদি বৈঠক ফলপ্রসূ না হয়? তার জবাবও তৈরি অর্জুন সিংয়ের কাছে। লড়াই চালিয়ে যাবেন তিনি। আর সেই লড়াইয়ে মুখ্যমন্ত্রীদের কাছে সময় চাইবেন। সেই মুখ্যমন্ত্রীদের একজন মমতা। ২০১৯-এ লোকসভা ভোটের আগে যাঁর দলের নেতা ছিলেন তিনি।
সবমিলিয়ে অর্জুন-পীযূষের আজ বৈঠকের দিকে তাকিয়ে রাজনৈতিক মহল। বৈঠক ফলপ্রসূ না হলে কী হবে, এই প্রশ্নেরই উত্তর খুঁজছেন রাজনীতির কারবারিরা।
আরও পড়ুন : Mamata Banerjee: মমতা রোজা রাখছেন বলেই কি মোদীর নৈশভোজে অনুপস্থিত, প্রশ্ন দিলীপের