
কলকাতা: হাজারও বিতর্ক, হাজারও বিক্ষোভের পরও রবিবার নির্বিঘ্নে সম্পূর্ণ হল এসএসসি-র নবম দশমের ফ্রেশ সিলেকশন পরীক্ষা। ২০১৬-র চাকরিহারা শিক্ষকরাও পরীক্ষা দিলেন এবার। এত বছর স্কুলে পড়িয়ে আসার পরও আবারও নিজের যোগ্যতা প্রমাণের লড়াই, এখনও মেনে নিতে পারছেন না তাঁরা। TV9 বাংলার সামনে ধরা পড়েছে এমন অনেক চাকিরহারা শিক্ষকদের ক্ষোভ। এদিন মণীন্দ্রচন্দ্র কলেজে সিট পড়েছিল শিবপুরের হিন্দি মাধ্যম স্কুলের এক চাকরিহারা শিক্ষকের। তিনি অঙ্কের শিক্ষক। এবার তাঁর ছাত্রীদের সঙ্গেই পরীক্ষা দিলেন তিনি। মনের কেমন অবস্থা? প্রশ্ন করতেই এক রাশ ক্ষোভ উগরে দিলেন সেই শিক্ষক।
মুখে হাসি নিয়েই তিনি বললেন, “ওরা সবাই আমার ছাত্রী। ওদের সঙ্গেই এবার আমাকে পরীক্ষা দিতে হচ্ছে। আজকের প্রশ্নপত্র এভারেজ ছিল। এখনও মনে অনেক রাগ রয়েছে। কিন্তু কার ওপর রাগ দেখাব বলুন। এখন এখানে যদি বিক্ষোভ দেখাই, পুলিশ তাহলে তুলে নিয়ে যাবে।”
যোগ্যরা কেন আবারও পরীক্ষা দেবে, কেন প্রশাসনের দুর্নীতির দায় তাঁরা নেবেন, এপ্রশ্নে বারাবার শহরের রাস্তায় বিক্ষোভ দেখিয়েছেন চাকরিহারা যোগ্য শিক্ষকরা। এদিন এই শিক্ষক সরাসরি বললেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে তো আর পৌঁছতে পারব না। ব্রাত্য বসুর কাছেও পৌঁছতে পারব না। এখন মনে অনেক প্রশ্ন, কিন্তু কাকে সে প্রশ্ন করব? কীভাবে প্রশ্ন করব, কেন চুরি করা হয়েছিল চাকরি? চুরি কেউ না কেউ তো করেছে। পয়সা তো তুলেছে। আমরা তো আর পয়সা তুলিনি। সরকারের লোকই পয়সা তুলেছে। সরকারের কাছেই পৌঁছেছে। চোরের যে সাজা পাওয়া উচিত, সেটা আমাদের পেতে হল। মানে গোটা বিষয়টাই অদ্ভুত। চুরি করল কেউ, সাজা পাচ্ছি আমরা।”
পাশেই দাঁড়িয়েছিলেন ওই শিক্ষকের ছাত্রী। তিনি বলেন, “প্রশ্নপত্র এভারেজ এসেছে। দেখা যাক কী হয়!” শিক্ষকের পাশে বসেই বললেন তিনি। উল্লেখ্য, এদিন, মণীন্দ্রনাথ কলেজে যাঁদের সিট পড়েছিলেন, তাঁদের মধ্যে বেশিরভাগই ছিলেন ভিন রাজ্যের পরীক্ষার্থী। অর্থাৎ উত্তরপ্রদেশ, বিহার, ঝাড়খণ্ড থেকে পরীক্ষা দিতে এসেছিলেন।